অমিত শাহ’র বক্তব্যে ‘গলদ’ আছে : ফখরুল

44

বাংলাদেশে বিএনপির আমলে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে বলে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগ আমলে এখানে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। বিএনপি সরকারে থাকাকালে সংখ্যালঘুদের ‘স্বার্থরক্ষা’ হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
গত সোমবার ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় বহুল আলোচিত নাগরিকত্ব বিল পাস হয়, যাতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে শরণার্থী হিসেবে যাওয়া অমুসলিমদের ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
পার্লামেন্টে মুসলিম সদস্যরা এই বিলের বিরোধিতা করলে যুক্তি খন্ডন করে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। সেখানে তিনি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের জন্য
বিএনপির প্রতি অভিযোগ তুলেছেন বলে জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আপনারা শুনেছেন, গতকাল পার্লামেন্টে অমিত শাহ যে বক্তৃতা করেছেন সেখানে বিএনপির নাম করে কথা বলেছেন কিছু, যে বিএনপি সরকারের আমলে এখানে সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতন হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা খুব জোর গলায় বলতে পারি, বিএনপি সরকারের আমলে এখানে সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষা করা হয়েছে। তাদের ওপর নির্যাতন আওয়ামী সরকারের আমলে যতটা হয়েছে, আর কখনও সেটা হয়নি। খবর বিডিনিউজের
ভারতের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, ভারতে নতুন যে নাগরিকত্ব আইন করা হয়েছে সেই আইনে খুব পরিষ্কার করে তারা বলছে, পার্লামেন্টে (লোকসভা) পর্যন্ত বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে একদম এভাবে বলা হচ্ছে যে, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা যাচ্ছে ভারতবর্ষে এবং তাদের অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। পার্লামেন্টে (লোকসভা) যে আইন পাস করা হয়েছে সেই আইনের মধ্যে অমুসলিম যারা তাদেরকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে ৫ বছর না কত বছর গ্যাপ দিয়ে। কিন্তু মুসলিম যারা আছেন তাদেরকে দেওয়া হবে না’।
সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকার সমালোচনাও করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার যারা এখানে রোহিঙ্গাদেরকে ঠেলে পাঠিয়ে দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে মানবাধিকার লংঘনের কথা বলা হচ্ছে। মিয়ানমারে মানবাধিকার লংঘন, গণহত্যার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সোচ্চার হয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্ব সংস্থায় অথবা আন্তর্জাতিক আদালতে কোনো কথা বলছেন না। আন্তর্জাতিক আদালতে গাম্বিয়া মামলা করেছে, সেখানে বাংলাদেশ সরকারের কোনো ভূমিকা নেই’।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. আসাদুজ্জামান আসাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।