অভিযানে নৌকা না দেওয়ায় জেলেকে মারধর মৎস্য কর্মকর্তার

6

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি

সীতাকুন্ডে অভিযানে যেতে নৌকা(বোট)না দেওয়ায় জেলেদেরকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সীতাকুন্ড উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার বিকালে উপজেলার ভাটিয়ারি ইউনিয়নের মীর্জানগর জেলে পাড়া সাগর উপকূল এলাকায় এই মারধরের ঘটনা ঘটে।
তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ কামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কোস্ট গার্ডসহ যৌথভাবে মৎস্য অভিযান পরিচালনা করতে আমরা জেলেদের কাছ থেকে একটি বোট চাই। তখন তারা তেল নাই বললে, আমি ৫ শত টাকাও দেই। কিন্তু জেলেরা পরে বলে তেলের দোকান বন্ধ। তখন কোস্ট গার্ড জেলেদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উচ্চ শব্দে বকাঝকা শুরু করেন। পরে আমি উনাদের শান্ত করে নদীতে অভিযানে নেমে পড়ি।
জানা যায়, সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের লক্ষে ২০ মে হতে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন নদীতে সকল প্রকার মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। জেলেদের খাদ্য সংকট মিটাতে উপজেলা মৎস্য অফিস ইতিমধ্যে প্রতি জেলে পরিবারের মাঝে ৮০ কেজি চাল ও ১০ পরিবারকে একটি করে গরু বিতরণ করেছে। জেলেরাও কথা দেন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে নদীতে তারা মাছ ধরতে যাবেন না।
গতকাল শনিবার বিকালে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে মৎস্য অফিসের লোকজন ও কোস্ট গার্ড ভাটিয়ারী ইউনিয়নের মীর্জানগর জেলে পাড়ায় অভিযানে যাওয়ার প্রস্ততি নেন। মৎস্য কর্মকর্তা এই সময় সাগরে যাওয়ার জন্য জেলেদের কাছ থেকে বোট চান, জেলেরা বোটে তেল নাই বলে বোট দিতে অপারগতা জানান। এরই সাথে সাথে মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে উনি ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা জেলেদের মারধর শুরু করেন। মারধরে জেলে সর্দার বালি ও খোকনসহ কয়েকজন জেলে আহত হন। এ সময় অন্য জেলেরা প্রতিবাদ করতে আসলে তাদেরকেও লাঠিপেটা দিয়ে ধাওয়া করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বালি জলদাশ, খোকন জলদাশ ও বাঁশি জলদাশ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মৎস্য কর্মকর্তা আমাদের কাছে অভিযানে যেতে বোট চায়। সাগরে যেহেতুৃ যাওয়া বন্ধ, আমরা বলি বোটে তেল নাই। কথাটি শুনার সাথে সাথে লাঠি হাতে মৎস্য কর্মকর্তাসহ কোস্ট গার্ডের লোকজন মারধর শুরু করেন। মারধরে আমরা কয়েকজনসহ অনেক জেলে লাঠির আঘাতে আহত হই। এরপর বন্ধের আগে সাগর থেকে তুলে আনা জালগুলো শুকানোর জন্য রাখি বেডিবাঁধে। ক্ষিপ্ত হয়ে তারা জালগুলোও পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। সব জেলে মিলে আমরা প্রতিবাদ শুরু করি। পরে অভিযান না করেই আমাদের জেলে পাড়া থেকে চলে যান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই, মৎস্য অফিসে কর্মরতদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করছি, বিষয়টি তদন্ত করব, কেউ যদি জেলেদের গায়ে হাত তুলে দোষী সাব্যস্ত হয়, আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।