অভিনেত্রী তারানেহ আলিদোস্তিকে মুক্তি দিল ইরান

12

পূর্বদেশ অনলাইন
সরকারবিরোধী আন্দোলনে সংহতি প্রকাশের কারণে গ্রেপ্তার ইরানের বিখ্যাত অভিনেত্রী তারানেহ আলিদোস্তিকে জামিনে মুক্তি দিয়েছে দেশটির সরকার। আলিদোস্তির আইনজীবীর বরাতে ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা আইএলএনএ বুধবার এ খবর জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য তারা প্রকাশ করেনি।ইরানে কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভ নিয়ে ‘মিথ্যা ছড়ানোর’ অভিযোগে গত ১৭ ডিসেম্বর তারানেহ আলিদোস্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে তিনি বিক্ষোভের সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তিকে ফাঁসিতে ঝোলানোর তীব্র সমালোচনা করেছিলেন।২০১৭ সালের অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র ‘দ্য সেলসম্যান’-এ অভিনয় করে খ্যাতি পাওয়া ৩৮ বছর বয়সী এ অভিনেত্রী মোহসেন শেকারির ফাঁসির বিরুদ্ধে কথা না বলা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোরও সমালোচনা করেন সে সময়। গত সেপ্টেম্বরে দাঙ্গা বাধানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় মোহসেন শেকারিকে। ছুরি মেরে আধাসামরিক বাহিনীর এক সদস্যকে জখম করার অভিযোগে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। সেপ্টেম্বরে পুলিশি হেফাজতে কুর্দি নারী মাশা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে শুরু হওয়া হিজাববিরোধী আন্দোলন দমনে সরকারের বলপ্রয়োগের বিরুদ্ধেও উচ্চকণ্ঠ ছিলেন তারানেহ আলিদোস্তি। নভেম্বরে ইনস্টাগ্রামে নিজের একটি হিজাব ছাড়া ছবি প্রকাশ করে তিনি বিক্ষোভে সংহতি জানিয়েছিলেন, তার হাতে ধরা একটি কাগজে কুর্দি ভাষায় লেখা ছিল– ‘নারী, জীবন, মুক্তি’, যা ওই আন্দোলনের জনপ্রিয় স্লোগান। ইরানের আইনে নারীদের জনসম্মুখে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারের সামনে দাঁড়িয়ে তোলা আলিদোস্তির সেই ছবি সে সসময় সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। হিজাব আইন ভঙ্গের অভিযোগেই মাশা আমিনিকে গ্রেপ্তার করেছিল তেহরানের নীতি পুলিশ। পরে পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যু হলে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে, শুরু হয় বিক্ষোভ। মূলত নারীদের নেতৃত্বে হিজাববিরোধী সেই বিক্ষোভ পরে ইরানজুড়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনের রূপ পায়। ১৯৭৯ সালে ইসলামিক অভ্যুত্থানের পর এত বড় সরকারবিরোধী গণবিক্ষোভ আর ইরানে দেখা যায়নি।কঠোর দমনপীড়ন চালিয়েও আন্দোলন থামাতে না পেরে শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত নীতি পুলিশ বিলুপ্ত করার ঘোষণা দেয় ইরান কর্তৃপক্ষ, পাশাপাশি হিজাব আইন পরিবর্তনেরও ইঙ্গিত আসে। তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলা এ আন্দোলনে গ্রেপ্তার অন্তত দুজনের মৃত্যুদণ্ড ইতোমধ্যে কার্যকর করেছে তেহরান। আরও অন্তত একশ জনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়েছে, যেখানে তাদেরও মৃত্যুদণ্ড হতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে নরওয়ে ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)।