অভিনন্দন টিম বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের জয়ের ধারা ও পেশাদারিত্ব অব্যাহত থাকুক

22

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বিদেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে টিম বাংলাদেশকে অভিনন্দন। ক্রীড়া ক্ষেত্রে দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনার ক্রীড়া হলো ক্রিকেট। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ১৯৯৭ সালে সর্ব প্রথম ইংল্যান্ডে আইসিসি ট্রফিতে অংশগ্রহণ করে। আইসিসি ট্রপি চ্যাম্পিয়ন হবার পর ১৯৯৯ সালে প্রথম বিশ^কাপ ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করে। এর পর হতে দেশের ক্রিকেটাররা আর পেছনের দিকে তাকায়নি। ১৯৯৯ সালে বিশ^কাপে অংশগ্রহণ করার পর বাংলাদেশ ক্রিকেটে টেস্ট স্ট্যাটার্স ও অর্জন করে। বাংলাদেশ ক্রিকেট আইসিসি’র টেস্টদলের সদস্য হবার পর বিশে^র বহু নামীদামী ক্রিকেটার বাংলাদেশ টিমকে নিয়ে হাস্যকর বক্তব্যও রাখতে দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম বিশ^ ক্রিকেটে বিশে^র সকল ঐতিহ্যবাহী ক্রিকেট টিমের সমীহ আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। ক্রিকেটের সকল ফরমেটে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বিশে^র সকল দলকে হারাতে সক্ষম হয়েছে। টি-২০ বিশ^কাপ, ওয়ানডে বিশ^কাপ এবং টেস্ট ক্রিকেটের ক্ষেত্রে টাইগাররা ক্রমে এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে, যদিও এখনো টাইগারদের ভাগ্যে তিন ফরমেটের কোন বিশ^কাপ ট্রফি অর্জন করা সম্ভব হয়নি। তারপরও আমাদের খেলোয়াড়দের ক্রীড়া নৈপুণ্যে আইসিসি র‌্যাংকিংএ দেশ তৃতীয় স্থান দখল করতে সক্ষম হয়েছে। টিম বাংলাদেশে ক্রিকেট প্রতিভার অভাব নেই। সাকিবুল হাসান বর্তমানে বিশে^ অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। মোস্তাফিজুর রহমানের মতো ফাস্ট বোলার, তামিম ইকবারের মতো ওপেনিং ব্যাটম্যান থাকার পরও মাঝে মধ্যে বাংলাদেশ টিম খেই হারিয়ে ফেলতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়দের যেমন ধারা বাহিকতা ও পেশাদারিত্ব আমরা দেখি তা আমাদের ক্রিকেটারদের মধ্যে খুব একটা দেখা যায় না। বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের খেলার ধারাবাহিকতা খুবই জরুরি। একদিন অসাধারণ খেলা উপহার দিতে দেখা যায়, আবার মাঝেমধ্যে গো-হারা হেরেও যায়। আমাদের স্বপ্ন টি-২০ বিশ^কাপ, ওয়ানডে বিশ^কাপ এবং টেস্টক্রিকেট বিশ^কাপের ট্রাফি হাতে উঁচিয়ে ধরুক বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম। টাইগারদের মধ্যে ক্রিকেট প্রতিভার অভাব নেই। বিশে^ যেকোন টিমের সাথে যেকোন ফরমেটে টাইগাররা শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করার যোগ্যতা রাখে। কিন্তু ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং এ ধারাবাহিক ভাবে উন্নতি ছাড়া টাইগারদের পক্ষে বিশ^কাপের ট্রফি অর্জন সম্ভব নয়। আমরা দেখেছি বাংলার বীর ক্রিকেটাররা ক্রিকেট বিশে^র সেরা সেরা ঐতিহ্যবাহী টিমকে হারিয়ে দিতে। কিন্তু প্রতিযোগিতায় ধারাবাহিক সাফল্য ছাড়া ট্রফি অর্জন সম্ভব নয়।
আয়ারল্যান্ড ক্রিকেটে একটি নতুন টিম। বাংলাদেশের মতো সাফল্য তারা এখনো অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। বাংলাদেশ তাদের ৩ ম্যাচের সিরিজে দেশে ও বিদেশে ২-০ ম্যাচে হারিয়েছে। বিষয়টা ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা, যেকোন দল যেকোন দলকে একদিনের ক্রীড়া নৈপুণ্যে হারিয়ে দিতে পারে। তবে আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড টিমকে হেলা ফেলা করার সুযোগ অন্তত ক্রিকেটে নেই। দুই টিমেই বহু প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে। এদের সাথে খেলায় বহু বাঘা বাঘা টিম আইসিসি র‌্যাংকিং হতে উঠানামা করতে বাধ্য হয়। আয়ারল্যান্ডের সাথে সিরিজ জিতে বাংলাদেশ টিম আইসিসি, র‌্যাংকিং-এ উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে। ইংল্যান্ডের মাটিতে আয়ারল্যান্ডকে ৪ রানের ব্যবধানে হারিয়ে টাইগাররা এক রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়েছে। মোস্তাফিজের ম্যাচ সেরা বোলিং, এজয়কে সম্ভব করে তুলেছে। অভিনন্দন মোস্তাফিজ, অভিনন্দন টিম বাংলাদেশ।
আমরা চৌকস পেশাদারিত্ব এবং ধারাবহিক উন্নতির মাধ্যমে বাংলাদেশ টিম বিশ^কাপ ক্রিকেটে বড় ট্রফির অধিকারি হোক এমন প্রত্যাশায় দিন গুনছি। আশা করি একদিন এদেশের দামাল ছেলেরা বিশ^কাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরে ক্রিকেট বিশে^ দেশের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করবে।