অবৈধ বালুখোরের পেটে যাচ্ছে জঙ্গল পুুঁইছড়ির বালুমহাল

25

মনিরুল ইসলাম মুন্না

ঈদের কেনাকাটায় ৩৮ বছর ধরে অভিজাত শ্রেণির ক্রেতাদের পছন্দের মার্কেট হচ্ছে মিমি সুপার। এবারের ঈদ বাজারে মিমি সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ কাপড়চোপড় তুলেছেন। একসময় আমাদের দেশীয় তৈরি মসলিন, জামদানি কাপড়ের পৃথিবীজুড়ে খ্যাতি ছিল। বর্তমানে বিদেশি পণ্যের সমারোহে আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। এতে করে দেশের তাঁত শিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে এ তাঁত শিল্পের সমাহার নিয়ে ঈদ শপিং-এ নতুন মাত্রা যোগ করেছে নগরীর মিমি সুপার মার্কেট।
মার্কেট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৪ সালের ৫ মে নগরীর অভিজাত ক্রেতাদের জন্য যাত্রা শুরু করে মিমি সুপার মার্কেট। সুবিশাল পার্কিং স্পেস থাকায় ক্রেতাদের গাড়ি পার্কিং এ কোনো রকম ঝামেলা পোহাতে হয় না। চার তলা বিশিষ্ট শপিং সেন্টারটিতে রয়েছে জুয়েলারি, কাপড়, কসমেটিক্সসহ দেশি-বিদেশি নানা পণ্যের ২৮৪টি দোকান। এখানে প্রতি তলায় রয়েছে ৬০টি দোকান এবং চারতলা মিলিয়ে রয়েছে ২৪০টি দোকান। এছাড়া নতুন নির্মিত ভবনে রয়েছে ৪৪টি দোকান।ক্রেতাদের সুবিধার্থে ১০০টি গাড়ি পার্কিং এর সুবিধা রয়েছে এখানে। এতে ক্রেতাদের কোনো ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয় না।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মিমি সুপারের ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন প্রসাধনী ও কাপড়ের সমাহার নিয়ে সাজিয়েছেন প্রতিটি দোকান। ক্রেতারাও তাদের ইচ্ছেমত কেনাকাটা করতে পারছেন। তবে দাম বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
ক্রেতা মো. মারুফুল ইসলাম বলেন, মার্কেট অনুসারে কাপড়ের দাম একটু বেশি। ঈদ উপলক্ষে সাশ্রয়ীমূল্যে কেনার জন্য এসেছি। কিন্তু দরাদরি করার কোনো সুযোগ দিচ্ছে না। সবগুলো নাকি একদামে বিক্রি করবে। তাই বাজেটের মধ্যে না হওয়াতে অন্য মার্কেটে যাচ্ছি।
তবে দাম বাড়তির বিষয়টি সত্য নয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, আমরা সামান্য লাভ করে পণ্য বিক্রি করে দিচ্ছি। অতি মুনাফা বা মৌসুমি ব্যবসা করার জন্য অতিরিক্ত দাম রাখছি না। তাছাড়া বর্তমানে ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। আমরা চাই, ক্রেতারা আসুক এবং পছন্দমত পণ্য কিনুক।
শামস কসমেটিক্স এন্ড জেন্টস এর বিক্রয়কর্মী মো. ইব্রাহিম বলেন, পুরো মার্কেটে আমরা একদামে পণ্য বিক্রি করছি। এখানে ভিআইপি ক্রেতারাই আসছেন বলে বেশি দরদাম করতে হয় না। তাদের পছন্দমত পণ্য আমরা প্রদান করছি। জেন্টস আইটেমের কোনো পণ্য এখনও বিক্রি হয়নি। তবে ২০ রমজানের পর থেকে বিক্রি হবে বলে আশা রাখছি।
শাড়ির দোকান নিউ শাওন ভাদোর বিক্রয়কর্মী বিপ্লব দাশ বলেন, আগে থেকে গতানুগতিক যেমন ক্রেতা ছিল বর্তমানেও তা আছে। ঈদ উপলক্ষে ক্রেতা সমাগম এখনও হয়নি। আর আমাদের দোকানে স্বাভাবিকভাবে মানুষ আসে। কারণ এখানে ঐতিহ্যবাহী সব ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়। যেমন- টাঙ্গাইল শাড়ি, জামদানি শাড়ি ইত্যাদি।
ক্রেতা সমাগমের বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানি ও ভারতীয় কাপড়ের শো-রুম রওশন’স ও রোযার স্বত্বাধিকারী মো. তৌফিক বলেন, করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ব্যবসা করতে পারিনি। এবারও আশাব্যঞ্জক কিছু দেখতে পাচ্ছি না। মহিলাদের যেসব কাপড় আমাদের রয়েছে তা সেলাই করা নয়। আর রমজান যেহেতু ১০টা পার হয়ে গেছে, সেহেতু দর্জিরা কাপড়ের অর্ডার নিবে না। তাই সকল কাপড় এখনও পড়ে থাকায় খুবই বিপাকে রয়েছি।
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য বছর রমজানের শুরুতে যে চাপটা থাকে, তা এবারে ব্যতিক্রম। গত দুই বছরের ক্ষতি তো পোষাতে পারব না। তবে এবারে কিছুটা লাভের মুখ দেখলে বিগত বছরের ক্ষতি অনেকটা কাটানো যেত। ক্রেতাদেরকে ভাল কিছু দিতে আমরা বিদেশ থেকে উন্নতমানের কাপড় এনেছি।
মিমি সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম আব্দুল হান্নান আকবর পূর্বদেশকে বলেন, এখনও প্রত্যাশিত ক্রেতা আসছে না সেটা সত্য। তাই বলে কেনাকাটা যে হচ্ছে না, তা কিন্তু নয়। অনেকে স্কুল-কলেজ ও অফিস আদালতের চাপ সামলে উঠতে পারেনি বলে এখনও মার্কেটমুখী হয়নি। তবে ধীরে ধীরে সকলে মার্কেটমুখী হবে। আমরাও সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। আর আমাদের মার্কেটে স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা বাড়িয়েছি এবং নিরাপত্তা জোরদার করেছি।
ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কুপনের প্রক্রিয়াটি নগরীতে আমরাই প্রথমে শুরু করেছিলাম। কিন্তু মানুষ এটাকে অন্যভাবে নেয়। তাই আমরা কুপন থেকে বিমুখ হয়ে গেছি। ক্রেতাদের ভাল লাগলে পণ্য নিবে, না নিলে নাই। আমরা ওভাবে প্রচার-প্রচারণা করিনি। কোনো দোকান যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে করতে চায়, তবে তারা করতে পারে।