অবসাদ আত্মহত্যার পরম বন্ধু

7

পারভীন আকতার

কিছু কিছু মৃত্যু মনকে নাড়া দেয়। আসলে আস্ত একটা শরীরের ভিতর একান্ত অনুভূতির খোঁজে আমরা আত্মার সন্ধান পেতে চাই। সেই মনের কারবারই এমন যাকে ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না কিন্তু তার প্রভাবেই চলে সবকিছু। মনের ভারাক্রান্ত ভার লাগব করা আর সম্ভব না হলে আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আর তা মুহূর্তেই ঘটেও যায়। জীবনে ধন, সম্পদ, যশ আর চাকচিক্যের বাড়াবাড়িও মনকে দোলা দেয় না,নাচিয়ে তুলে না কোনমতেই। তখন একাকীত্ব খুঁড়ে খুঁড়ে খায়। দুনিয়ার বিশ্ব সুন্দর চোখের সামনে থাকলেও ভালো লাগে না। তাবত দুনিয়া ঘুরে বেড়ানো মানুষটি অবশেষে নিজের ঘরেই সিলিং ফ্যানে ঝুলে থাকে। কী অদ্ভুত জীবন ভাবনা মানুষের! চোখের জল কি তাহলে এই পথে নিয়ে যায় সহজে? মোটেও না।অবসাদ, বিতৃষ্ণা না-পাওয়ার অলিগলিতে হারিয়ে ফেলে মানুষ বেঁচে থাকার স্বপ্ন। আঘাতের প্রকারান্তর অনেক। বাইরে থেকে সুনসান সুন্দর দেখা গেলেও ভিতরে অনেক অসুন্দর লুকিয়ে থাকে যা হয়তো খালি চোখেও দেখা যায় না। মরণ নিশ্চিত আছে। নিঃশ্বাস বন্ধ হবে, দম আটকে আসবে পরপারের যাত্রায় তবুও যেতেই হবে। মানুষের এই চিরকালীন যাত্রা যেন শুভ হয়, শান্তির হয় আপনজনের মাঝে হয় এই কামনা করি। আত্মহত্যা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়ে যায় আর তা নেতিবাচক বেশি। আসুন আমরা জীবনকে বুঝি, শত আঘাত ও প্রতারণায়ও যেন ভেঙে না পড়ি। প্রকৃতির উপর বিচারের দায় দায়িত্ব ছেড়ে দিন। মনে ক্ষোভ রাখবেন না। জীবন মানেই পাওয়া না পাওয়ার নির্দিষ্ট সময়কাল। পৃথিরী পথে চলতে চলতেই এসব বহমান নদীর মতো চলতে ও ঘটতে থাকবে। তাই মৃত্যুটা যেন সুন্দর হয় তার জন্য যেটুকু সময় পাই, চলুন ভালো ও সৃজনশীল কাজে ডুবে থাকি। ভুল হবে তাই বলে তা ঘেঁটে ঘেঁটে জীবন বিষিয়ে তোলার কোন মানে নেই। যা ঘটেছে তা নিয়তিতে ছিল এই ভেবে দুশ্চিন্তায় মগ্ন না থেকে আর গবেষণা না করে সময়ের হাতে ছেড়ে দিন।স্রষ্টার বিচার ন্যায়সঙ্গত চলে এটাই মনে রাখুন। ভুল না হলে আমরা শুদ্ধতার আত্মতৃপ্তি পাব না।বুঝবই না ভুলের মাশুল কী জিনিস। তাই জীবনে সবটাই টক ঝাল মিষ্টি থাকতে হয়।অবসাদকে জীবনে জায়গা দিবেন না। আত্মহত্যার পরম বন্ধু হলো অবসাদ।চলুন, নিস্তেজ নয় সবসময় সতেজ থাকার চেষ্টা করি। যেখানে যা অপছন্দ তা থেকে দূরে থাকি। পছন্দসই সুন্দর নিরাপদ অল্পতে সন্তুষ্টির জীবনযাপন করাই হোক আমাদের চলার পথের নিয়ামক।
লেখক: প্রাবন্ধিক