অবক্ষয় থেকে তরুণ প্রজন্মের দৃষ্টি ফেরাচ্ছে ‘দৃষ্টি’

10

‘মুক্তির জন্য যুক্তি’ এই শ্লোগানকে সামনে নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হলো ‘দৃষ্টি স্কুল অব ডিবেট’ এর ২৭তম ব্যাচের সমাবর্তন ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, উদ্যোক্তা ও সমাজকর্মী গোলাম বাকী মাসুদ ও দৃষ্টি চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ বকুল। দৃষ্টি চট্টগ্রামের সভাপতি সাইফ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন দৃষ্টি চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি বনকুসুম বড়ুয়া নুপুর, শহিদুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক কাজী আরফাত ও রিদোয়ার আলম আদনান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্না মজুমদার, বিতর্ক সম্পাদক হোসাইন সামী ও দৃষ্টি চট্টগ্রামের সদস্য রবিউল হোসেন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের তরুণদের একটি বড় অংশ আজ হারিয়ে যেতে বসেছে অপসংস্কৃতিতে, অপরাজনীতিতে। দৃষ্টিকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা, তরুণদের যুক্তির আলোতে আলোকিত রাখতে এরকম আয়োজন অব্যাহত রাখার জন্য। অবক্ষয় থেকে তরুণ প্রজন্মের দৃষ্টি ফেরাচ্ছে ‘দৃষ্টি’। যারা যুক্তি চর্চা করে তারা অন্যদের থেকে সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকে। আমার বিশ্বাস, এখানের ক্ষুদে বিতার্কিকরা সামনে আরও অনেক সফলতা অর্জন করতে পারবে নিজের জন্য, সমাজের জন্য, তথা দেশের জন্য।’
ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, ‘নেতৃত্ব একটি দক্ষতা যা অবশ্যই বিকাশ করা উচিত। একজনকে বুঝতে হবে কিভাবে নৈতিকতার সাথে নেতৃত্ব দিতে হয়। এই গুণ বিকশিত করার জন্য বিতর্ক চর্চা একটি উপযুক্ত মাধ্যম।’
গোলাম বাকী মাসুদ বলেন, ‘একজন বিতার্কিক বিতর্কের মাধ্যমে যেমন তার মেধার বিকাশ ঘটায় ঠিক তেমনি শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান দিয়ে তাকে আতœউন্নয়নের জন্য সচেষ্ঠ থাকতে হবে। কারণ একটা জাতির মুক্তির সর্বোত্তম পথ হচ্ছে আত্মউন্নয়ন।’
মাসুদ বকুল বলেন, ‘বিতর্ক মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে, আর এই আত্মবিশ্বাস দিয়ে মানুষ সফলতার পথে অগ্রসর হয়। বিতর্ক করার জন্য বিষয়বস্তু নিয়ে বিতার্কিকদের রীতিমত গবেষণা করতে হয় আর এরই সাহায্যে তাদের শিক্ষার দ্যুতি বৃদ্ধি পায়, যার সাহায্যে অসহায়ত্ব ও দুঃখকে তারা জয় করতে পারে।’
সাইফ চৌধুরী বলেন, ‘আজকে যারা দৃষ্টি স্কুল অব ডিবেট এর ২৭তম কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন তারা যেন জীবনের সকল ক্ষেত্রে আত্মউন্নয়নের মাধ্যমে নিজের জীবনকে বিকশিত করার মাধ্যমে তার লালিত স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেবে এবং পারিবারিক, সামাজিক ও সর্বোপরি জাতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।’ তিনি শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বিতর্কের মাধ্যমে তাদের মানসিক বিকাশ সাধনে ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
আলোচনা শেষে দৃষ্টি স্কুল অব ডিবেট ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার ও সনদ বিতরণ করা হয়। এতে বাংলা মাধ্যমে আওয়ার্ড অফ এক্সেলেন্স হয়েছে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের অমৃতা সেন, আওয়ার্ড অফ সাকসেস নির্বাচিত হয়েছে সিলভার বেলস কিন্ডাগার্টেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জারিন তাসনিম, আউটস্ট্যান্ডিং পারফরমেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে সিলভার বেলস কিন্ডাগার্টেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সুহাইবা শামস, স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের রওনক কুলসুম জেবিন, চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের নাভিদ উল গনি ও নাসিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের আরাফ বিন মর্তুজা। ইংরেজি মাধ্যমে আওয়ার্ড অফ এক্সেলেন্স হয়েছে ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুলের নুসাইবা নেওয়াজ, আওয়ার্ড অফ সাকসেস হয়েছে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের তেহজিব সাত্তার ওয়ানিয়া, আউটস্ট্যান্ডিং পারফরমেন্স অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সাবিহা তাবাসসুম ও ¯েপশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের ফাইরুজ তাফান্নুম নুসাইবা। এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সব মিলে ২০টি ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়। খবর বিজ্ঞপ্তির