অনাস্থা ভোটে টিকে গেলেন টেরিজা মে

27

ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটিতে বিপর্যয়কর হার হলেও অনাস্থা ভোটে কোনোমতে টিকে গেলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে মঙ্গলবার ভোটের পরপরই লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন রক্ষণশীল দলের সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সে একদিনের ব্যবধানে এই ভোটও হয়। দীর্ঘ আলোচনার পর বুধবার ভোট শেষে দেখা যায়, টেরিজা মের সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন ৩০৬ জন পার্লামেন্ট সদস্য; বিপরীতে সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৩২৫ জন।
ফলে ১৯ ভোটে জয় নিয়ে টিকে থাকল টেরিজা মের সরকার; যাকে এখন ব্রেক্সিটের নতুন পথরেখা খুঁজতে হবে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হারের স্বাদ নেওয়ার এক দিন বাদেই প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মেকে নতুন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। তবে মঙ্গলবারের ভোটের ফল যেমন আগে থেকে অনুমান করা যাচ্ছিল, তেমনি বুধবারের ভোটের ফলও অনেকটা অনুমিতই ছিল। ভোটের নিজেদের হারের পর জেরেমি করবিন বলেছেন, কোনো চুক্তি ছাড়াই ইইউ ছাড়ার মতো ঘটনা যেন না ঘটে, টেরিজা মেকে তা নিশ্চিত করতে হবে। আর টেরিজা মে ব্রেক্সিট চুক্তির নতুন খসড়া তৈরিতে পার্লামেন্টের সব দলের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব রেখেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদের পথরেখার যে পরিকল্পনা টেরিজা মে হাউস অব কমন্সে উপস্থাপন করেছিলেন, মঙ্গলবার ৬৫০ সদস্যের পার্লামেন্টে তা ৪৩২-২০২ ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের পার্লামেন্টের ইতিহাসে এর আগে আর কোনো প্রশ্নে ক্ষমতাসীন দলকে এত বড় হার মেনে নিতে হয়নি। লেবার পার্টি ও ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের এমপিদের পাশাপাশি টেরিজা মের রক্ষণশীল দলের অনেকেই ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেন।
২০১৬ সালের ২৩ জুন যুক্তরাজ্যে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির চার দশকের সম্পর্কোচ্ছেদের রায় হয়। ভোটে হারের পর রক্ষণশীল দলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করলে টেরিজা মে সেই দায়িত্ব নিয়ে বিচ্ছিন্নতার পথরেখা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেন। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক এই জোট থেকে কোন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য আলাদা হবে এবং এরপর ইইউভুক্ত বাকি ২৭টি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই পথ বের করার জন্য সময় নেওয়া হয় ২১ মাস।