অদ্ভূত তাপমাত্রায় বিপর্যস্ত জনজীবন জনসচেতনতা জরুরি

43

ভাদ্রমাস শেষ, চলছে আশ্বিনের প্রথম সপ্তাহ। ভাদ্রে রোদ-বৃষ্টির লীলাখেলা আমাদের ষড়ঋতুর ঐতিহ্য। ভাদ্র মাসে সূর্যের কীরণের প্রখরতা বেশি। কখনো কখনো একটানা বৃষ্টি, আবার কখনো ত্বক ফাঁটা রোদ; কখনোবা রোদ বৃষ্টির খেলা এ হলো ভাদ্রের চরিত্র, এ বছর শরতের শুরু থেকে এমন পরিবেশে চরিত্র দেখতে পাই। কখনো দেখা গেছে খুবই বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির আক্রমণ হতে রক্ষায় কেউ কোথাও আশ্রয় নিলে দেখা যাচ্ছে ভ্যাপসা গরমে শরীর থেকে ঘাম বের হচ্ছে তীব্রভাবে। আবার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, বৃষ্টি হচ্ছে না কিন্তু অসহ্য গরমে দেহমন আক্রান্ত হচ্ছে তীব্রভাবে। যা জনজীবনে কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এবছর ভাদ্রের চরিত্র পরিবর্তনে। এখন আশ্বিন মাস। এ আশ্বিনেও ভাদ্রের একই রূপ চরিত্র লক্ষণীয়। যারা মাঠে কাজ করছে তাদের অবস্থা বড় ভয়াবহ। গরমে শরীর হতে ঘাম বেরিয়ে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে। মাথা ব্যথা, সর্দি-জ্বর, কাশি এবং রাতে গরমের জ্বালায় নিদ্রাহীনতার কারণে শরীরে নানারকম উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। তার উপর বিদ্যুতের যাওয়া আসার খেলা জনজীবনকে আরো দুর্বিষহ করে তুলছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালীসহ বিভিন্ন উপজেলায় পল্লিবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের আচরণ জনজীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। প্রকৃতি প্রতিনিয়ত তার চরিত্র-পাল্টাচ্ছে। শরতের বিকালে শীতল হাওয়ার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস এবং বনাঞ্চল ধ্বসের কারণে। প্রকৃতির ভারসাম্য ঠিক থাকছে না। অপরিকল্পিত প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসই এর মূল কারণ। মানুষ প্রকৃতির উপর চড়াও হওয়াতে প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিচ্ছে জনজীবনে; অস্বাভাবিক ঝড় বৃষ্টি তাপমাত্রা আবহাওয়ার চরিত্র পরিবর্তন করে। তার জন্য দেশের মানুষই দায়ী। আমাদের সবাইকে পরিবেশ ধ্বংস এড়িয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের সেবায় এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে কিংবা আমরা যদি আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের যত্ন না নিই তা হলে পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে না দেশের মানুষ ও জনজীবন।
শরতের রোদ বৃষ্টি, ভ্যাপসা গরমের মধ্যে আমরা সেলাইন পান করতে পারি, লেবুর শরবত পান করতে পারি। শরীরের পানি শূন্যতা পূরণ করে শরীরের যত্ন নিলে সাময়িক শারীরিক অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেতে পারি। এর জন্য আমাদেরকে শরীরের যত্ন নেয়ার পাশাপাশি আহার বিহারে নিয়মতান্ত্রিক হতে হবে। সর্দি-কাশি জ্বর করোনারও লক্ষণ। প্রাথমিক সতর্কতায় শারীরিক উন্নতি না হলে করোনা টেস্ট করে দেখতে হবে। দেশ থেকে করোনা ভাইরাস বিদায় নেয়নি। এখনো প্রতিদিন ২০ জনের অধিক মানুষ করোনা তথা কোভিড-১৯ রোগে মারা যাচ্ছে। রোদ-বৃষ্টি, তাপদাহের পাশাপাশি কুয়াশার প্রকোপ ও দেখা যাচ্ছে কোন কোন স্থানে। পরিবেশের এমন চারিত্রিক অবস্থাতে দেশের মানুষকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। অদ্ভূত পরিবেশ চরিত্রের প্রেক্ষাপটে বিপর্যস্ত জনজীবনকে স্বাভাবিক রাখতে জনসচেতনতার কোন বিকল্প নেই। আশ্বিনের ঋতু বৈচিত্র্যের পরিবেশে দেশের মানুষ সুস্থ ও স্বাভাবিক থাক এটাই আমাদের কাম্য।