‘অতি সত্বর শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধ করুন’

79

অতিসত্বর শ্রমিকদের বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধ করার জন্য গার্মেন্টস এবং বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের নিকট উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। তিনি আজ ১৫ই এপ্রিল বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উপরোক্ত আহবান জানান। এ সময় সুজন বলেন, করোনাভাইরাস একটি বৈশ্বিক দূর্যোগ। এ দূর্যোগের ফলে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশ ও আজক্ষতিগ্রস্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে গত ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সেই সাথে সবাইকে বাড়িতে থাকারও নির্দেশনা প্রদান করেছেন। ইতোমধ্যে মহামারী করোনাভাইরাসে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় দেশের অর্থনৈতিক প্রভাব উত্তরণের লক্ষ্যে সকল সেক্টরকে একীভ‚ত করে ৭২ হাজার ৭৫০কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রতিনিয়তই করোনাভাইরাস মোকাবেলা এবং এর প্রাদুর্ভাব থেকে দেশের জনগনকে রক্ষা করার বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করছেন। প্রধানমন্ত্রীর এতো সব উদ্যোগের পরও অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে বেশ কিছু গার্মেন্টস এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকগণ এখনো তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাজার হাজার শ্রমিক কর্মচারীদের গত মার্চ মাসের বেতনভাতাদি পরিশোধ করেন নি। যা অত্যন্ত অমানবিক এবং গর্হিত কাজ ও বটে। এছাড়াও অযথা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারীদের বেতনভাতাও কেটে রাখা হচ্ছে। এর ফলে শ্রমিকদের মনে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে। তিনি বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে শ্রমিক কর্মচারীরা আপনার পরিবারের অংশ। এদের ঘামে ভেজা পরিশ্রমের ফলেই আপনি সমাজের উচু তলায় আসীন। এদের হাত ধরেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দরবারে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত। তাই এদের অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই। তিনি অতিসত্বর যে সব প্রতিষ্টানে মার্চ মাসের বেতনভাতাদি বকেয়া রয়েছে তাদেরকে বেতনভাতাদি পরিশোধের বিনীত অনুরোধ জানান নচেৎ বেতনভাতাদি নিয়ে কোন ধরণের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্টানকেই এর দায় দায়িত্ব বহন করতে হবে।
এছাড়া জনমনে উস্কানি সৃষ্টির মাধ্যমে ঐসব প্রতিষ্ঠানের মালিকরা কোন অদৃশ্য খেলায় মত্ত রয়েছে কিনা তা ও খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের নিকট বিনীত অনুরোধ জানান সুজন। তিনিআরো বলেন আজ সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকরা বেতন ভাতা পরিশোধের দাবীতে সড়ক অবরোধ করেছে। এতে করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনাটি ও পুরোপুরি লঙ্ঘিত হয়েছে। এর ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়তে পারে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। যেখানে শ্রমিকরা সরকারি নির্দেশনা মেনে বাড়িতে অবস্থান করার কথা সেখানে শ্রমিকরা বেতন ভাতার জন্য রাস্তা অবরোধ করছে যা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার সাথে সাংঘর্ষিক। সঠিক সময়ে বেতনভাতা না পাওয়ার ফলে একদিকে বাড়ির মালিকগণ ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছে অন্যদিকে বাকী দোকানদারগণ ও বাকীতে পণ্য বিক্রয় করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এতে করে সামাজিক অস্থিরতার পাশাপাশি পারিবারিক সহিংসতা ও বাড়তে পারে বলে মত প্রকাশ করেন সুজন।
তাছাড়াবাস ও ট্রাকের ড্রাইভার হেলপারদের পাশাপাশি সিএনজি, টেম্পুসহ অন্যান্য বাহনের ড্রাইভার, হেলপারসহ সর্বস্তরের পরিবহন শ্রমিকদের ও প্রণোদনার আওতায় আনার জন্য চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানান তিনি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন বিভিন্ন ইউনিয়ন এবং শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধার নামে বছরের পর বছর শ্রমিকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেছে বিভিন্ন পরিবহন শ্রমিক নামধারী নেতারা। কিন্তু দুঃখের বিষয় বর্তমান দুঃসময়ে সেসবনামধারী শ্রমিক নেতারা আর শ্রমিকের পাশে নেই। অথচ চাঁদার টাকায় নেতারা আরাম আয়াসে তাদের দিনযাপন করলে ও শ্রমিকরা বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
তিনি বর্তমানে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে শ্রমিক নেতাদের অর্থ এবংখাদ্য সহযোগিতা নিয়ে শ্রমিকদের পাশে দাড়ানোর জন্য উদাত্ত আহবান জানান। বিজ্ঞপ্তি