অগ্নিদুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা জরুরি

27

বর্তমানে শীত ঋতুর মাঘ মাস। প্রকৃতি শীতের প্রভাবে উষ্ক-খুষ্ক। গাছের পাতা ঝরার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে। জলাশয়, পুকুর, ডোবা শুকিয়ে গেছে। এ শুষ্ক মৌসুমে একটু অসতর্ক হলেই অগ্নি দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তৈরি হয়। শীতকালে দেশে অধিক পরিমাণ অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রতিবেদন হতে জানা যায় ২০২১ সালের শুরুতেই চট্টগ্রামে বেশ ক’টি অগ্নিদুর্ঘটনার খবর পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার মূলে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট, গ্যাসের চুলা, রান্নাবান্না কিংবা আগুন নিয়ে অবহেলার কারণেই অগ্নিকান্ডে ঘটনার উৎপত্তি হচ্ছে। জনসচেতনতা ও সতর্কতার অভাবেই ইপিজেড থানার বেড়িবাঁধসংলগ্ন জেলে পাড়ায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। পত্রিকার ভাষ্যমতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অব্যাহত এ অগ্নিকান্ডে অন্তত ২৭টি দোকানঘর পুড়ে ভষ্ম হয়ে যায়। আমরা জানি নতুন বছরের প্রথম দিন দিবাগত রাতে জেলার উপকূলকীয় জনপদ বাঁশখালীর কাথারিয়া বাজারে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হতে আগুন লেগে ৫০ বছর বয়সী এক দোকান কর্মচারীর মৃত্যু হয়। আর ছয়টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর কালুরঘাট শিল্প এলাকার বাদামতলে কাদের ট্রেডিং নামের একটি ফোম কারখানায় অগ্নিকান্ডের খবর জানা যায়। এ অগ্নিদুর্ঘটনাটিও বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সংঘটিত বলে জানা যায়। এভাবে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা হতে অগ্নিকান্ডের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
শুষ্ক মৌসুমে বিদ্যুৎ বিভাগসহ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের বৈদ্যুতিক সার্কিট হতে কোন অগ্নিদুর্ঘটনার আশংকা আছে কিনা তা যাচাই করে দেখা প্রয়োজন। বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের সতর্কতা ও সচেতনতা অগ্নিকান্ডের মতো ভয়াবহ বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। বস্তি এলাকায় গ্যাসের চুলা বা কাঠের চুলা হতে বেশির ভাগ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে থাকে। চুলায় যারা কাজ করে তারা সতর্ক থাকলে চুলা হতে যে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে থাকে তা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। মনে রাখতে হবে ফায়ার সার্ভিস অগ্নি নেভানোর পূর্বেই অগ্নি লাগলে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয় না। সুতরাং, সচেতনতাই শুষ্ক মৌসুমে অগ্নিকান্ডের দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপায়। রান্না শেষে চুলা নিভিয়ে দেয়া, নিজ নিজ ঘরের বৈদ্যুতিক তারে কোন সমস্যা আছে কিনা খতিয়ে দেখা এবং গ্যাসের চুলা ব্যবহারে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করা সর্বসাধারণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং এলাকার লোকজন শীত মৌসুমে অগ্নিকান্ডের ঘটনা হতে রেহাই পাওয়ার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করলে চট্টগ্রামসহ দেশের সর্বত্র অগ্নিকান্ডের ঘটনা কমে আসবে এমন মত সচেতন নাগরিক সমাজের।