হাটহাজারীতে মহাসড়কেই বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার

6

হাটহাজারী প্রতিনিধি

নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে হাটহাজারীতে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। এতে করে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও আগুনের ঝুঁকির শঙ্কা বাড়ছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার শঙ্কায় দিনাতিপাত করছে ওই মহাসড়ক ব্যবহারকারী পথচারী ও যাত্রী সাধারণ। এছাড়া অগ্নিনির্বাপক ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়াই উপজেলার বিভিন্ন হাটে-বাজারে যত্রতত্র অবৈধভাবে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তেমন কোন কার্যকরি পদক্ষেপ এখনও পর্যন্ত দৃষ্টিগোচর হয়নি। যত্রতত্র স্থানে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
গতকাল ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি পৌঁছার অন্যতম চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার সমানে সড়কের উপর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। এক্ষেত্রে দোকানিরা মানছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেয়া কোন প্রকার নিয়মনীতি। তবে ক্রেতা-বিক্রেতারা সাময়িকভাবে উপকার হলেও এতে অত্যন্ত ঝুঁকি রয়েছে। পাশাপাশি উক্ত মহাসড়ক ব্যবহারকারী হাজার হাজার পথচারী ও যাত্রী সাধারণসহ নানা ধরনের যানবাহনগুলো মারাত্বক ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানা গেছে।
মহাসড়ক দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উপর জোর দিয়ে হাটহাজারী পৌরসভা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সস্পাদক ও পৌরসভার ফটিকা গ্রামের বাসিন্দা মো. শফিউল আলম জানান, লাইসেন্সবিহীন অরক্ষিতভাবে মহাসড়কের উপর অবাধে চলছে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি। কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে এসব গ্যাস সিলিন্ডার। এনিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। তাছাড়া মাননির্ণয় ছাড়াই এসব সিলিন্ডার কিনে নিয়ে গ্রামীণ জনপদের মানুষ ব্যবহার করছে। ফলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে সিলিন্ডার বিক্রি নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণ, পথচারী, যাত্রী সাধারণ ও যানবাহনের মালিকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই, নিয়মনীতি অনুসরণ করে বিক্রেতাদের গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা উচিত বলে তিনি জানান।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, হাটহাজারী পৌরসভা ও উপজেলায় ৮-১০ জন গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ডিলার রয়েছে। অথচ ওরা ছাড়া পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন হাটে-বাজারের দাহ্য পদার্থের দোকান, মুদি দোকান, চায়ের দোকান, ক্রোকারিজ, স্টেশনারী, ইলেকট্রানিক্স ও হার্ডওয়ারসহ অর্ধ সহ¯্রাধিক স্থানে যত্রতত্র গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। অথচ ওই সকল দোকানগুলোতে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির কোন অনুমোদন নেই। নেই অগ্নিনির্বাপক ও বিস্ফোরক লাইসেন্স। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা যত্রতত্র গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাটহাজারী বাসস্টেশন এলাকার এক ডিলার জানান, অগ্নিনির্বাপক লাইসেন্স ছাড়া গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। সাময়িকভাবে উপকার হলেও এতে অত্যন্ত ঝুঁকি রয়েছে। যদিও এভাবে যত্রতত্র স্থানে গ্যাস বিক্রি করা খুব বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ও অন্যায়। তিনিও দ্রæত যত্রতত্র স্থানে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি বন্ধের দাবি জানান।
হাটহাজারী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহজাহান বলেন, হাটহাজারী পৌরসভা ও উপজেলায় ৮-১০ জন গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ডিলার রয়েছে। তবে, তারা তাদের অগ্নিনির্বাপক লাইসেন্স দীর্ঘদিন ধরে নবায়ন করছেন না। এরমধ্যে বিভিন্ন হাটে-বাজারে যত্রতত্র বিভিন্ন দোকানে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করা বেআইনি এবং ঝুঁকিপুর্ণ। অভিযোগ পেলে, ইউএনও-এসিল্যান্ডকে সাথে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি এবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিং বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তোলা হবে।
এ ব্যাপারে জানাতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.বি.এম মশিউজ্জামান জনি বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি। যত্রতত্র স্থানে গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করা যাবে না। অবৈধভাবে যারা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।