পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ের ক্ষেত্রে মোবাইল সেট ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এর ব্যত্যয় ঘটেছে হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা কেন্দ্রে। গতকাল মঙ্গলবার ওই কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষার ৩য় দিনে মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে পরীক্ষার হল থেকে বাইরে প্রশ্নপত্র পাঠানোর সময় এক শিক্ষার্থীকে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলসহ আটক করা হয়েছে। এছাড়া একই কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে ৩ পরিদর্শকে বহিষ্কার ও পরীক্ষার্থীদের তল্লাশি করে আরো ৬টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২ টার দিকে প্রতিদিনের মতো এসএসসি পরীক্ষার তৃতীয় দিনে অনুষ্ঠিত ইংরেজী ১ম পত্র (১০৭) পরীক্ষায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুহুল আমিন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সম্রাট খীসা ম্যাজিস্ট্রেসি দায়িত্ব পালনের সময় কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে উপস্থিত হন। পরিদর্শনের সময় ওই কেন্দ্রের ৩৪ নম্বর কক্ষে এক পরীক্ষার্থী মুঠোফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে পরীক্ষার হলে বসে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে বাইরে পাঠানোর চেষ্টাকালে ম্যাজিস্ট্রেটদ্বয় তাকে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলসহ আটক করে। এরপর যাচাই-বাছাই করে তাকে বহিষ্কার করা হয়। আটক ওই পরীক্ষার্থী এ বছর উপজেলার মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এছাড়া আরো ৬ শিক্ষার্থীর শরীর তল্লাশি করে জব্দ করা হয়েছে আরো ৬ টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। শাস্তিস্বরুপ তাদের পরীক্ষার মূল সময় থেকে ৩০ মিনিট করে কর্তন করা হয়েছে।
অন্যদিকে পরীক্ষা চলাকালে দায়িত্বে অবহেলার কারণে একই কেন্দ্রের তিন কক্ষ পরিদর্শক ছিপাতলী গাউছিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মো. ইউসুফ আলি, গুমানমর্দ্দন ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আব্দুল জলিল ও ধলই গাউছিয়া মুনিরীয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. শফিউল আলমকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই ঘটনায় ওই কেন্দ্রের সচিব ও কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মকসুদ আহমেদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে বলা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে ইউএনও রুহুল আমিন এ প্রতিবেদককে জানান, আমি আর ভূমি সহকারী কমিশনার ম্যাজিস্ট্রেসি দায়িত্ব পালনের সময় রিফাত উদ্দীন নামের এক শিক্ষার্থী তার মোবাইলে ইন্টারনেটে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে কাউকে সেন্ড করবে- এমন সময় তাকে আটক করি। ভাগ্যিস আমরা ঐ মুহূর্তে কেন্দ্রে পৌঁছি। না হলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হতো। তিনি আরও বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে কক্ষের সবাইকে তল্লাশি করে আরো ৬ পরীক্ষার্থীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। তাদের কাছে প্রশ্ন ফাঁস কিংবা প্রশ্নের ছবি পাওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে ৩ কক্ষ পরিদর্শকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং কেন্দ্র সচিবকে শোকজ করা হয়েছে।