সোশ্যাল মিডিয়ার যত কথা

12

দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় দাম ও সাধারণ মানুষের অসহায়ত্ব

নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর মূল্য দাম বেড়েছে। মানুষের আয় বাড়ছে না কিন্তু প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দ্রব্য মূল্যের দাম। এ অবস্থা চলতে থাকলে কি হবে বুঝা যাচ্ছে না। মানুষ ১০০০ (এক হাজার টাকা) নিয়ে বাজারে গেলেও মনের মত বাজার করতে পারছে না। আটা-ময়দা, চিনি, তরকারী, মাছ, মাংস সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের দ্রব্যসামগ্রী দিন দিন বেড়্ইে চলছে। এর থেকে পরিত্রাণের কোন উপায়ও অদূর ভবিষ্যতে দেখা যাচ্ছে না, যারা ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে তারা সাধারণ মানুষকে কোন আলোর রেখা দেখাতে পাচ্ছে না। মানুষ দিকবিদিক শুণ্য ভাবে ঘুরছে। কোন সঠিক নির্দেশনা নয়। বিরোধীমত থেকেও কোন সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিনই জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে। ধানের ভরা মৌসুমেও চালের দাম বাড়ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যবিত্তসহ অল্প আয়ের মানুষ বিপাকে। ফলে সাধারণ মানুষের দুঃখ ও ভোগান্তি বেড়েছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পরিবহন ও পানির মত নিত্য ব্যবহার্য সেবার দাম দফায় দফায় বৃদ্ধি পাওয়াতে সাধারন মানুষ আরো অসহায় হয়ে পড়েছে। অতি দরিদ্র মানুষের জন্য এই অবস্থা অভিশাপের মত হয়ে উঠেছে। জিনিস পত্রের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে সেভাবে মানুষের আয় বাড়েনি।
গত কয়েক বছরের দ্রব্যমূল্যের চিত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, চালের দাম ২৫-৩০ টাকা, সয়াবিন তেল ১০০-১২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যান্য জিনিস পত্রেরও একই অবস্থা। সরকারি সংস্থা টিসিবিও যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারছে না। শহরের বিভিন্ন ব্যবসায়ী পাড়া থেকে জানা যায় কোন ব্যবসায়ী বাজারে পণ্যের সংকট আছে বলে মনে করছে না। খুচরা বিক্রেতারা উচ্চমূল্যে ক্রয় করার বাহানায় আছে। পাইকারী বাজারের ব্যবসায়ীদেরও একই সুর। মূল কথা বাজারের উপর সঠিক নিয়ন্ত্রণ নেই কারো নাকি যারা নিয়ন্ত্রণ করবে তারাই কারসাজি করছে বুঝা যাচ্ছে না। সরষের ভিতর ভূত থাকলে সেই ভূত তাড়াবে কে? সরকার কিছু পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক কমালেও ব্যবসায়ীরা আশানুরূপ দাম কমায়নি।
অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করতে চাই। বিপুল পরিমানে পণ্যসামগ্রী গুদামজাত করে অধিক লুঠতে চাই। যখন মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি পায় তখন লুঠেরারা গুদামজাত পণ্য বেশি দামে বিক্রয় করে। ফলে ফটকাবাজরা দিনদিন আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হচ্ছে আর সাধারণ মানুষের দীর্ঘশ্বাস আরো দীর্ঘ হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রনালয়কে টিসিবির মাধ্যমে আরো সক্রিয় হওয়ার প্রয়োজন ছিল। সরকার বাজার মনিটরিং ও দোকানে দোকানে পণ্যের তালিকা টানানো বাধ্যতামূলক করলেও বাজারে তেমন কার্যক্রর প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
কৃষি প্রধান দেশে কৃষিকে আধুনিকীকরণের কোন কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। মাঝে মধ্যে সরকারের উপর মহল থেকে নানা উদ্যোগের কথা বলা হলেও এসব কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়নের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। চোরাই পথে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পাচার, পথে পথে চাঁদাবাজি, আবার ট্রাকে মালামাল আনা-নেওয়া, লোড-আনলোডেও অনেক টাকা খরচ হয়। এসব মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। কৃষি উৎপাদনের ব্যবহার্য উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক যথাযথ উপকরন সঠিক ব্যবহার করতে পারছেনা। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অপ্রতুলতা দেখা যায়। এসব বিষয় সঠিকভাবে মনোযোগ দিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণেই বর্তমান সংকট মুক্তির একমাত্র পাথ।
মোহাম্মদ বদিউর রহমান
দ. মধ্যম হালিশহর, ৩৮ নং ওয়ার্ড।
বন্দর, চট্টগ্রাম।