সাতকানিয়ায় গভীর রাতে ৩ বাসে আগুন

4

সাতকানিয়া প্রতিনিধি

সাতকানিয়ায় মহাসড়কের পাশে পার্কিং করে রাখা তিনটি বাস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত রবিবার দিবাগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কেঁওচিয়া ইউনিয়নস্থ সাতকানিয়া রাস্তার মাথার অদূরে মাদারাবাড়ি এলাকায় শ্যামলী পরিবহনের দুটি ও হানিফ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোন মামলা বা অভিযোগ হয়নি বলে থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আতাউল হক জানিয়েছেন।
ঘটনাস্থলের পাহারাদার ছালেহ আহমদ বলেন, ‘আমি তখন রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করছিলাম। সময় রাত ৩টা ৪০ মিনিট। মহাসড়কের উত্তর পাশ থেকে মুখোশ পরিহিত দুইটি মোটর সাইকেলযোগে পাঁচ যুবক আসে। হঠাৎ তিনজন নেমে মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি বাসে আগুন দিয়ে দক্ষিণ পাশ দিয়ে পালিয়ে যায়। তবে কি দিয়ে আগুন লাগিয়েছে সেটি তিনি দেখেননি বলে জানান।
বাসগুলোর চালক শাহাদাত হোসেন, মো. আমিন ও ওসমান গণি বলেন, আগুনে শ্যামলী পরিবহনের ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-০৯৮৫, ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৪৩৬৭ ও হানিফ পরিবহনের ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-০৮১৬ তিনটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। হরতাল-অবরোধে আমরা গাড়ি চালাই না। কোম্পানিরও নিষেধ আছে। আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি গাড়ির সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
তারা আরও বলেন, ‘আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। হরতাল-অবরোধ বুঝি না। গাড়ির চাকা ঘুরলেই আমাদের পেটে চলে। গাড়িতে আগুন লাগায় আমাদের রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বুঝছি না কিভাবে সংসার চালাবো। এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে উপবাস করা ছাড়া উপায় নাই।
পুড়ে যাওয়া বাসের মালিক মো. রিদুয়ান ও সিরাজুল ইসলাম বলেন, ইঞ্জিন, গাড়ির বডি ও সিটসহ পুরো গাড়ির পুগে গেছে। তিন গাড়িতে প্রায় ২৫ লাখ টাকার অধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা এস এম হুমায়ুন কার্ণায়েন বলেন, ‘খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
সাতকানিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আতাউল হক বলেন, ‘খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। তবে, আগুন কিভাবে এবং কি দিয়ে লাগানো হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আশ-পাশের সিসি ক্যামেরা দেখে ও তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন করা হবে। এ ঘটনায় বাসের মালিকরা এজাহার দিলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস বলেন, পুলিশসহ আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। যারাই নাশকতা করুক বা চেষ্টা চালাবে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।