রাঙ্গুনিয়ায় হাতির আক্রমণে বৃদ্ধ নিহত

112

রাঙ্গুনিয়ায় বন্যহাতির আক্রমণে মো. ইউসুফ সওদাগর (৮০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে পশ্চিম সরফভাটার মৌলানা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের আত্মীয় মো. সেলিম জানান, ভোরে মসজিদে নামাজ আদায়ের জন্য যাচ্ছিলেন ইউসুফ সওদাগর। পথে হঠাৎ বন্যহাতির দলের সামনে পড়েন তিনি। পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে একটি হাতি তাকে পা দিয়ে পিষ্ট করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। নিহত ইউসুফ ওই এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে। তার পরিবারে স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ৪ কন্যা রয়েছেন। একই দিন আসরের নামাজের পর জানাজা শেষে তার লাশ দাফন করা হয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, প্রতিবছরের মত এবছরও বন্যহাতি তাÐব শুরু করেছে। ইতিমধ্যে দুইবার হাতির পাল সরফভাটার পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকালয়ে নেমে এসেছে। এরপরও বন অধিদপ্তর কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আমি গত ২৪ নভেম্বর উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি তুলে ধরলে বন অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানালেও বাস্তবে কিছুই করেনি।
তিনি জানান, ৩-৪টি হাতির পাল রাতে পাহাড় থেকে পশ্চিম সরফভাটা সুচিয়াপাড়ায় আসে। ওইখানে মসজিদের কাঁচও ভাঙচুর করে। ভোরের দিকে যাওয়ার সময় এক মুসল্লিকে মেরে ফেলে। বন অধিদপ্তর যদি কার্যকর ব্যবস্থা নিতো, তাহলে লোকটা প্রাণ হারাতেন না।
বন বিভাগের উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা প্রহলাদ চন্দ্র রায় বলেন, বনে খাবারের অভাবে হাতি বার বার লোকালয়ে চলে আসছে। আমরা এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। যখনই হাতি লোকালয়ে চলে আসে, তখনই আমাদের বনবিভাগের কর্মীরা তাদের বনে ফেরত পাঠিয়েছে। এছাড়া আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে প্রচারণা অব্যাহত রেখেছি। প্রাণহানির ঘটনায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ১ লাখ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।
সূত্র জানায়, গত ৬ বছরে বন্যহাতির আক্রমণে রাঙ্গুনিয়ার ১৬ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। বন উজাড়সহ হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ায় হাতির পাল নিয়মিত লোকালয়ে চলে আসছে। তাই হাতির নিরাপদ আবাসস্থল তৈরিসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।