পূর্বদেশ ডেস্ক
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ অবিলম্বে স্থগিত করতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ফোলকার টুর্ক। গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ অনলাইনে সমালোচকদের কণ্ঠরোধ করতে এ আইন ব্যবহৃত হওয়ায় আমি উদ্বিগ্ন। এ আইনের ব্যবহার অবিলম্বে স্থগিত করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের শর্তের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সংস্কারের জন্য আমি আবারও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি’।
প্রয়োজনীয় সংস্কারে সহায়তা করতে মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের দপ্তর থেকে ইতোমধ্যে বিস্তারিত মন্তব্য ও পরামর্শ দেওয়ার কথাও বিবৃতিতে বলেছেন টুর্ক।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর এ আইন কার্যকরের পর থেকে এ পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি মামলা হয়েছে। যার সবশেষটি দায়ের করা হয়েছে প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসের বিরুদ্ধে। তাকে আটকের সময় ল্যাপটপ ও ফোন জব্দ করা এবং বৃহস্পতিবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টিও বিবৃতিতে এসেছে।
সেখানে বলা হয়, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এবং একজন আলোকচিত্র সাংবাদিকের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে একটি প্রতিবেদনের কারণে, যেখানে ‘জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সংকটের কথা’ বলা হয়েছিল।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে পরিতোষ সরকার নামে এক তরুণকে ফেসবুকে ‘ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত’ দেওয়ার অভিযোগে এ আইনের মামলায় পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। সেখানে বলা হয়, আইনটির ‘বিস্তৃত পরিসর ও বাজে সংজ্ঞায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে’ মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয় অব্যাহতভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে, নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা অতিরিক্ত ব্যবহার যেন না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে। কিন্তু গ্রেপ্তার অব্যাহত থাকায় সেই প্রতিশ্রুতি এখন আর যথেষ্ট হচ্ছে না। খোদ আইনটিরই যথাযথ সংশোধন প্রয়োজন। খবর বিডিনিউজের
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ঝুলে থাকা মামলাগুলো পর্যালোচনার জন্য একটি ‘স্বাধীন বিচারিক প্যানেল’ গঠন করারও আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান।