নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের মূল অবকাঠামোর কাজ আগামী জুলাইতে শুরু হতে পারে। চীনের অর্থায়নে দেড়শ শয্যার বার্ন ইউনিট স্থাপনে ইতোমধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। নির্ধারিত স্থানের অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে এখনো নির্ধারিত স্থান অবকাঠামো নির্মাণের উপযুক্ত না হওয়াতে এ সময় নেওয়া হচ্ছে।
চমেক হাসপাতালের দেড়শ শয্যার বার্ন ইউনিট স্থাপনের জন্য গোঁয়াছি বাগান এলাকায় এক একর জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ২০ মার্চ ওই স্থান থেকে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা সরানো হয়েছে। পরে ৩০ মার্চ চীনের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়। দ্রæত সময়ের মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু করার কথা বলা হলেও ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে দেড় মাস।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে স্থাপনা সরানো হলেও মাটির তলায় বিল্ডিংয়ের ফাউন্ডেশনের অংশ রয়ে গেছে। সেগুলো সরানোর কাজ চলছে। সেসব স্থাপনা সরানো ও গাছ কেটে পরিষ্কার করা হবে। আমাদের দিক থেকে সব ঠিক থাকলে তারা (চীন) লোক পাঠাবেন। উচ্ছেদ অভিযানের পর জায়গায় যততত্র থাকা ইট সরানো হচ্ছে। চারপাশে দেয়াল এবং মূলফটকের কাজ চলছে। এসব কাজ শেষ করে অবকাঠামোর কাজ শুরু করতে মাস দুয়েক সময় লাগতে পারে।
তিনি বলেন, জায়গাটি অবকাঠামো নির্মাণের উপযুক্ত করা ছাড়াও বিভিন্ন সংস্থার অনুমতির বিষয় আছে। এসব কাজ শেষ করে অবকাঠামোগত কাজ শুরু হবে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে শয্যা আছে ২৬টি। যদিও নিয়মিত শয্যার বাইরে অর্ধশতাধিক রোগী ভর্তি থাকেন। শীতকালে সেই সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। তাছাড়া বর্তমানে রোগীর অবস্থা জটিল হলে পাঠাতে হয় ঢাকায়। প্রস্তাবিত বার্ন ইউনিট চালু হলে চট্টগ্রামে আগুনে পোড়া রোগীদের সকল চিকিৎসা সম্ভব হবে।
চমেক হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. রফিক উদ্দীন আহমেদ বলেন, মাত্র ২৬ শয্যার হলেও এ ইউনিটে প্রতিদিন ভর্তি থাকেন ৭০-৮০ জন রোগী। শীতকালে রোগীর সংখ্যা আরও বেশি থাকে। চীনের অর্থায়নে প্রস্তাবিত বার্ন ইউনিট হলে চট্টগ্রামের রোগীরা এখানেই সকল চিকিৎসা পাবেন।
চমেক হাসপাতালের পেছনে গোঁয়াছি বাগান এলাকায় প্রায় এক একর জায়গায় নির্মাণ করা হবে বার্ন ইউনিটটি। প্রকল্পটিতে ১৫০টি শয্যা থাকবে। তার মধ্যে ২০টি আইসিইউ, শিশুদের জন্য ৫টি আইসিইউ, এইচডিইউ ২৫টি, অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার করা হবে ২টি। হাসপাতালটি ৬তলা ভবনে করা হবে। প্রথম তলায় থাকবে ইর্মাজেন্সি ওয়ার্ড এবং ওপিডি, দ্বিতীয় তলায় তিনটি ওটি (অপারেশন থিয়েটার) এবং নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), তৃতীয় তলায় সম্পূর্ণ হাই ডিপেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ), ৪র্থ, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় ওয়ার্ড এবং অফিস। বার্ন ইউনিটে রোগী আনা-নেওয়ার সুবিধার জন্য তিনটি রাস্তা বানানো হবে। চট্টেশ^রী রোডের দিক থেকে একটি রাস্তা হবে। সেটি হবে বার্ন হাসপাতালের প্রধান রাস্তা। চমেক হাসপাতালের পেছনে ছাত্র হোস্টেলের দিক থেকে আসবে আরও একটি রাস্তা। সর্বশেষ রাস্তাটি হবে মিজান হোস্টেলের দিক দিয়ে। সেখানে মাঝখানে পাহাড় থাকায় তা ঘুরিয়ে ওয়ার সিমেট্রি হয়ে আনা হবে।