চোখ উঠলে যা করবেন যা করতে মানা

4

কিছুদিন ধরেই চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া দুই কারণেই হয়ে থাকে রোগটি। অনেক সময় ঘুম থেকে উঠলে চোখে একটা পড়েছে এমন অনুভূতি, চুলকানো এবং জ্বালাপোড়া করে। আবার সবকিছু ঘোলাটে দেখা, পানি পড়া, চোখের কোণায় ময়লাও জমে। কোনো ব্যক্তির এমন হলে চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত বলা হয়।
রাজধানীর মিরপুরের ববি হাসানের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে রুমানা হাসান। দুই দিন ধরে চোখ জ্বালাপোড়া করছে। এক চোখে ময়লাও আসছে। গত বছরও এ সময় এমন হয়েছিল রুমানার। ডাক্তারের পরামর্শে রুমানা এখন কলেজ, টিউশনি কোথাও যাচ্ছেন না। একটি চোখের ড্রপ এবং ব্যথানাশক ওষুধ দিয়েছেন চিকিৎসক। বোনের পাশাপাশি চোখে একই ল²ণ দেখা দিয়েছে ববির ছেলে মাহিন হাসানের। ছয় বছর বয়সী ছেলেটি বেশ কান্নাকাটি করছে। ববি বলেন, ‘ডাক্তার ঘরেই চিকিৎসা নিতে বলেছেন। চোখ ওঠা রোগ ৭ দিনেই ভালো হয়ে যায় বলে জানিয়ে দুশ্চিন্তা না করতে বলেছেন তিনি।’ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বছরের এই সময়টায় চোখ উঠা একটি সাধারণ সমস্যা। এবারও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাতে রোগটির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট বা হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে তাই বেড়েছে ভিড়।
কী করতে হবে, যা করা যাবে না : চক্ষু বিশেষজ্ঞ ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘চোখ ওঠা রোগ আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি। বাচ্চাদের মধ্যে আগে বেশি দেখা যেত, তবে এখন সব বয়সেরই হচ্ছে। জনসংখ্যা বেড়েছে, সাথে কর্মজীবী। তাই ধুলাবালির সংস্পর্শে আসার সংখ্যাও বেড়েছে। তবে এই রোগ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। কিছুদিন ঘরে থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেই ঠিক হয়ে যায়।’ আরেক চিকিৎসক তানজিনা রহমান বলেন, ‘এই রোগটি ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া দুই কারণেই হতে পারে। যাদের চোখ জ্বালাপোড়ার সঙ্গে ময়লা আসে তাহলে সেটা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন। একে বলে ব্যাকটেরিয়াল কন্জাঙ্কটিভাইটিস। আর শুধু ভাইরাল ইনফেকশন হলে চোখ জ্বালাপোড়া করে এবং লাল হলে হয়ে যায়। এক্ষেত্রে চোখে হাত দেয়া যাবে না। এলার্জি হয় এমন খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।’ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ জিয়াউল কবির বলেন, ‘এটি যেহেতু বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় তাই অতিরিক্ত ধুলাবালির সংস্পর্শে গেলে যে কোনো সময় হতে পারে। তাই বাইরে গেলে সানগদ্বাস ব্যবহার করতে হবে। যতটা সম্ভব ধুলাবালি এড়িয়ে চলতে হবে। ধুলাবালি থেকে শুধু চোখ ওঠা নয়, এলার্জিজনিত নানা ধরনের রোগ হতে পারে।’ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন মেডিক্যাল অফিসার বলেন, ‘যেহেতু রোগটি ছোঁয়াচে, তাই যতটা সম্ভব আইসোলেশনে থাকা ভালো। ছোঁয়াচে এবং বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় বলে লোকজন থেকে দূরে থাকতে বলা হয়। ‘সানগ্লাস পরে থাকতে হবে। চুলকানি হলে রোগী ঠান্ডা এবং এলার্জিজনিত রোগের ওষুধ খেতে পারেন। চোখের কিছু ড্রপ রয়েছে, আমরা সেগুলো সাজেস্ট করি। তবে অনেকেই বার বার চোখে হাত দেয় বা চুলকায়। এতে চোখের ক্ষতি হতে পারে। তবে ভয়ের তেমন কোনো কারণ নেই। সাধারণ ৬ থেকে ৭ দিনেই এটি ভালো হয়ে যায়।’