আসহাব আরমান
বছরের শুরুতে নতুন বই শিক্ষার্থীদের আনন্দ বাড়িয়ে দেয়। এর সাথে যোগ হয়েছে বই উৎসব। ২০১০ সাল থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বই উৎসবের রেওয়াজ চালু হয়েছে। পহেলা জানুয়ারি হয় এই বই উৎসব। তবে চট্টগ্রামে এখনও বই উৎসবের নতুন বই এসে পৌঁছায়নি। এ বছর চট্টগ্রামে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে ২ কোটি ৫৩ লাখ ৯ হাজার নতুন বইয়ের চাহিদা রয়েছে। বই এসে পৌঁছেছে মাত্র ২০ শতাংশ। তবে পহেলা জানুয়ারি নাগাদ চাহিদা অনুযায়ী সব বই এসে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৮১ জন। এসব শিক্ষার্থীর জন্য বই প্রয়োজন ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯০৩টি। এ পর্যন্ত বই এসে পৌঁছেছে ৩৪ লাখ। যা মোট চাহিদার ২১ শতাংশ। আরও ১ কোটি ২৩ লাখ ৮৯ হাজার ৯০৩টি বই এখনও আসেনি।
চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার মো. ফরিদুল আলম হোসাইনী পূর্বদেশকে বলেন, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসা মিলিয়ে এ বছর নতুন বইয়ের চাহিদা ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯০৩টি। এখনও পর্যন্ত ৩৪ লাখ বই আমাদের কাছে পৌঁছেছে। আশা করছি, অবশিষ্ট বইগুলো নির্ধারিত সময়ে এসে যাবে। পরে এসব বই ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের বই উৎসবে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে ৪ হাজার ৩৫৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকে অধ্যয়নরত ১০ লাখ ৮২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ৪৭ লাখ ৫০ হাজার বইয়ের চাহিদা রয়েছে। ইতোমধ্যে মিরসরাই উপজেলা ও পাঁচলাইশ থানায় বই এসেছে। অবশিষ্ট উপজেলা ও থানাগুলোতে এখনও বই এসে পৌঁছায়নি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলাম পূর্বদেশকে বলেন, চট্টগ্রামে এ বছর প্রাথমিক নতুন বইয়ের চাহিদা ৪৭ লাখ ৫০ হাজার। বই এসেছে নগরীর পাঁচলাইশ থানা ও মিরসরাই উপজেলায়। আমরা আশা করছি পহেলা জানুয়ারির আগেই আমাদের চাহিদা সবগুলো বই এসে পৌঁছাবে।
এদিকে সময়মত নতুন বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে একজন শিক্ষক জানান, সময়মত বই না পেলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটবে। যেসব শ্রেণিতে শিক্ষাক্রম পরিবর্তন হয়নি সেসব শ্রেণিতে পুরাতন বই দিয়েও পাঠদান চালানো যাবে। তবে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে শিক্ষাক্রম পরিবর্তন হয়েছে। এসব শ্রেণিতে নতুন বই লাগবে। অন্যথায় এসব শ্রেণিতে পাঠদান বন্ধ থাকবে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকে দেশে বই উৎসবের মাধ্যমে বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে মাত্র ১৫ দিন মাস বাকি। জাতীয় শিক্ষা শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানিয়েছে, কার্যাদেশ দিতে দেরি হওয়ায় সময়মতো বই ছাপিয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বিতরণ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া কাগজের দাম বৃদ্ধি পাওয়া এ বছর নতুন বই ছাপার কাজ বাধাগ্রস্থ হয়েছে। এবার প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণি এবং মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে পাঠ্যবই ও শিক্ষক গাইড দেওয়া হবে। অন্যান্য শ্রেণিগুলোর জন্য পুরোনো শিক্ষাক্রমের আলোকে বই ছাপানো হচ্ছে।