নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উপলক্ষে চট্টগ্রামে অর্ধশত বছর ধরে আয়োজন করা হচ্ছে জশনে জুলুস। ঐতিহ্যবাহী এই আয়োজনে স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে অংশ নেন অর্ধকোটি ধর্মপ্রাণ মুসলামান। দিন দিন এ সংখ্যা বাড়বে বলে জানিয়েছেন আয়োজন সংশ্লিষ্টরা। তাই একে বিশ্বের সর্ববৃহৎ জুলুস দাবি করে বিশ্ব ঐতিহ্য এবং গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানিয়েছে আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট। গিনেজ বুকে জায়গা হলে তা শুধু জুলুস নয়, পুরো চট্টগ্রাম সম্মানিত হবে। সেই লক্ষ্যে চলছে আবেদনের প্রক্রিয়া।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জশ্নে জুলুস ও ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (সা.) সফল করতে আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘এবারের জশ্নে জুলুসে নেতৃত্ব দিবেন আওলাদে রাসুল রাহনুমায়ে শরিয়ত ও তরিকত আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী। প্রধান মেহমান থাকবেন পীর আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী এবং বিশেষ মেহমান থাকবেন সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসিম শাহ্ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী।
আগামী বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় ষোলশহরস্থ আলমগীর খানকাহ শরীফ থেকে জুলুস বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে এসে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিলে অংশগ্রহণ, সালাতু সালাম ও মোনাজাত শেষে জুলুসের সমাপ্তি হবে। এর আগে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মোহাম্মদপুর কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া মাদ্রাসা থেকেও জুলুস বের করা হবে।
লিখিত বক্তব্যে জুলুসকে সফল করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আয়োজিত বেসরকারি পর্যায়ের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট। দিবসটিকে উদযাপনের জন্য আনজুমান ১৯৭৪ থেকে চট্টগ্রামে সর্বপ্রথম ‘জশনে জুলুস’ শুরু করে, যা বর্তমানে সমগ্র দেশে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আনজুমান ট্রাস্ট আয়োজিত জশনে জুলুসটি বর্তমানে চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে গণ্য হচ্ছে। চট্টগ্রামের মানুষ সারাবছর ধরে অপেক্ষায় থাকে কখন আসবে ১২ রবিউল আউয়াল। এবারের জুলুসটি হবে ৫১তম আয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দীর্ঘ পাঁচ দশকে জশনে জুলুস শুধু বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদে উদযাপন হচ্ছে তা নয় বরং বিশ্বের শতাধিক রাষ্ট্রে এখন মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে জশনে জুলুস। আয়োজন যাতে সুশৃঙ্খল ও নির্বিঘœ হয় সেজন্য গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ এবং আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্সের অন্তত পাঁচ হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবক জুলুসে দায়িত্ব পালন করবে। এই বিশাল জশনে জুলুসে আগতদের সেবায় জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, ওয়াসা, বিদ্যুৎ, পরিবহন সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন কেন্দ্রীয় গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এড. মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট’র এডিশনাল জেনারেল সেক্রেটারি ও জুলুস সাব-কমিটির আহŸায়ক মোহাম্মদ সামশুদ্দিন, ফাইন্যান্স সেক্রেটারি মুহাম্মদ এনামুল হক বাচ্চু, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম, গাউসিয়া কমিটির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ (সাবেক কমিশনার), জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল মহসিন মো. ইয়াহিয়া খাঁন, অধ্যক্ষ আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ আবদুল আলীম রেজভী, পিএইচপি ফ্যামিলির প্রতিনিধি মুহাম্মদ দিলশাদ, মহানগরের সহ-সভাপতি ছাবের আহমদ, সম্পাদক মাওলানা আবদুল্লাহ, উত্তর জেলার সম্পাদক এড. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সম্পাদক মাস্টার মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, মিডিয়া কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, মুহাম্মদ মনছুরুর রহমান, আ ন ম তৈয়ব আলী, সাইফুল আলম সিদ্দিকী, আহসান হাবীব চৌধুরী হাসান, আবু নাসের রনি, এরশাদ খতিবী প্রমুখ।