খুনের মামলায় ৭ জনের যাবজ্জীবন

18

নিজস্ব প্রতিবেদক

কর্ণফুলী উপজেলায় ছাত্রলীগ কর্মী মামুনুর রশিদ মামুনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সাত আসামির সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম মোজাম্মেল হক এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন আলী আজগর হৃদয়, আজম, ওমর উদ্দিন, শওকত হোসেন ওরফে শাহ নূর, ফারুক ওরফে আশিক, এস এম আশরাফুল আলম সুমন ও পারভেজ। তাদের মধ্যে সুমন ও পারভেজ পলাতক।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আইয়ুব খান জানান, আলোচিত এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে আমরা আদালতের সামনে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এ কারণে সাত আসামির সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ওই ঘটনায় আরেক ভিকটিম আবদুল আজিজকে কুপিয়ে আহত করায় আসামি ওমর উদ্দিনকে ৩০৭ ধারায় আরও ১০ বছর সাজা এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তার উভয় সাজা একসাথে কার্যকর হবে।
এ বিষয়ে নিহত মামুনের ভাই মামলার বাদী ইয়াছিন রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জানান, আমরা আশা করেছিলাম যে তিনজন আসামি (আজম, আলী আজগর ও ওমর উদ্দিন) ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিল, তাদের হয়ত ফাঁসি হবে। আদালত সাতজনকেই যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন। আসামিরা নিয়মিত মাদক সেবন করত, এসবের ব্যবসাও করত। বাধা দেওয়ায় আমার ভাইকে হত্যা করা হয়।
প্রসঙ্গত: ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কর্ণফুলী উপজেলার জমাদরপাড়া এলাকায় বাড়ির কাছেই ২৬ বছর বয়সী মামুনুর রশিদ মামুনকে খুন করা হয়। নিহত মামুন ওই এলাকার আবু তাহেরের ছেলে। কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন মামুন। তার শরীরে বিভিন্ন অংশে এলোপাতাড়ি কোপের চিহ্ন ছিল। তার একটি হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মামুনের সহযোগী আবদুল আজিজও সেদিন ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে নিহত মামুন ছিলেন সবার ছোট। এ ঘটনায় তার ভাই ইয়াসিন বাদী হয়ে ঘটনার পরদিন হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ২০১৯ সালের ১১ মার্চ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। অভিযোগ গঠন করা হয় ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলী আইয়ুব খান বলেন, আলোচিত এ মামলাটি প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষে ২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্য আদালতে উপস্থাপন করা হয়। এরপর বিস্তারিত বিচার বিশ্লেষণ শেষে গতকাল এ রায় ঘোষণা করা হল।