কারাবন্দী আলেমদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি

8

ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী প্রতিনিধি

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, ‘হেফাজতে ইসলাম কোন রাজনৈতিক দল নয়, জাতীয় ও আঞ্চলিক নির্বাচনে আমাদের কোনো প্রার্থী নেই, প্রপাগান্ডাও নেই। কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে আমাদের সংশ্লিষ্টতা নেই। আমরা বারবার বলেছি, এখনো বলছি, কাউকে ক্ষমতায় বসানো বা ক্ষমতা থেকে নামানো আমাদের এজেন্ডা নয়। হেফাজতের ব্যানারে কোনো রাজনৈতিক কর্মকান্ড করার কোনো সুযোগও নেই। এদেশে মুসলমানদের ঈমান-আক্বিদা ও ইসলামী তাহজীব-তমদ্দুন রক্ষার উদ্দেশ্যে এই সংগঠনটি গঠিত হয়। তাই আমরা শুধু ইসলামী শিক্ষা, সংষ্কৃতি ও তাহজিবের বিকাশ এবং নাস্তিক্যবাদের প্রতিরোধে কাজ করে যাবো।’ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ফটিকছড়ির বাবুবনগর মাদ্রাসায় (জামিয়া ইসলামিয়া আজীজুল উলুম) হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির মজলিসে আমেলার বৈঠক ও পরিচিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। হেফাজতের আমির আরো বলেন, ‘ক্ষমতাকেন্দ্রিক কোনো ধরনের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ এই সংগঠনের নেই, যা আগেও বহুবার আমরা পরিষ্কার করে বলেছি। আমাদের কাজ, সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সকল নাগরিকদের কাছে দ্বীনের সহীহ দাওয়াত পৌঁছানো। এটিই আমাদের মূল সাংগঠনিক ও দ্বীনী দায়িত্ব। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে ধর্ম অবমাননা ও কট‚ক্তির সব প্রয়াস বন্ধ করে দেয়ার জন্য আমাদের সকল প্রচেষ্টা সর্বদা অব্যাহত থাকবে। হেফাজত তার সুনির্দিষ্ট রূপরেখা তথা ১৩ দফা দাবি সুন্দর ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। আমরা সরকারের শত্রু নই, সরকারের কাজ সরকার করুক, আমাদের কাজ আমরা করব। তবে নাস্তিক্যবাদী শক্তি যদি মাথাচাড়া দেয় এবং কুরআন, আল্লাহ, রসূল, উম্মাহাতুল মুমিনিন, আসহাবে রাসূল সা. এর শানে কটূক্তি ও ঘৃণা প্রচার করে এবং ইসলামবিদ্বেষ ছড়ায়, আর এতে সরকার যদি কোন অ্যাকশন না নেয়, অথবা সরকার যদি নিজের পক্ষ থেকে এমন কোন পদক্ষেপ নেয় যা ইসলামী শরীয়াহ পরিপন্থি তাহলে ঈমানের তাগিদে আমরা তার প্রতিবাদ করব এবং প্রয়োজনে গণতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। নিঃস্বার্থভাবে সরকারকে নসিহত করা বা সৎ পরামর্শ দেয়া একটি মহৎকাজ বরং ঈমানী দায়িত্ব। ভারতের মুজাদ্দিদে আলফেসানি সহ যুগে যুগে বিভিন্ন দেশের অনেক বুজর্গানে দ্বীন এ কাজ করে গেছেন। তাই আমরাও দ্বীনি বিষয়ে সরকারকে সৎ পরামর্শ দিতে বাধ্য থাকব।’
বৈঠকে কারাবন্দী আলেমদের মুক্তি ও সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ২৮ অক্টোবর জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনের ঘোষণা দেন মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান। বৈঠকে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটিতে আরও ৯ জনকে নতুন করে বিভিন্ন পদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন নায়েবে আমির আহমেদ আলী কাসেমী, সহকারী মহাসচিব মো. জসিম, মাওলানা হাবিবুল্লাহ আজাদী, সহ দাওয়া বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা জুবায়ের, সদস্য মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা আশেকুল্লাহ, মাওলানা মো. মুসা, মাওলানা মাহমুদুল্লাহ ও মাওলানা মাহমুদ শাহ।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা মুফতি খলিলুর আহমাদ কাসেমী, নায়েবে আমীর আল্লামা মাহফুজুল হক, আল্লামা সালাহ উদ্দিন নানুপুরী, মুফতি জসিম উদ্দিন, আল্লামা আবদুল আউয়াল, ড. আহমদ আব্দুল কাদের, মাওলানা সরোয়ার কামাল আজিজী, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, মুফতি হাবীবুর রহমান কাসেমী, মুফতি মোবারক উল্লাহ, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মুফতি হারুন ইজহার, মাওলানা মীর ইদ্রিস, মাওলানা জালাল উদ্দিন, মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির, মুফতি মুহাম্মদ আলী, মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারী, এ্যডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা আইয়ুব বাবুনগরী, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সোবহানী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা জাকারিয়া নোমান প্রমুখ।