একবারেই মিলবে ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার দিনই হবে বায়োমেট্রিক মনিরুল ইসলাম মুন্না

26

এবার অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার সুবিধা চালু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এতে গ্রাহককে লার্নার কার্ডসহ ৫/৬ বারের পরিবর্তে মাত্র একবারই বিআরটিএ কার্যালয়ে যেতে হবে। ফলে বায়োমেট্রিকের জন্য আর দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হবে না। এছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ডও পাওয়া যাবে ডাকযোগে। আজ (বুধবার) বিআরটিএ’র চট্ট-মেট্রো-২ ও চট্টগ্রাম জেলা সার্কেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা এবং একইদিন বায়োমেট্রিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন সংস্থার চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক শফিকুজ্জামান ভূঞা। তিনি গতকাল মঙ্গলবার পূর্বদেশকে এ তথ্য জানান। বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য দুটি আবেদনের পরিবর্তে অনলাইন বেইজড একটি কম্বাইন্ড ফরম বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টালে (বিএসপি) চালু হবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে লার্নার কার্ডসহ ৫/৬ বারের পরিবর্তে শুধুমাত্র একবার পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়া ও বায়ো-এনরোলমেন্টের জন্য আসতে হবে। এছাড়াও এ সিস্টেম থেকে আবেদনকারীরা ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন বেজড কিউআর কোড সম্বলিত লার্নার লাইসেন্স গ্রহণ, ফি প্রদান, পরীক্ষার ফল জানা, সিস্টেম জেনারেটেড স্মার্ট কার্ড আবেদন দাখিল, কিউআর কোড বেজড সিস্টেম জেনারেটেড মোটরযান চালানোর অস্থায়ী অনুমতিপত্র বা একনলেজমেন্ট ¯িøপ প্রাপ্তি এবং আবেদনপত্র বা কার্ড প্রস্তুতের প্রতিটি পর্যায়ে স্ট্যাটাস জানতে পারবেন। তাছাড়া ডাকযোগে স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করতে পারবেন।
এই সেবা পেতে বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টালে (যঃঃঢ়ং://নংঢ়.নৎঃধ.মড়া.নফ) প্রবেশ করে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর এবং জন্মতারিখ এন্ট্রি করে ইউজার আইডি খুলতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিআরটিএ জানিয়েছে, গত ১৬ নভেম্বর থেকে যে সকল আবেদনকারী বিআরটিএ চট্ট মেট্রো-২ সার্কেল ও চট্টগ্রাম জেলা সার্কেল (পরীক্ষা কেন্দ্র বিআরটিসি ট্রাক ডিপো, বায়েজিদ, চট্টগ্রাম)-এর শিক্ষানবীশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন তাদের আগামী ৮ ফেব্রæয়ারি (আজ) হতে ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা ও বায়োমেট্রিক গ্রহণ করা হবে’।
এতে আরও বলা হয়,‘ ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা ও বায়োমেট্রিক গ্রহণের সুবিধার্থে প্রার্থীদেরকে তাদের লার্নারে উল্লেখিত কাগজপত্রাদিসহ স্ব-স্ব পরীক্ষা কেন্দ্রে সকাল ৯টার পরিবর্তে ৮টায় উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
এ বিষয়ে বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক শফিকুজ্জামান ভূঞা পূর্বদেশকে জানান, ‘বিআরটিএ’র অধিকাংশ কার্যক্রম এখন অনলাইনে। আগে পরীক্ষার্থীদের বা লাইসেন্সধারীদের বিআরটিএ অফিসে একাধিকবার আসতে হতো। কিন্তু এখন একবারই আসবেন। আগামী ৮ ফেব্রæয়ারি (আজ) থেকে নতুন কার্যক্রম শুরু হবে। বিআরটিএ চট্টগ্রামে লাইসেন্সপ্রার্থী ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা দিবেন এবং একইদিনে বায়োমেট্রিক দিয়ে চলে যাবেন। এতে গ্রাহকদের সেবার মান বাড়বে’।
কেউ যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় ফেল করে সেক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক পুনরায় দিতে হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বায়োমেট্রিক একবারের জন্যই নেয়া হবে। বারবার নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু যিনি ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় ফেল করবেন, তাকে পুনরায় পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে হবে। তবে তার আর বায়োমেট্রিক দিতে হবে না’।
প্রসঙ্গত, বিশ্ব ব্যাংক প্রস্তাবিত ‘রোড সেফটি প্রোগ্রামের’ পাইলট প্রকল্পের আওতায় ঘরে বসেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবে লাইসেন্স প্রার্থীরা’ এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৮০ কোটি টাকা। গত ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর বিআরটিএ’র সদর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনআরএসসি) ২৯তম সভায় এ সিদ্ধান্ত জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একইদিন শুরু হয় ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ঘরে বসেই আবেদন কার্যক্রম। আবেদনকারীকে বায়োমেট্রিকসহ পরীক্ষার জন্য একবার বিআরটিএতে আসতে হবে। এতে দালালের দৌরাত্ম্য কমবে বলেও আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস এবং সড়ক নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত সরকারি সংস্থাসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। প্রকল্পটিতে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর, বিআরটিএ, বাংলাদেশ পুলিশ এবং স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তর স্টেক হোল্ডার হিসেবে রয়েছে। প্রকল্পটি গত ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২০২৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।