আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ সাধনে সিয়ামের ভূমিকা

8

ড. মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী

রহমত বরকত মাগফিরাতের মাস রমজানুল মোবারক। এই মাস মহাসম্মানিত ও পবিত্র। রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলমান নারী-পুরুষের উপর রোজা রাখা ফরজ। ‘রামজুন’ শব্দের ধাতুগত অর্থ বসন্তের প্রথম বৃষ্টি। জমিন যেমন শ্যামলে শ্যামল আর নীলিমায় নীল হয়ে উঠে বসন্তের বর্ষণে, ঠিক তেমনি রমজানের রহমত বরকতে আত্মা পবিত্র হয়। মানুষ হয় ইনসানে কামিল।
রোজা শব্দটি ফারসী। আরবী প্রতিশব্দ সওম। বহুবচন সিয়াম। আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা, আরাম করা, বিশ্রাম লওয়া। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত সময় পর্যন্ত নিয়তসহকারে পানাহার, যৌন সম্ভোগ ও সকল অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকাকে রোজা বলে।
উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য রোজা নতুন বিধান নয়, যার অস্তিত্ব হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে সকল নবী-রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ধর্মে ছিল। দুনিয়ার সকল ধর্মমতে আত্মাকে শুদ্ধি ও বশে আনতে উপবাসব্রত পালন করার বিধান রয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, “হে ঈমানদারগণ ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।” (সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৩)।
সিয়ামের ইতিহাস দেখলে আমরা জানতে পারি হযরত আদম (আ.)-এর উপর চন্দ্রমাসের ‘আইয়্যামে বীয’ তথা ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রোজা ফরজ ছিল। হযরত নুহ (আ.)-এর ধর্মে সকল দিন রোজা রাখতে হতো। হযরত দাউদ (আ.)-এর ধর্মে একদিন পর পর রোজার বিধান ছিল। হযরত মুসা (আ.)-এর উপর ফেরাউনের কবল থেকে মুক্তির শুকরিয়া স্বরূপ ১০ মহরম রোজা ফরজ ছিল। হযরত ঈসা (আ.) আসমানী কিতাব ইঞ্জিল শরীফ লাভ করতে গিয়ে চল্লিশ দিনব্যাপী রোজা পালন করেন এবং তাঁর উম্মতগণও এহুকুম পালন করতেন। মহান আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত ৩০ রোজা ফরজ করেন মহানবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর। পৃথিবীতে মানুষ আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি। তাই মানুষের উপর আল্লাহ পাক ত্রিশ রোজা ফরজ করেছেন। ফেরেস্তাদের মধ্যে সৃষ্টিকুলের স্বভাবের অভাব থাকায় আল্লাহর প্রদত্ত খিলাফতের দায়িত্ব পাননি। কিন্তু জাগতিক গুণাবলী বেশি শক্তিশালী হলে ভারসাম্য লোপ পায়। মানুষ আল্লাহর খেলাফতের যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে। ভোগ বিলাসে পাশব প্রবৃত্তি অধিক মাত্রায় শক্তিশালী হয়ে উঠে। আল্লাহ পাক সিয়ামের বিধান দিয়েছেন যাতে পাশব প্রবৃত্তিকে দমন করে ‘তাওয়া’ অবলম্বনের মাধ্যমে ভারসাম্যতা বজায় রাখতে পারে।
বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক ঈমাম গাজ্জালী (রহ.) বলেছেন, “আল্লাহর গুণে গুণান্বিত করে তোলাই হচ্ছে সিয়ামের উদ্দেশ্য। আল্লাহর ক্ষুধা-তৃষ্ণা, ভোগ-বিলাস নেই, আল্লাহর বান্দা সিয়াম সাধনার মাধ্যমে কিছু সময়ের জন্য আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হয়ে তাঁর সাথে প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হতে সক্ষম হয়।”
পবিত্র মাস রমজানকে তাওরাত শরীফে ‘হাত্ব’ (পাপ ধ্বংকারী) ইঞ্জিল শরীফে ‘তাব্ব’ (পবিত্রকারী) যাবুর শরীফে ‘বরকত’ (নৈকট্য) হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
‘গুনিয়াতুত তালেবীন’ গ্রন্থে রমজান সম্পর্কিত আলোচনায় বর্ণনা আছে, ‘রমজান’ শব্দের পাঁচটি বর্ণে পঞ্চ সূ² ইঙ্গিত নিহিত রয়েছে। ‘রা’ দ্বারা ‘রেদওয়ানুল্লাহ’ আল্লাহর রেজামন্দি ও সন্তুষ্টি, ‘মিম’ দ্বারা ‘মাগফিরাতুল্লাহ’ বা আল্লাহর ক্ষমা প্রদর্শন, ‘দোয়াত’ দ্বারা ‘দিম্মাতুল্লাহ’ বা আল্লাহর জামিন হওয়া, ‘আলিফ’ দ্বারা ‘উলফতুল্লা’ বা আল্লাহর প্রেম ভালবাসা এবং ‘নুন’ দ্বারা আল্লাহর নুর বুঝিয়েছেন।
রমজানের রোজার মাধ্যমে মানুষের নফস পরিশুদ্ধ করে পরমাত্মার সাথে বন্ধন সুদৃঢ় করা যায়। মানুষের নফস মানুষকে আল্লাহর প্রেমের বন্ধন থেকে ছিন্ন করে নিজের দাস বানাতে চায়। নফস মানুষকে গোলাম করতে পারলে সে গোলাম দ্বারা যা ইচ্ছা তা করাতে পারে। তখন প্রভুর প্রেমের সম্পর্ক টিকে থাকে না। মানব জাতি ইহকাল ও পরকালে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে হলে নফসের দাসত্ব ছেড়ে আল্লাহর প্রেমের বন্ধন মজবুত করতে হবে।
ভোগ নয় আত্মসংযমের মধ্যদিয়ে শরীর ও নফসের চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করে রুহানী শক্তি অর্জন করা সিয়ামের মূল আদর্শ। দুনিয়ার প্রচুর মানুষ পশুর ন্যায় শারীরিক ও যৌন পিপাসা এবং প্রবৃত্তির তাড়নায় তাড়িত। শরীর হলো অশ্ব আর আত্মা হলো অশ্বরোহী। অশ্ব চলবে আরোহীর নির্দেশে, আরোহী অশ্বের নির্দেশে নয়। তাদের আত্মা এতো দুর্বর যে, শরীর রূপী আশ্বটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না বরং অশ্বই আত্মার উপর আরোহন করে তাকে পিষ্ট করে। আধ্যাত্মিক সাধক আউলিয়া কেরামগণ আত্মসংযমের মাধ্যমে শরীর এবং নফস নামক অশ্বকে বশে আনতে পারছে বলেই সকলের কাছে তারা অনুসরণীয়।
বর্ণিত আছে যে, মহান আল্লাহ পাক স্বীয় সত্তা থেকে নফসকে পৃথক করে জানতে চাইলেন, ‘আমি কে’ ? নফস জবাব দিলেন, ‘তুমি তুমি এবং আমি- আমি’। আল্লাহ পাক জবাব শুনে ক্ষুব্ধ হলেন এবং নফসকে সত্তর হাজার বছর আগুনে জ্বালিয়ে রাখলেন। আগুন থেকে পৃথক করে আবার জানতে চাইলেন, ‘আমি কে’? নফস বললেন, ‘তুমি-তুমি আর আমি-আমি’। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন উত্তর শুনে পুনরায় নফসকে সত্তর হাজার বছর বরফ চাপা দিয়ে রাখলেন। বরফ চাপা থেকে বের করে প্রশ্ন করলেন, ‘আমি কে’ ? নফস আবারও একই উত্তর দিলেন। আল্লাহ জাল্লে শানহু ক্ষুব্ধ হয়ে নফসকে সত্তর হাজার বছর অনাহারে রাখলেন। অতঃপর নফস খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে। আবারও আল্লাহ প্রশ্ন করলেন, ‘আমি কে’ ? নফস মহান আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের কাছে অনুগত হয়ে জবাব দিলেন, ‘তুমি আমার মহান প্রভু এবং তোমার আমি অনুগত দাস।’
আল্লাহ পাক উক্ত ঘটনা দ্বারা বান্দাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে, অনাহারে উপবাসে নফসকে বশে আনতে হবে। তাই প্রত্যেক স¤প্রদায়ের নিকট উপবাসব্রত বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু রোজার মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জন করতে সবাই পারে না। যারা আল্লাহর একান্ত আধ্যাত্মিক মহাপুরুষ তাঁরা রোজা পালনের মধ্যদিয়ে স্বীয় আধ্যাত্মিক শক্তির অগ্রগতি সাধন করেন।
রোজার সাধারণত তিনটি স্তর রয়েছে :
(১) সাধারণ মানুষের রোজা : যারা সোবেহ সাদেক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকে।
(২) বিশেষ মানুষের রোজা : যারা আহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার সাথে শরীরের সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে পাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।
(৩) বিশেষতম মানুষের রোজা : যারা নিজেদেরকে সকল বিষয় থেকে বিরত রেখে শুধু মাত্র আল্লাহ পাকের দিকে মনোনিবেশ করে এবং অজানা অব্যক্ত ভালবাসায় হৃদয় পুলকিত হয়ে আল্লাহর সাথে প্রেমের যোগসূত্র স্থাপন করে।
মানুষের কলবকে জাগ্রত করতে যেমন অলী আল্লাহ বা আল্লাহ বন্ধুর প্রয়োজন হয় তদ্রæপ রমজানের রোজা দ্বারা আল্লাহর সাথে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করতে আল্লাহর বিশেষতম মানুষ কামেল অলির সান্নিধ্য প্রয়োজন কামিল অলীর সান্নিধ্য প্রসঙ্গে বিশ্ব প্রেমিক মাওলানা জালালুদ্দিন রুমির মসনবী শরীফের একটি কবিতার পংক্তি উদ্ধৃতির লোভ সংবরণ করতে পারছিনা । তিনি বলেন,
“হারকে খাহাদ হাম নশিনি বা খোদা
গো নশিনদ বা হুজুরে আউলিয়া
এক জমানে ছোহবতে বা আউলিয়া
বেহতর আজ ছদ ছালে তা আতে বেরিয়া।
গর তু ছঙ্গে খারাই মরমর শোবি
চুঁ বছাহেব দেল রছি গও হার শোবি \”
অর্থাৎ- আল্লাহর সান্নিধ্যে বসতে চাইলে আউলিয়ার নিকট বস। আউলিয়া কেরামের এক মুহূর্তের সান্নিধ্য শত বছরের ইবাদতের ছেয়ে শ্রেষ্ঠ। তুমি কঠিন মরমর পাথর হলেও আউলিয়ার সান্নিধ্য পেলে মূল্যবান পাথরের অলঙ্কারে পরিণত হবে।
সৃষ্টি জগতের অপরাপর সকল জীবের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে হলে ইনসানে কামিল হতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত তার নফসের কুপ্রবৃত্তিগুলো উৎপাটন করতে পারবে না ততদিন সে ইনসানে কামিল হতে পারবে না। এ জন্য তার আত্মাশুদ্ধ করতে পরিশুদ্ধ মানুষের নিকট আত্মসমর্পণ করতে হবে।
মানুষের জীবনে সৎ ও অসৎ প্রবৃত্তির দ্বন্দ্ব চিরকালই থাকবে। মানুষকে ফেরেস্তার মত নির্মল চরিত্রের অধিকারী করেননি। আবার পশুর মত বিবেকহীন অধম জীব হিসেবেও আল্লাহ পাক সৃষ্টি করেননি। ইনসানে কামিলের পথ অনুসরণের মাধ্যমে মানুষ এই সৎ ও অসতের দ্বন্দ্বে জয়ী হয়ে আল্লাহর নিকটতম বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে।
ইসলাম ধর্মে যত ধরনের ইবাদত আছে, কোন ইবাদতকে আল্লাহ তাঁর জন্য বলে ঘোষণা দেননি, একমাত্র রোজাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “আস্সাওমু লী ওয়া’না আজজি বিহি” অর্থাৎ রোজা আমার জন্য আমিই এর প্রতিদানকারী।
এই হাদিসে কুদসীকে কোন কোন সম্মানিত মুহাদ্দিস “আনা আজিজি বিহি”র স্থলে “আনা উজ্জাবিহি” পড়েছেন। অর্থাৎ রোজার প্রতিদান আমি নিজেই। (সূত্র : তাফসির-ই-নঈমী)
এতে বুঝাযায় অন্যান্য ইবাদত মানুষের জন্য হলেও রোজা একমাত্র আল্লাহর জন্য এবং রোজার বিনিময়ে আল্লাহকে পাওয়া যায়। ইহজগত ও পরজগতের মালিককে পাওয়া গেলে মানুষের আর কোন কিছুর চাওয়া পাওয়াই থাকে না, সৃষ্টি জগতের সবকিছু তাঁর হয়ে যায়।
একবার সুলতান মাহমুদ গজনভী কিছু মূল্যবান মণিমুক্তা তাঁর চাকরদের সামনে নিক্ষেপ করে বললেন, “কুঁড়িয়ে নিন।” একথা বলে তিনি সামনের দিকে অগ্রসর হতে লাগলেন। কিছুদূর অতিক্রম করার পর ফিরে দেখলেন, আয়ায তাঁর পেছনে চলে আসছে। সুলতান আয়াযকে বললেন, ‘তোমার কি মণিমুক্তার দরকার নেই ?’ আয়ায বললো, ‘জাহাপনা ! যারা মণিমুক্তার পাগল তারা তা কুঁড়িয়ে নিয়েছে। আমিতো মুক্তার নই মুক্তার মালিককে চাই। রাজা আমার হলে রাজ্য আমার অধীনই থাকবে।’
আউলিয়া কেরামগণ আল্লাহর বন্ধু বলেই তাঁরা সৃষ্টিকর্তার নিকট ইবাদতের মাধ্যমে বেহেস্ত দোজখ কিছুই চায় না, বেহেস্ত দোজখের মালিককে চায়। মালিকের সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে সবকিছু তাঁদের অধীন করে নেয় । আধ্যাত্মিক মহিলা সাধক রাবেয়া বসরী একদিন এক হাতে প্রজ্বলিত প্রদীপ আরেক হাতে পানির পাত্র নিয়ে দৌড়ছেন। মানুষ জানতে চাইলেন, পানি আর আগুন নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন ? তিনি বললেন, যারা বেহেস্ত দোজখের মালিক (আল্লাহ) কে ভুলে গিয়ে বেহেস্তের লোভে এবং দোজখের ভয়ে ইবাদত করছে আমি তাদের দোজখে পানি ডেলে দেব এবং বেহেস্তে আগুন লাগিয়ে দেব।
রোজাকে বিশেষভাবে আল্লাহ পাকের সাথে সম্পর্কিত করার কারণ এই যে, প্রত্যেক ইবাদতে লোক দেখানোর একটা সম্ভাবনা থাকে কিন্তু সিয়ামের মধ্যে রিয়া বা লোক দেখানোর কোন সম্ভাবনা নেই। এটা হৃদয়ঘটিত ব্যাপার, হৃদয়ের মালিকই দেখেন। তাই এই ইবাদত আল্লাহর কাছে বেশী গ্রহণীয়।
পবিত্র ইসলামের বেশীভাগ কর্ম কোন না কোন আত্মাপ্রতিপালনকারী ঘটনাকে জীবিত রাখার জন্য নির্ধারিত হয়েছে। যেমন, সাফা ও মারওয়া সা’ঈ হযরত হাজেরা (আ.)’র স্মৃতিবহ। তিনি তাঁর সন্তান হযরত ইসমাঈল জবিহ উল্লাহ (আ.)-এর জন্য পানি খোঁজ করতে এ দু’টি পবর্ত সাতবার প্রদক্ষিণ করেছেন। আল্লাহর নিকট হযরত হাজেরা (আ.)’র এ কাজ পছন্দ হয়েছে। সুতরাং এ ‘সুন্নাতে হাজেরা’ (আ.) কে আল্লাহ জীবিত রাখতে হাজী সাহেবান ও ওমরাহ পালনকারীদের জন্য ‘সাফা’ ও ‘মারওয়া পাহাড় সা’ঈ করা ওয়াজিব করে দিয়েছেন। অনুরূপ প্রিয় নবী আক্বায়ে মাওলা তাজেদারে মদীনা হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ওহী নাজিলের পূর্বে প্রতিবছর নির্ধারিত মাসব্যাপী হেরা গুহায় গভীর ধ্যানে মগ্ন থাকতেন এবং রমজান মাসের দিনগুলোতে (তখন রোজা ফরজ হয়নি) দিনের বেলায় পানাহার থেকে বিরত থাকতেন, আর রাতে আল্লাহ পাকের জিকিরে মশগুল থাকতেন। আল্লাহ জালে শানহু মহানবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গুপ্ত রহস্য প্রকাশের সময়কে মুসলমানদের কাছে স্মরণীয় করে রাখতে রোজা ফরজ করেছেন; যাতে তাঁর হাবিবের সুন্নাতও স্থায়ী হয়।
আল্লাহ আমাদের সকলকে তাঁর প্রিয় হাবীব হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের আদর্শের অনুসারী হয়ে রমজানের রহমত বরকত ও নাজাতের কল্যাণ অর্জনের তৌফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : কলাম লেখক, রাজনীতিক