আজিজুর রহমান, একজন বাংলাদেশি কবি এবং গীতিকার। তিনি ১৯৭৯ সালে একুশে পদকলাভ করেন।
আজিজুর রহমান ১৯১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি তৎকালীন পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশ) কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর গ্রামে জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম বশির উদ্দিন প্রামানিক ও মাতার নাম সবুরুন নেছা। শিশুবয়সে তার পিতা মৃত্যুবরণ করার পর তার শিক্ষাজীবনের ইতি ঘটে। এ সময় তিনি স্থানীয় যাত্রা ও নাটকের দলে যোগদান করেন।
১৯৩৮ সাল থেকে আজিজুর রহমান তৎকালীন বিভিন্ন পত্রিকাতে তার লেখা কবিতা ও গান পাঠানো শুরু করেন। এসময় সওগাত, মোহাম্মদী, আজাদ, নবশক্তি, আনন্দবাজার, ভারতবর্ষ, বুলবুল, শনিবারের চিঠি পত্রিকাসমূহে নিয়মিতভাবে তার সাহিত্য বিষয়ক লেখা প্রকাশিত হত। কুষ্টিয়াতে তিনি একটি নাট্যদল গঠন করেন এবং এতে অভিনয়ও করেন। দলটি শিলাইদহের ঠাকুর বাড়িতে নাটক মঞ্চস্থ করত।
১৯৫৪ সালে আজিজুর রহমান ঢাকা বেতারে (বর্তমান বাংলাদেশ বেতার) নিজস্ব শিল্পী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬০ সালে আলাপনী শীর্ষক একটি কিশোর মাসিক পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত তিনি দৈনিক পয়গামের সাহিত্য বিভাগের সম্পাদক ছিলেন।
আজিজুর রহমান দুই হাজারের অধিক গান রচনা করেছেন। তার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-
* ভবের নাট্যশালায় মানুষ চেনা দায় রে, * কারো মনে তুমি দিও না আঘাত, সে আঘাত লাগে কাবার ঘরে, * আকাশের ঐ মিটি মিটি তারার সাথে কইবো কথা, নাই বা তুমি এলে, * পৃথিবীর এই পান্থশালায়, হায় পথ ভোলা কবি, * আমি রূপনগরের রাজকন্যা রূপের জাদু এনেছি, * বুঝি না মন যে দোলে বাঁশিরও সুরে, * দেখ ভেবে তুই মন, আপন চেয়ে পর ভালো, * পলাশ ঢাকা কোকিল ডাকা আমারই দেশ ভাই রে প্রভৃতি
গ্রন্থাবলী : * ডাইনোসরের রাজ্যে (১৯৬২) * জীবজন্তুর কথা (১৯৬২) * ছুটির দিনে (১৯৬৩) * এই দেশ এই মাটি (১৯৭০) * উপলক্ষের গান (১৯৭০) * তিনি প্রায় ৩০০-এর উপরে কবিতা রচনা করেছেন। তার মধ্যে নৈশনগরী, মহানগরী, সান্ধ্যশহর, ফেরিওয়ালা, ফুটপাত, তেরশপঞ্চাশ, সোয়ারীঘাটের সন্ধ্যা, বুড়িগঙ্গার তীরে, পহেলা আষাঢ়, ঢাকাই রজনী, মোয়াজ্জিন, পরানপিয়া, উল্লেখযোগ্য।
আজিজুর রহমান ১৯৩১ সালে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামের ফজিলাতুন নেছার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির ৩ ছেলে ৪ মেয়ে রয়েছে। ১৯৭৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আজিজুর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। জন্ম ১৮ জানুয়ারি ১৯১৭ হরিপুর, কুষ্টিয়ায়। সূত্র : উইকিপিডিয়া