আইসিইউ দ্বিগুণ হচ্ছে চমেক হাসপাতালের

6

এম এ হোসাইন

নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) শয্যা দ্বিগুণ হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের। আইসিইউ’র শয্যা ১৮ থেকে বেড়ে ৩৮ এ উন্নীত হতে যাচ্ছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় আইসোলেশন ওয়ার্ড ও আইসিইউ শয্যা বাড়ানোর কাজ চলতি বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ভৌত কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। আগামী জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হতে পারে নতুন আইসোলেশন ও আইসিইউ ইউনিটের।
সূত্র মতে, ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স ইমার্জেন্সি অ্যাসিস্টেন্ট প্রজেক্ট’ প্রকল্পের আওতায় চমেক হাসপাতালে ৫০ শয্যার ‘আইসোলেশন’ এবং ১০ শয্যার আইসিইউ করার নির্দেশনা ছিলো। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের ১৭টি হাসপাতাল এ প্রস্তাবনা পায়। ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর চমেক হাসপাতালে জায়গা বাছাই করার জন্য চিঠি দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগ-১ এ পাঠানো চিঠিতে পিসিআর ল্যাবসহ ৫০ শয্যার ‘আইসোলেশন’ এবং ১০ শয্যার আইসিইউ করার প্রস্তাব দেয়া হয়। এজন্য ৬ হাজার বর্গফুটের অধিক জায়গা নির্বাচনের নির্দেশনা ছিলো। পরে হাসপাতালের নিচে মনোরোগ বিভাগে ‘আইসোলেশন’ ওয়ার্ড করার জন্য জায়গা নির্বাচন করা হয়। চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝিতে মনোরোগ বিভাগকে দোতলায় স্থানান্তর করা হয়। পরে ১৯ মে থেকে সেখানে এডিবি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের ব্যয় সাড়ে তিন কোটি টাকা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পায় ২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার। প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অক্টোবরে কাজ শেষ হলে নভেম্বরে উদ্বোধনের কথা চিন্তা করছে গণপূর্ত বিভাগ। যদিও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি স্থাপনসহ সকল প্রস্তুতি শেষ করতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে মনে করছে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর প্রকল্পের যন্ত্রপাতি পাওয়ার উপরেই আইসিইউ শয্যার সংখ্যা বাড়নো-কমানোর চিন্তা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্পের পরিচালক ও চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী রাহুল গুহ বলেন, আমাদের প্রকল্প হচ্ছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট আইসোলেশন ইউনিট ও ১০ শয্যা বিশিষ্ট আইসিইউ ইউনিট। প্রকল্প ব্যয় ২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। চলতি বছরের এপ্রিলে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। আগামী অক্টোবরে কাজ শেষ হলে নভেম্বরে উদ্বোধন হবে। আমরা কাজ শেষ করার পর চমেক হাসপতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সুবিধামত সেটা ব্যবহার করবে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তায় চমেক হাসপাতালে ৫০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড ও ১০ শয্যার ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের প্রস্তাবনা থাকলেও পুরোটাই আইসিইউ করার পক্ষে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে ২০ শয্যার আইসিইউ এবং পরবর্তীতে পুরোটাই আইসিইউ করার পক্ষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে ২০ শয্যার আইসিইউ করা হলেও হাসপাতালের আইসিইউ শয্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যাবে। কারণ হাসপাতালে বর্তমানে আইসিইউ শয্যা আছে মাত্র ১৮টি।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, এডিবির অর্থায়নে ৫০ শয্যার আইসোলেশন এবং ১০ শয্যার আইসিইউ-এর কাজ শেষ হতে আরো মাসদুয়েক লাঘবে। সিভিল ওয়ার্ক শেষ হয়েছে। অন্যান্য কাজ এখনো বাকি। সব কাজ শেষ হলে যন্ত্রপাতি আসবে। নভেম্বর বা ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চলে যাবে। আগামী বছরের শুরুতে আমরা এটি চালু করতে পারবো আশা করি।
তিনি বলেন, আপাতত ২০ শয্যার আইসিইউ করার চিন্তা আছে। পরবর্তিতে আইসিইউ শয্যা বাড়ানো হবে। আমাদের এখন মাত্র ১৮টি আইসিইউ শয্যা আছে। তবে সবকিছু নির্ভর করবে যন্ত্রপাতি পাওয়ার উপর। যন্ত্রপাতি পাওয়া গেলে তখন আইসিইউ সংখ্যা কতটুকু বাড়ানো যাবে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।