ছাত্রলীগ : বাংলাদেশেরই প্রতিবিম্ব

257

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ইতিহাস জাতির মুক্তির স্বপ্ন সাধনা এবং সংগ্রামকে বাস্তবে রূপদানের ইতিহাস। এদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’। শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতি মূলনীতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক দিক নির্দেশনা মোতাবেক স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে সুশৃঙ্খল কর্মী বাহিনীর সমন্বয়ে আদর্শভিক্তিক একটি সংগঠন গড়ে তোলা ও আদর্শিক পরিচর্যা অব্যাহত রাখা। দীর্ঘ সময়ের শিক্ষার সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে একটি সহজলভ্য, বৈজ্ঞানিক, গণমুখী, বৃত্তিমূলক, কারিগরি, মাতৃভাষা ভিক্তিক সর্বজনীন শিক্ষানীতি প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়নের সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়া লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে প্রতিষ্টিত সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের প্রানের সংগঠনের নাম ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’। দ্বিজাতি তত্তে¡র ভিত্তিতে দেশ বিভাজনের পর বাঙ্গালীরা নতুন ভাবে শাসন শোষনের যাতাকলে পড়ে। পুর্ব-পাকিস্তান আর পশ্চিম-পাকিস্তানের মধ্যে ছিল ভাষা, সংস্কৃতি ও বিস্তর মনস্তাত্মিক ফারাক। দেশ বিভাজনের এ প্রক্রিয়াকে এই বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন ‘এক শকুনির হাত থেকে অন্য শকুনির হাত বদল মাত্র।’ তাই নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তানের সরকার প্রথমে আঘাত হানে আমাদের মায়ের ভাষা বাংলার উপর। বঙ্গবন্ধু তখনই অনুভব করলেন শোষণের কালো দাঁত ভাঙ্গার একমাত্র হাতিয়ার হল এদেশের ছাত্রসমাজ। তাই তৎকালিন পাকিস্তান সরকার কতৃক চাপিয়ে দেয়া উর্দু ভাষার বিরুদ্ধে ইস্পাত কঠিন প্রতিরোধ তৈরির জন্য ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি তৎকালিন প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা সম্পন্ন ছাত্রনেতা বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠা করেন ‘পাকিস্তান ছাত্রলীগ’। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে ওই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে আনুষ্ঠানিকভাবে ছাত্রলীগের যাত্রা শুরু। প্রতিষ্ঠা লগ্নে সংগঠনটির প্রথম আহবায়ক ছিলেন নাঈমউদ্দিন আহমেদ। ছাত্রলীগ সাংগঠনিক ভাবে কার্যক্রম শুরু করলে এর সভাপতি মনোনিত হন দবিরুল ইসলাম ও সাধারন সম্পাদক মনোনিত হন খালেক নেওয়াজ খান। সেই থেকে ছাত্রলীগ এগিয়ে চলছে দুর্বার গতিতে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রয়েছে এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। চাইলেই কেউ ছাত্রলীগের নাম বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস লিখতে পারবে না। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাঙালির অধিকার আদায়ের এক সংগঠনের নাম ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন -পাকিস্তানি ভাবধারায়, সাম্প্রদায়িকতাকে চাতুরীর মাধ্যমে জিইয়ে রেখে উর্দূকে জনগণের ভাষায় পরিনত করার ক‚টকৌশলে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়। এতে ফেটে পড়ে ছাত্রসমাজ ও ছাত্রলীগের নেতৃত্বে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। সে আন্দোলনের ব্যাপকতায় আইয়ুব খান সে শিক্ষা নীতি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল। ১৯৬৬ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাঙালিদের মুক্তির সনদ ছয় দফার পক্ষে ব্যাপক প্রচারনা চালায় ছাত্রলীগ। ১৯৬৮ সালের ১৯ জুন পাকিস্তানি সামরিক জান্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামী করে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা আগরতলা মামলা দায়ের ও মামলার বিচার শুরু করলে ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর মুক্তি আন্দেলন শুরু করে। তাদের কন্ঠে ধ্বনিত হতে থাকে ‘জেলের তালা ভাঙবো শেখ মুজিবকে আনবো’। এই আন্দোলনে আসাদ, মতিউর, জার্জেন্ট জহুরুল হক, রুস্তম, মকবুল, ড. শামসুজ্জোহা, আনোয়ারসহ আরো আনেকের রক্ত ঝরেছে। তবু পাকিস্তানী সামরিক জান্তা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দমাতে পারেনি। ৬৯’র গণ-অভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন এবং ১৯৭১-এ আমাদের মহান মুক্তি সংগ্রামে ছাত্রলীগের অবদান বাংলার ইতিহাসের সাথে স্বর্নালী অক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে। ৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থানই সর্ব প্রথম পাক শাসকদের হাড়ে কাপুনী ধরিয়েছিল। সে গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিল ছাত্রলীগ। আর ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে সাড়ে সতেরো হাজারেরও বেশি ছাত্রলীগ নেতাকর্মী প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে। এত প্রাণ বিসর্জন, ত্যাগ তিতিক্ষা আর কোন সংগঠনের নেই। মৃত্যুকে নিশ্চিত জেনেই সেদিন তারা মায়ের সম্মান রক্ষা করতে, দেশকে রক্ষা করতে সর্বোপরি স্বাধীনতার জন্যে যুদ্ধে গিয়েছিল ছাত্রলীগের কর্মীরা। তারা ছিল বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় মহাতারকা। পরবর্তিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও এই ধারাকে অব্যাহত রাখতে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির হাতে প্রান দিয়েছে ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতাকর্মী।
১৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৮৩ সাল, শাহবাগ মোড়। বিশাল বিশাল মিছিল নিয়ে জমতে থাকে ছাত্ররা। ‘ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন ছাত্রদের গণ জমায়েতের নেতৃত্বে থাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সরকারের কাছে ৩টি দাবি- ১) গণ বিরোধী শিক্ষা নীতি প্রত্যাহার। ২) আটক ছাত্রদের মুক্তি ও দমন নীতি বন্ধ। ৩) গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধার। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। জাফর, দীপালি সাহা, জয়নাল, মোজাম্মেল ও আইয়ুব -পুলিশের গুলিতে সঙ্গে সঙ্গে নিহত হন। পরের বছর একই দিনে, বিগত বছরের ঘটনার প্রতিবাদের ছাত্র জমায়েত হয়। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। ছাত্ররা মিছিল করার সময়, সামরিক শাসক এরশাদের পুলিশ শান্তিপূর্ণ মিছিলে ট্রাক চাপায় আরো দুই ছাত্র, সেলিম ও দেলোয়ার নিহত হন। এই হল; এদেশের শিক্ষা সংগ্রামে নেতৃত্ব ও রক্ত দেয়া ছাত্রলীগের ইতিহাস। আর আজকের দিনে যারা কথায় কথায় ছাত্রলীগের সমালোচনা আর ভুল ধরতে ব্যস্ত তাদের অনেকেরই এই ইতিহাস হয়ত অজানা। সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে নব্বইয়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, জামায়াত-বিএনপি জোট সরকারের দমন নির্যাতনের বিরুদ্ধে সদা-সর্বদা মাঠে সোচ্চার ছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এক/এগারোর সেনা সমর্থিত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে গণতন্ত্র যখন কারারুদ্ধ তখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সমগ্র শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মিরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে এদেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধার করে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি, বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যার বিচারের দাবি নিয়ে রাজপথে ছিল ছাত্রলীগ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে শাহবাগ আন্দোলনের অগ্রভাগে নেতৃত্ব দেয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অনেক বাধা বিপত্তি, অপপ্রচার আর ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হতে হয়েছে ছাত্রলীগকে। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথা বলে ছাত্রলীগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি দল জাসদ গঠন করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাসদ নামক বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে পরিচালিত করার অপচেষ্টা চালায়। একশ্রেনী আছেন যারা, ছাত্রলীগের স্বর্নালী ইতিহাস দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে মিথ্যাচার ও অপপ্রচারে লিপ্ত। অন্যদিকে আরেকটা শ্রেনী আছে, যাদের চোখে ছাত্রলীগের ইতিবাচক কিছুই পড়ে না কেবল নেতিবাচক ছাড়া। তবে কিছু সমালোচনা আছে, যেটা খুবই স্বাভাবিক পর্যায়ে। কারন ছাত্রলীগ বাংলাদেশের বৃহত্তর ছাত্র সংগঠন। এখানে সবাই আদর্শের চর্চা করে একথা বলা যাবে না। একথাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ছাত্রলীগের নামে বা ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে অনেকেই নানান ধরনের অপরাধ করেনা। এমনকি ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারীরাও জায়গা করে নিয়েছে বলে অভিযোগ আছে। এই সংগঠনের পদ পদবী ব্যবহার করে টেন্ডারবাজিরও অভিযোগ আছে। অভিযোগ এলেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সাথে সাথে একশ্যান নিয়েছে। বিন্দু মাত্র ছাড়া কাউকেই দেয়া হয়নি। সম্প্রতি ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ অভিবাবক বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা পরিচালিত শুদ্ধি অভিযানে ছাত্রলীগের যাদের নামে অভিযোগ উঠেছে তাদের অব্যহতি দেয়া হয়েছে। সেটা কাউকে বলতে হয়নি বা কারো পরামর্শের প্রয়োজন পড়েনি। দল সেটা নিজ তাগিদেই করেছে। কিন্তু ঢালাও ভাবে ছাত্রলীগকে বা গোটা সংগঠনকে দোষারোপ করা হয় যা অত্যান্ত অন্যায় ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ২০১২ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের গুটিকয়েক বিপথগামী নেতাকর্মী পুরান ঢাকায় কুপিয়ে হত্যা করে দর্জি দোকানের কর্মচারী বিশ্বজিৎ দাসকে। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচারের রায়ে অভিযুক্ত ২১ ছাত্রলীগ নামধারী নেতাকর্মীর মধ্যে আটজন মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছে। ছাত্রলীগের নামে কোন ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডে যেই লিপ্ত হোক না কেন, আজ পর্যন্ত কেউই রেহায় পাইনি। যেটা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠন গুলোর মধ্যে দেখা যায়নি। উল্টো দেখা গিয়েছে অপরাধী ছাত্রলীগ নেতা অন্যদলে গিয়ে আশ্রয় পশ্রয় পেয়ছে। ইতিহাস ভুলে যায়নি সফিউল আলম প্রধানদের। কুখ্যাত সেভেন মার্ডারের পর ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার করে তাকে মৃত্যুদণ্ড সাজা প্রদান করে হলেও ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে নিহত করার পর তার এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি। বরং জিয়া সরকার আমলে তাকে বিএনপিতে যোগদানের শর্তে ক্ষমা ঘোষণা করে মুক্তি দেওয়া হয়।
এখানে আরেকটি ঘটনা উল্ল্যেখযোগ্য; ২০০২ সালের ৮ জুন। চলছে বিশ্বকাপের খেলা। খেলা দেখার জন্য স্বেচ্ছায় ছুটি নিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। বেলা পৌনে একটার দিকে বুয়েটের বিশাল অঙ্কের টেন্ডারকে কেন্দ্র করে মোকাম্মেল হায়াত খান মুকির নেতৃত্বে ছাত্রদল বুয়েটের একটা সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে গোলাগুলি শুরু হয় ঢাবির এসএম হলের আরেক সন্ত্রাসী টগর গ্রুপের সঙ্গে। অবিরাম গুলিবর্ষণের মধ্যে পড়ে আহসান উল্লাহ হলের সামনে সাবেকুন্নাহার সনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ওই দিন রাতেও খুনিরা অবস্থান করছিল বুয়েটের রশীদ হলে। রাতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী মিছিল করে গিয়ে রশীদ হল ঘেরাও করে ফেলে। সেখানে মঞ্চস্থ হয় আরেক নাটকের। পুলিশ এসে আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে খুনিদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। আর সরকারের সহায়তায় মুকিত পালিয়ে যায় রাতের অন্ধকারে। যেখানে বিএনপি আমলে সংঘটিত ছাত্রদলের দুই গ্রুপের গোলা গুলিতে বুয়েটের মেধাবি ছাত্রী সনি হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাদের বাঁচিয়ে দেয়া হয়েছে, সেখানে সম্প্রতি বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে কিছু অতি উৎসাহী ছাত্রলীগ নেতা অভিযুক্ত হলে তাদের তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা সহ যাবতীয় কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সারাদেশের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। অতচ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন শুরুর দিন থেকেই বুয়েটের মেধাবী ছাত্র দীপ তার মেধা ও শ্রম দিয়ে আন্দোলনকে বেগবান করে আসছিলো। তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হলেও সেদিন ছাত্রলীগ ছাড়া কেউ প্রতিবাদ করেনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা করে ম্যানহোলে ফেলে দিলেও কারো মায়া হয়নি। এক্ষেত্রে সুশীল সমাজের একচোখা নীতি পরিহার করতে হবে। কেবল মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজে খুঁজে ছাত্রলীগের দোষ ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে। অপরাধী মাত্রই অপরাধী। অপরাধীকে কোন দলের তকমা লাগিয়ে দিলে বরং অপরাধ পশ্রয় পায়।
বাংলা, বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেরণা ও পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে উপমহাদেশের বৃহত্তর ছাত্র সংগঠনে পরিণত হওয়া বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রুপকল্প ২০২১ এবং ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ, মেধা ও শ্রম প্রদান করে যাচ্ছে। দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক ও বিশিষ্টজনের দ্বারা ছাত্র রাজনীতির গুণগত মান বৃদ্ধি, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শের আলোকে ছাত্র জীবন গড়া, নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক দক্ষতা বাড়াতে ছাত্রলীগ প্রতিটি ইউনিটে ওরিয়েন্টেশন কোর্স শুরু করার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সেটা নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী এক পদক্ষেপ। ২০২০ সাল মুজিববর্ষ পালন করবে বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির জনকের জন্ম শতবর্ষে পা দিয়েছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষে পা দেওয়া বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুকে আরও ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে ছাত্রলীগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা থাকা দরকার। এদেশের যোগ্য ও মেধাবী ছাত্রদেরকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সোনালি ইতিহাস জেনে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারন করে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে হবে। এতে করে রাজনীতিতে মেধাবীরা যেমন স্থান করে নিবে, সাথে সাথে ছাত্ররাজনীতি ক্লেদ আর জঞ্জাল মুক্ত হবে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আগামী দিনের পথ চলা সত্য, সুন্দর ও সার্থক হোক এটাই প্রত্যাশা করি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। জয় হোক ছাত্রলীগের।
লেখক : কলামিস্ট, সংগঠক