সমাজ সংস্কারক শাহানশাহ্ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)

185

মোঃ গোলাম রসুল

১৯২৮ সাল। এই সালের ২৫ ডিসেম্বর মাইজভাণ্ডার শরীফে শাহানশাহ্ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা হযরত সৈয়দ দেলাওর হোসাইন মাইজভাণ্ডারী (ক.) একজন বড় আউলিয়া ছিলেন। তিনি মাইজভাণ্ডারী দর্শনকে সাংগঠনিক রূপ দিয়েছিলেন এবং “বেলায়তে মোত্লাকা” নামক আধ্যাত্মিক গ্রন্থ রচনা করেছিলেন এবং তাঁর দাদা হযরত গাউসুল আযম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.) মাইজভাণ্ডারী দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিশ্ববিখ্যাত আউলিয়া ছিলেন। শাহানশাহ্ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাÐারী (ক.) এর নানা হযরত সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবা ভাণ্ডারী (ক.) প্রখ্যাত আউলিয়া ছিলেন। তাই জন্মগতভাবেই শাহানশাহ্ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) মাদারজাত ও মজ্জুব ওলী ছিলেন।
মহান আল্লাহ তাঁর সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তাফা (দ.) কে সকল সৃষ্টির রহমত স্বরূপ রেসালত দান করেছিলেন। রেসালতের যুগ শেষ হবার পর বেলায়তের যুগ শুরু হয়। তাই অনাদিকাল হতেই আউলিয়াগণ বিশ্বমানবকে হেদায়েতের বাণী শুনিয়ে আসছেন এবং সমাজ সংস্কারক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। শাহানশাহ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) এর ব্যতিক্রম নন। আমি তাঁকে কাছে থেকে যেভাবে দেখেছি, সেভাবেই তাঁর বিশালত্ব বর্ণনা করব। আমি বিশ্বাস করি যেদিন তিনি মাইজভাণ্ডার শরীফে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেদিন সেখানকার মানুষ, গাছপালা, পশু-পাখি ও অন্যান্য সৃষ্টিকুল নিশ্চয়ই আনন্দে হাসছিলেন। কারণ এই বিশ্বওলী মানবজাতির কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করেছিলেন এবং সমাজের প্রতি স্তরে শৃঙ্খলা আনয়নের কাজে ব্যাপৃত ছিলেন। তিনি কঠোর সাধনায় রত ছিলেন। এমন কি বিনাজুরি খালের পানিতে দাঁড়িয়ে “আল্লাহু আল্লাহু” যিকিরে মগ্ন থাকতেন। তাঁর চারপাশে মাছ কিলবিল করতো এবং মাছেরাও তাঁর সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করত। এভাবেই দিনের পর দিন, রাতের পর রাত তিনি আল্লাহকে স্মরণ করতেন।
১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম নিউ মার্কেটে একটি ঘড়ির দোকানে তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়। তখন আমি তাঁকে পায়ে ধরে সালাম করি, তিনি তখন বললেন, “We don’t see time, we watch moments” অর্থাৎ এক মুহূর্তের জন্যেও তিনি মহান আল্লাহকে ভুলে যান নাই।
১৯৮৬ সালে চৌমুহনিতে জনাব আকমল খান সাহেবের বাড়িতে আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, “বাবাজান, আপনার দর্শন কি?” তিনি উত্তরে বলেছিলেন, “আল্লাহ্ আল্লাহ্ কর, নামাজ পড় এবং হালাল খাও”। এই কাজগুলি যে সমাজে অনুশীলন ও চর্চা করা হবে সে সমাজে অবশ্যই উন্নতি হবে এবং সমাজের সংস্কার হিসাবে বাবাজানের এই কালাম কত যে গুরুত্বপূর্ণ তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
মহান আল্লাহ, কুরআন শরীফে ৮৩ বার নামাজ কায়েম করার কথা উল্লেখ করেছেন। হাদিস শরীফে উল্লেখ আছে- হালাল রুজি না খেলে ইবাদত কবুল হয়না। তাহলে, আমাদের নিকট বোধগম্য হওয়া দরকার যে, এই বাণীর সঙ্গে ইসলাম ধর্মের মূল তত্তে¡র সাযুজ্য চিরদিনের জন্য গাঁথা রয়েছে।
১৯৮৬ সনে বাবাজান, জনাব আলী নবী চৌধুরী নির্বাহী প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অফিসার কলোনীর বাসায় গিয়েছিলেন। আলী নবী আমাকে সেখানে নিয়ে দোয়া নিতে বললেন। আমি সন্ধ্যা বেলায় গিয়ে শাহানশাহ্ বাবাজানের সাক্ষাত চাইলাম। কিন্তু বাবাজান বললেন, “হযরত আমানত শাহ্ হুজুরের মাজারে গিয়ে জিয়ারত করে আসুন।” আমি তাই করলাম। তখন বাবাজান আমাকে সাক্ষাতদান করে দোয়া করলেন। এর দ্বারা সেখানে উপস্থিত সমাজের মানুষকে বুঝিয়ে দিলেন যে মাযার জিয়ারত করা ইবাদত এবং মোটেই শিরক নয়। তাছাড়া আমাকেও মাজারে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করলেন এবং তার আগে আমাকে সাক্ষাতদান করেন নাই। সমাজকে ইবাদতমুখী করার লক্ষ্যেই তিনি উপস্থিত সকলের সামনেই আমাকে হযরত আমানত শাহ্ (র.) এর দরবারে প্রেরণ করেন। এখানে আরো উল্লেখ্য যে ১৯৮৮ সালের অক্টোবর মাসে তাঁর ওফাতের আগে তিনি হযরত আমানত শাহ্ (র.) এর দরবারে গিয়েছিলেন এবং আমিও তাঁর সাথে গিয়েছিলাম। দেখলাম তিনি গাড়ির বামপাশের দরজা খুলে ওলীদের ভাষায় হযরত আমানত শাহ্ (র.) এর সঙ্গে যোগাযোগ করলেন।
শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) বলতেন, “আমাকে বুঝতে হলে কোরআন দেখ।” মহান আল্লাহ সূরা বাকারায় উল্লেখ করেন, “আলিফ-লাম-মীম। এ সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই। এই কিতাব আল্লাহ সচেতনদের পথ প্রদর্শক। আল্লাহ-সচেতনরা গায়েবে বিশ্বাস করে, নামাজ কায়েম করে, প্রাপ্ত রিজিক থেকে অন্যের জন্য ব্যয় করে। আর [হে নবী (দ.)] আপনার ও আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি যা নাজিল হয়েছে তা তারা বিশ্বাস করে। সেই সাথে বিশ্বাস করে আখেরাতে। তারাই তাদের প্রতিপালকের নির্দেশিত সঠিক পথের অনুসারী এবং তারাই সফলকাম।” “আর যারা সত্যকে অস্বীকার করেছে, [হে নবী (দ.)] তাদের আপনি যতই সতর্ক করেন না কেন, তারা কখনো বিশ্বাস করবে না। আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন, কানকে করেছেন বধির, আর চোখ ঢেকে দিয়েছেন পর্দায়। ওদের জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন শাস্তি।” (আয়াত ১-৭, সূরা বাকারা)।
উক্ত আয়াত দ্বারা আল্লাহ সমাজ বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান ও নিউরো সায়েন্সের চিরায়ত সত্য প্রকাশ করেছেন। কুসংস্কার, ভ্রান্তবিশ্বাস ও অজ্ঞতা/অবিদ্যা দ্বারা প্রভাবিত হলে, মানুষের মস্তিষ্কের কাঠামো বদলে যায় এবং সমাজ বিভ্রান্তির আস্তরণে ঢেকে যায়। কর্মফলে কঠিন শাস্তি আসে, আবার সৎকর্মের বিশ্বাসে পুরস্কারও মেলে।
সমাজ সংস্কারের মূল হাতিয়ার হলো কুরআন। সূরা আলাক-এ আল্লাহ্ বলেন, “পড়–ন! আপনার সৃষ্টিকর্তা প্রভুর নামে। যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন নিষিক্ত ডিম্ব থেকে। পড়–ন! আপনার প্রতিপালক মহান দয়ালু। তিনি মানুষকে জ্ঞান দিয়েছেন কলমের। আর মানুষকে শিখিয়েছেন যা সে জানত না।” অর্থাৎ শুরুতেই কুরআন সমাজের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে পড়তে ও জানতে। কুরআন অজ্ঞতাকে অভিহিত করেছে মহাপাপ রূপে। মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে জ্ঞানের পথে, মুক্তবুদ্ধির পথে। এমনকি বিশ্বাসের স্তরে পৌঁছার জন্যেও মানুষের সহজাত বিচারবুদ্ধির প্রয়োগকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে কুরআন। বৈষয়িক ও বিচারবুদ্ধির প্রয়োগকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে কুরআন। বৈষয়িক ও আত্মিক জীবনকেও একই সূত্রে গেঁথেছে কুরআন। সুস্পষ্টভাবেই বলেছে, আল্লাহর বিধান অনুসরণ করো। দুনিয়া ও আখেরাতে তুমি সম্মানিত হবে।
কুরআনের মাধ্যমে পিতৃপুরুষের হাজার হাজার বছরের সংস্কার ও ধর্মান্ধতার বৃত্ত ভেঙে তারা লাভ করে মুক্ত বিশ্বাস ও সঠিক জীবনদৃষ্টি। এরপর নিজের মুক্তির জন্যে, মানুষের মুক্তির জন্যে কোনো ত্যাগ স্বীকারেই পিছপা হয়নি তারা। দলীয়, গোত্রীয় ও উপজাতীয় হানাহানিতে লিপ্ত বিক্ষিপ্ত সম্প্রদায়গুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিণত হয় এক দুর্দমনীয় জাতিসত্তায়। কুরআনের মানবিকতা ও মুক্তিবুদ্ধির বাণী পৌঁছাতে থাকে বিভিন্নভাবে। ইউরোপে সূচনা হয় রেনেসাঁ বা মুক্তবুদ্ধির জাগরণ। নতুনভাবে শুরু হয় জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চা। এগোতে থাকে বিজ্ঞান। তাই নিঃসংশয়ে বলা যায়, কুরআন যে মানবিকতা, জ্ঞানচর্চা ও মুক্তবুদ্ধির শিক্ষা দিয়েছে তারই ফল্গুধারায় লালিত হয়ে বিশ্ব প্রবেশ করেছে বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে।
তবে আন্তরিকতা নিয়ে এর মর্মবাণী অনুধাবন করতে চাইল যেকোন সাধারণ মানুষের পক্ষেই তা সম্ভব। কারণ ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের হেদায়েতের জন্যেই কুরআন নাযিল হয়েছে, তাই কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ না হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহতে সমর্পিত একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আত্মনিমগ্ন হয়ে ধ্যানের স্তরে তাঁর কালামের মর্মবাণী উপলব্ধি করে মানুষ বিস্মিত, চমকিত হয়েছে।
বাবাজান শাহানশাহ্ সৈয়দ জিয়াউল হক (ক.) বলতেন “আমার একটা প্রশাসন আছে। আমি সমগ্র বিশ্ব পরিচালনা করতে পারি”। ফটিকছড়ির নুরুল আলম সাহেব রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং ভোটে দাঁড়ানোর জন্য বাবাজানের নিকট দোয়া চাইতে গিয়েছিলেন। বাবাজান বললেন, “জনকল্যাণ করতে পারবেন?” অর্থাৎ জনসেবা না করে সমাজ বদলানো যায় না। তাই বাজানের প্রশাসন (আধ্যাত্মিক ও বাহ্যিক) ছিল জনকল্যাণমুখী। তিনি বিশাল ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন এবং শিশু থেকে বড় সবাইকে “আপনি” সম্বোধন করতেন। একবার এক রিকশাওলাকে তিনি ৫০০ (পাঁচশত) টাকা দিয়ে দিলেন; অথচ ভাড়া ছিল মাত্র ২০ টাকা। আলী নবী চৌধুরী মনে করে দিলেও, তিনি বললেন, “মামু সাব ওনার টাকার দরকার আছে।”
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো, অর্থনীতি সুদৃঢ়করণ, নিরাপত্তা জোরদার, জাতিগঠন, সহিংসতারোধ ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য তিনি সকলকেই সদুপদেশ দিতেন। বর্তমান সরকার এসব বিষয়ে এগিয়ে আছেন বলে আমেরিকা-ভিত্তিক গবেষণা সংগঠন “আই আর আই” বিগত ২০১৫ মে ও জুন মাসের সমীক্ষায় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ১৯৮৬ সালেই বাবাজান এসব বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দেয়ার জন্য ইঙ্গিত করতেন।
বাবাজান ছিলেন আধ্যাত্মিক গুরু ও মানবতার প্রতীক। একবার কোন এক ঝড়ের রাতে তিনি আমার অফিস সুপার জনাব যাকারিয়া সাহেবের বাসায় গেলেন। তারপর গাড়ি নিয়ে ফৌজদারহাট সী-বীচে গেলেন এবং সঙ্গী-সাথীদের সমুদ্রের পাড়ে অপেক্ষা করতে বললেন। তারপর নিজে আস্তে আস্তে পানিতে নেমে ডুবে গেলেন। সবাই তখন চিন্তিত ছিলেন। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পর তিনি পানি থেকে উঠে আসলেন এবং বললেন, “ঢেউয়ের তালে তালে হযরত খিজির (আ.) এর সঙ্গে জিকির করে আসলাম।” দেখা গেল তাঁর লুঙ্গি-গেঞ্জি একেবারে শুকনা। মহান আল্লাহ্র সান্নিধ্য ও দোয়ার বরকতেই এ ধরনের ঘটনা কারামত হিসাবে দেখা দেয়।
তিনি ছিলেন দানশীল এবং মানব কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ। একবার হারুয়ালছড়ি যাবার পথে মাটিয়ালদের ৬০,০০০/- (ষাট হাজার) টাকা দান করলেন এবং বললেন, “তাদের প্রয়োজন বেশি।” দান সর্বোত্তম মানবীয় গুণ।
রাসূল (দ.) বলেছেন, “তোমার কাছে থাকা একটি খেজুরের একাংশ হলেও দান কর”। আল কুরআন, বেদ-পুরান, বাইবেল, ত্রিপিটক, গীতা, তাওরাত, জবুর সকল ধর্মগ্রন্থেই দানের গুরুত্ব বিশেষভাবে বর্ণিত হয়েছে মর্মে বুজুর্গানে দিন বলে থাকেন। সূরা বাকারায় মহান আল্লাহ বলেন, “সৎ দান এমন একটি শস্যবীজ, যাতে উৎপন্ন হয় ৭টি শীষ, আর প্রতিটি শীষে থাকে শত শস্যদানা – (আয়াত- ২৬১)।”
দানের শাশ্বত শিক্ষা হচ্ছে নিম্নরূপ:
১. দান উপার্জন ও আয়কে শুদ্ধ করে। ২. দান পাপ মোচন ও অন্তরের তৃপ্তি বৃদ্ধি করে। ৩. দান বালা-মুসিবত ও রোগ ব্যাধি দূর করে। ৪. দান দারিদ্র্য-বিমোচনে ও সম্পদে বরকত দান করে। ৫. দান প্রাচুর্য ও সমৃদ্ধির সোপান। ৬. দান ঈমানের শর্ত। দান হচ্ছে আল্লাহ-বিশ্বাসী ও ঈমানদার হওয়ার এবং আল কুরআন থেকে হেদায়েত লাভের অন্যতম শর্ত। আল্লাহ বলেন, “নিঃসন্দেহে কুরআন বিশ্বাসীদের পথপ্রদর্শক। বিশ্বাসী তারাই যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে, সালাত কায়েম করে এবং প্রদত্ত রিজিক বা উপার্জন থেকে দান করে – (সূরা বাকারা ২-৩)।”
শাহানশাহ্ সৈয়দ জিয়াউল হক (ক.) ছিলেন ফানা ফিল্লাহ, বাকা বিল্লাহ। তিনি সর্বশ্রেণীর মানুষকে সাধক হিসেবে সতর্ক করেছেন। স্রষ্টার সৃষ্টি রহস্য আবিষ্কার করাই ছিলো তাঁর জীবনের মূল উপাখ্যান। তাঁর জীবনী আলোচনা করা আমার মত নগণ্য ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। স্বীয় স্বার্থের জন্য কোন কোন মানুষ টেরা চোখে দেখেছেন। তাই মাওলানা রুমী (র.) তাঁর মসনবী শরীফের ১ম খণ্ড উল্লেখ করেছেন,
“চূঁ গরম আমদ হুনার পূশীদাহ্ শোদ
ছদ হেজাবায দেল বা সূয়ে দীদাহ শোদ।”
অর্থাৎ “স্বীয় স্বার্থ উদ্ধার করা যখন উদ্দেশ্য হয়, তখন (কাজের) সৌন্দর্য বিলুপ্ত হয়। অন্তর হতে শত শত পর্দা চোখের সম্মুখে এসে পড়ে।”

লেখক : সুফিতাত্ত্বিক গবেষক, প্রাবন্ধিক