বিদ্যুৎ বিভাগের কথা আর কাজে মিল থাকা জরুরি

104

দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রতিবেদনে প্রকাশ, চট্টগ্রাম মহানগরীতে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বিষয়টা পত্রিকার খবর থেকে জানতে হয় না। কারণ পত্রিকার রিপোর্টার থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ জানে সম্প্রতি কিভাবে নগরবাসীকে বিদ্যুৎ বিভাগ হয়রানি করছে। বিদ্যুৎ নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের বক্তব্যে আমরা জানি বর্তমানে বিদ্যুতের সক্ষমতার যুগ চলছে। বিদ্যুৎ বিভাগের বক্তব্য হলো রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য সাময়িক বন্ধ রাখা হচ্ছে বিদ্যুৎ প্রবাহ। সাময়িক বন্ধ একাধারে বার ঘণ্টা কিংবা কখনো কখনো চব্বিশ ঘণ্টা পর্যন্ত গড়াতে দেখা যায়। একবার গেলে লোডশেডিংয়ের চেয়েও বেশি সময় অতিবাহিত হতে দেখা যায়। বিদ্যুৎ বিভাগের বক্তব্য, কর্মকান্ড ইত্যাদিতে ভোক্তারা সন্তুষ্ট নেই, থাকার কথাও না। কেননা বিদ্যুৎ বিভাগের হয়রানিতে জনগণ অতিষ্ঠ। মহানগরীর চেয়ে শহরতলী ও গ্রামে বিদ্যুতের আরো বেহাল অবস্থা। বিশেষ করে, বাঁশখালী উপজেলায় পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ভোক্তাদের রীতিমতো নির্যাতন করছে। ওই উপজেলায় বিদ্যুৎ একবার গেলে কমপক্ষে বার চৌদ্দ ঘণ্টা তার আর দেখা মিলে না।
সামান্য বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া ইত্যাদিতে বিদ্যুৎ বন্ধ হলে তা আর ফিরে আসে না ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কোন কোন গ্রাহক কিছু মাছ-মাংস, তরিতরকারি ফ্রিজে সংরক্ষণ করে থাকে। বিদ্যুতের কারণে তা আর রাখা যায় না। আমরা জানি না আসলে বিদ্যুতের কি অবস্থা সারাদেশে। বিদ্যুৎ বিভাগের বক্তব্যের সাথে বাস্তব অবস্থার মিল খুঁজে পাচ্ছে না বিদ্যুতের গ্রাহকেরা। গ্রামের অধিকাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। পিডিবির চেয়ে চড়া হারে তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিল আদায় করতে দেখা যায়। অথচ ভোক্তা সাধারণ শান্তিতে না থেকেও বিদ্যুতের অতিরিক্ত বিল দিনের পর দিন পরিশোধ করে যাচ্ছে। অবস্থা দৃশ্যে মনে হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগের বক্তব্য আর বাস্তবের গরমিল। তা ছাড়া পল্লীবিদ্যুৎ এবং পিডিবি উভয়ের কর্মচারীদের আচরণ একই রকম। গ্রাহক হয়রানিতে উভয়ই সমানে সমান। কিন্তু জনগণ শীত ছাড়া সব ঋতুতেই বিদ্যুতের দুর্ভোগ থেকে রেহাই পায় না। বিদ্যুতের উৎপাদন এবং বন্টন হিসাবে যথেষ্ট শুভঙ্করের ফাঁকি আছে বলে মনে করে সাধারণ গ্রাহক। নয় তো বিদ্যুৎ নিয়ে কি শহরে, কি গ্রামে এতো ভোগান্তি কেন ? বিদ্যুৎ বিভাগের কাজের গতি খুবই মন্তর। বিদ্যুতের মতো প্রয়োজনীয় সেক্টরে কর্মকর্তা কর্মচারীদের ঢিমেতাল খাটে না। বিদ্যুৎ বিভাগকে তাদের কাজেকর্মে আরো দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। জনগণ মাসে মাসে বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করেও বিদ্যুৎ নিয়ে ভোগান্তিতে থাকবে তা মেনে নেয়া যায় না। প্রকৃতপক্ষে বিদ্যুৎ বিভাগের কাজে আন্তরিকতা বাড়ালে জনগণ বিদ্যুতের বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পাবে এমন মন্তব্য সর্বস্তরের গ্রাহকের।