45

জাজের সিনেমায় ফিরতে চান নায়ক বাপ্পী?
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী। ২০১২ সালে জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘ভালোবাসার রং’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন তিনি। এরপর প্রতিষ্ঠানটির ‘অনেক দামে কেনা’, ‘অন্যরকম ভালোবাসা’, ‘হানিমুন’, ‘দবির সাহেবের সংসার’সহ বেশকিছু সিনেমায় অভিনয় করেন। এ প্রতিষ্ঠানের হাত ধরেই ঢালিউডে প্রতিষ্ঠিত নায়ক হন বাপ্পী। এরপরে অন্যান্য প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানেও কাজের সুযোগ পান।
২০১৭ সালে যৌথ প্রযোজনার সঠিক নিয়ম-নীতি নিয়ে রাজপথে নেমে আন্দোলন করেছেন চলচ্চিত্র ১৮টি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এই আন্দোলনে নেমেছিলেন বাপ্পী চৌধুরীও। আন্দোলনের পর থেকে জাজের কোনো সিনেমায় বাপ্পীকে দেখা যায়নি।


সেই সময় জাজ মল্টিমিডিয়ার কর্তধার আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে স্লোগানও দিয়েছিলেন। প্রায় দুই বছর পর ভুল স্বীকার করে প্রযোজক আব্দুল আজিজের কাছে ক্ষমা চাইলেন বাপ্পী।
১৮ জানুয়ারি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা একটি স্ট্যাটাসে বাপ্পী চৌধুরী লেখেন, ‘দেশে সিনেমা নির্মাণ কমে এসেছে প্রায় শূন্যের কোঠায়। প্রযোজকরা এখন ভয়ে ইনভেস্ট করছে না। এফডিসিতে নাকি সিনেমা বানানোর পরিবেশ নেই, সেখানে এখন একে অপরের পিছনে লেগে থাকে এমন মন্তব্য তাদের। অথচ ২০১৭ সালে রোজার ঈদে নবাব ও বস ২ সিনেমা মুক্তির আগে চলচ্চিত্র পরিবার থেকে আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনে আমিও যোগ দিয়েছিলাম।
বলা হয়েছিল, যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথ প্রতারণা বন্ধ হলে, আমাদের দেশের শিল্পীদের কাজ বৃদ্ধি পাবে, ঘুরে দাঁড়াবে আমাদের চলচ্চিত্র, সমৃদ্ধ হবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র। দেশের সিনেমার উন্নয়ন হবে এ কথা ভেবে যোগ দিয়েছিলাম আন্দোলনে, বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম যৌথ প্রযোজনার বিরুদ্ধে। এই জন্য যে প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে আমি আজ বাপ্পি চৌধুরী যে মানুষটির জন্য আমি আজ নায়ক সেই আজিজ ভাইয়ের সাথে ঝগড়াও করেছি। যে মানুষটা আমার চলচ্চিত্রের সবচেয়ে কাছের ছিল তার থেকে
দূরে সরে এলাম। কিন্তু এটা করে কী পেলাম? সিনেমার অবস্থা কী উন্নত হয়েছে? সিনেমা নির্মাণ কী বেড়েছে?
নতুন বছর শুরু হলো আমদানি করা বিদেশি ছবি মুক্তি দিয়ে। যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ছবি হলেও তো আমাদের দেশের অনেক কলাকুশলী ও নায়ক নায়িকা কাজের সুযোগ পেতো। কিন্তু এখন তো আমদানি করে নিয়মিত ছবি মুক্তি দেয়া হচ্ছে। যে ছবিগুলোতে আমাদের কেউ কাজের সুযোগ পাচ্ছে না। হিতে তো বিপরীতই হলো। অথচ দেশের সিনেমার উন্নয়ন হোক এটা আজিজ ভাই সবসময় চেয়েছেন। সিনেমা ডিজিটালাইজেশনের পথ বদলে দিয়েছেন। সরি আজিজ ভাই আপনাকে ভুল বুঝার জন্য again I am Sorry..’
বর্তমানে চলচ্চিত্রের এই নাজুক অবস্থায় বাপ্পীর হাতে বেশি কাজও নেই। হঠাৎ জাজের কাছে ক্ষমা চাওয়ায় তাকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। জাজের ঘরে ফেরার জন্য বাপ্পীর ক্ষমা প্রার্থনা, এমনটাই মনে করছেন সিনেমা পাড়ার লোকজন।
জাজের ঘরে ফিরতেই কি ক্ষমা চাইলেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে বাপ্পী চৌধুরী বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই আজিজ ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয় কিন্তু কথা হয় না। এটা নিজের কাছে খারাপ লাগে। এই উপলব্ধি থেকেই এই স্ট্যাটাস দেয়া। আমি কাউকে আঘাত করার জন্য এই স্ট্যাটাস দেইনি। আমি আমার জায়গা থেকে আব্দুল আজিজ ভাইকে স্যরি বলেছি এতটুকুই।’ জাজের নতুন কোনো সিনেমায় দেখা যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বাপ্পি বলেন, ‘এটা এখনই বলা যাচ্ছে না। এটা সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।’
বাপ্পীর ফেসবুক পোস্ট প্রসঙ্গে আব্দুল আজিজ বলেন, ‘বাপ্পীকে চলচ্চিত্রে আমিই নিয়ে এসেছি। ওর প্রতি আমার রাগ বা দুঃখ নেই। সে নিজের ভুল যেহেতু বুঝতে পেরেছে তাই আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। বাপ্পী এটা উপলব্ধি করতে পেরেছে যে তার হাতে কাজ নেই।’