৯০ ভাগ কারখানায় ছুটি কার্যকর : বিজিএমইএ

49

নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের এই সময়ে নির্দেশনা মেনে ৯০ ভাগ পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ। পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠনটি বলছে, যেসব কারখানা চালু আছে সেগুলো চিকিৎসা সামগ্রী তৈরি ও জরুরি বিদেশি ক্রয়াদেশ বাস্তবায়নের কাজে যুক্ত রয়েছে।
শনিবার রাতে বিজিএমইএর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কর্মকর্তা মনসুর খালেদ বলেন, এমনিতে কারখানাগুলোতে ক্রয়াদেশ নেই। তারপরেও সরকার ও বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষের পরামর্শে ২৭ তারিখেই ৮০ শতাংশ কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আজকে কিছু কারখানা চালু হলেও কিছু কারখানায় শ্রমিকদের কাজের প্রতি অনীহার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোথাও জোর করে কাজ করানো হচ্ছে বলে শুনিনি বা অভিযোগ পাইনি।
রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর অধীনে ৩২০০ পোশাক কারখানা রয়েছে। এই হিসাবের বাইরেও অনেক কারখানা রয়েছে যারা এসব কারখানার হয়ে পোশাক তৈরি করে দিয়ে থাকে। তালিকার বাইরে থাকা কারখানাগুলোর বিষয়ে সরাসরি কোনো সিদ্ধান্ত দেয় না বিজিএমইএ।
এদিন সকালে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরের কাছে সিরাজ গার্মেন্টস নামের এমনই একটি কারখানা চালু হওয়ার পর শ্রমিকরা ছুটির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় সেখানে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
মিরপুর মডেল থানার ওসি মোস্তাজিজুর রহমান জানান, ওই কারখানায় বিদেশি ক্রেতার কিছু অর্ডার সাপ্লাইয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে ছিল। মালিক চেয়েছিলেন তা শেষ করে কারখানা ছুটি দিতে। কিন্তু শ্রমিকদের অনীহার কারণে শনিবারই ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
মনসুর খালেদ বলেন, কিছু কারখানায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য সরকারি ডাক্তারদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী নির্মাণ কাজ চলছে। মাস্কের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অনেকে আবার মাস্ক বানানো শুরু করেছেন। এসব কারখানা চালু রয়েছে।
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপি যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তাতে আক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী পোশাক খাতও। দেশের প্রধান রপ্তানি লক্ষ্য ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলো এখন কার্যত অবরুদ্ধ। এই পরিস্থিতির কারণে পোশাকের নতুন ক্রয়াদেশ দীর্ঘ দিন ধরে থেমে গেছে। আগেই যেসব ক্রয়াদেশ এসেছিল তাও একের পর এক বাতিল বা স্থগিত করে দিচ্ছেন ক্রেতারা।
বিজিএমইএ’র সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ১ হাজার ৮টি কারখানায় প্রায় তিন বিলিয়ন (২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন) ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল কিংবা স্থগিত করা হয়েছে। ফলে এসব কারখানার ২০ লাখের বেশি শ্রমিক কর্মহীনতার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
মনসুর খালেদ বলেন, একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে অনেক কারখানা এমনিতেই কর্মহীন হয়ে পড়বে। সরকারি কোনো আদেশ না থাকলেও এসব কারখানা ছুটি হয়ে যাবে। পরিস্থিতির উন্নতি না ঘটলে অনেক কারখানায় লে-অফ ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।
শনিবার বন্ধ থাকলেও রবিবার কাজ চালু করার কথা জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত অনুপম হোশিয়ারি নামের একটি কারখানা। প্রায় আড়াই শতাধিক শ্রমিক এই কারখানায় কর্মরত আছেন। এই কারখানার কয়েকজন শ্রমিক জানান, কারখানায় একটি শিপমেন্টের পণ্য প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে তাই কাজ শেষ না করে কারখানা বন্ধ দেওয়া হয়নি।
‘এখানে কর্মপরিবেশ খুবই ভালো। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই আমরা কাজ করছি। পাশাপাশি এখানে একটা লাইনে মাস্ক তৈরি হচ্ছে যা এখনকার পরিস্থিতিতে খুবই প্রয়োজনীয় একটি পণ্য’, বলেন তাদের একজন। খবর বিডিনিউজের