৮ বছরে পূর্বদেশ

36

বৃহত্তর চট্টগ্রামের সব শ্রেণির পাঠকের আস্থা-ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে আরও একটি বছর পেরিয়ে গেল দৈনিক পূর্বদেশ। এক এক করে সাতটি বছর পেরিয়ে আজ ৮ বছরে পদার্পণ করেছে পাঠকপ্রিয় এ পত্রিকাটি। পূর্বদেশ এর এ পথচলায়-এগিয়ে চলার বছরগুলোতে যাদের ভালোবাসা ও সহযোগিতা আমাদের কাছে প্রেরণা হিসেবে ছিল-আজকের দিনে সেই সম্মানিত শুভানুধ্যায়ীদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আমরা চট্টগ্রামকে বুকে ধারণ করি, এ অঞ্চলের সব সম্প্রদায়ের মানুষের আচার-সংস্কৃতিকে আমরা লালন করি। সে কারণে পূর্বদেশ সব ধরনের সংবাদই গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে। একই সাথে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনায় উজ্জীবিত সব কার্যক্রমকেই আমরা সবার উপরে স্থান দিয়ে থাকি, রাষ্ট্রীয় স্বার্থ এবং দেশের সব সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি রক্ষার ব্যাপারে আমরা সংবেদনশীল।
বস্তুনিষ্ঠ খবর, সঠিক তথ্য আর সত্য প্রকাশের দৃপ্ত শপথে ১২.১২.১২-তে আমাদের পথচলা শুরু হয়েছিল। বিগত সময়গুলো আমরা সেই লক্ষ্যে অবিচল থেকে এ অঞ্চল এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কথা বলেছিÑসব সত্য ও সুন্দরকে তুলে ধরেছি, অনিয়ম-অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি দৃঢ়ভাবেই। আমরা সেই পথেই এগিয়ে চলছি। আমাদের এ দৃঢ়তা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।
সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যেমন বিপ্লব ঘটছে তেমনি মানুষের রুচিবোধ-চাহিদাও বদলে যাচ্ছে। মানুষ এখন যে কোনো সেবা ও পণ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রথমেই সেটির মান যাচাই করছে। মানসম্মত কি-না তা দেখেই মানুষ সেবা গ্রহণ করছে। সংবাদপত্রও মানুষের আত্মিক চাহিদার সেবা। এ কারণে মানুষ এখন পত্রিকাটি হাতে নেওয়ার আগে বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে থাকে। এক. পত্রিকাটির সংবাদ উপস্থাপন পরিচ্ছন্ন কি-না। দুই. পত্রিকাটির সংবাদে বৈচিত্র্য আছে কি-না। তিন. প্রকাশিত সংবাদগুলোর সত্যতা বা বিশ্বাসযোগ্যতা কতটুকু। পূর্বদেশ এই তিন ধরনের চাহিদাকেই গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এ কারণেই পত্রিকাটি এখন জনপ্রিয়তায় সবাইকে ছাড়িয়ে-এমনটি আমরা দাবি করতে পারি।
অনলাইন গণমাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আবির্ভাবের কারণে বর্তমান সময়ে প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য সত্যিকারের একটি চ্যালেঞ্জ সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। এখন আকাশে-বাতাসে নানা খবর উড়ে বেড়ায়। নানা ধরনের ভুল আর বিভ্রান্তির এই সময়ে খবরের বস্তুনিষ্ঠতা নিশ্চিত করার ব্যাপারটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রিন্ট মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের। কেননা, অনলাইন গণমাধ্যমের সংবাদ প্রত্যাহারের সুযোগ থাকলেও প্রিন্ট মিডিয়ায় সে সুযোগ নেই। সে কারণে প্রকাশের আগে তথ্যগুলো সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার বিষয়টি এখন প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের কাছে চ্যালেঞ্জ। আমরা সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে, সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা রক্ষায় সদা-সর্বদা সচেষ্ট।
সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সংবাদপত্রকে বিবেচনা করা হয়। সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে তাই পূর্বদেশ সমাজ ও রাষ্ট্রের ইতিবাচক দৃঙ্গিভঙ্গিরই প্রতিফলন ঘটাতে চায়। পূর্বদেশ আঞ্চলিক পত্রিকা হিসেবে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকে।
এ বছরে, আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে আমরা প্রিয় নগরী চট্টগ্রাম এবং বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের স্বার্থে, দেশ ও মানুষের পক্ষে নিষ্ঠার সাথে আরও বেশি কাজ করতে চাই।
প্রিয় পাঠক, আপনাদের সুচিন্তিত মতামত ও সুপরামর্শ আমাদের কাম্য। এ পথে এগিয়ে চলার শক্তি আপনারাই। আপনাদের ভালোবাসা, পাশে থাকা পূর্বদেশকে আরও সমৃদ্ধ করবে। সবার প্রতি শুভেচ্ছা ও বিনম্র শ্রদ্ধা।
মুজিবুর রহমান : সম্পাদক, পূর্বদেশ