৭৫ পরবর্তী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছিলো

39

 


বিজয় দিবসে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় ও সংগঠনের উদ্যোগে অলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচির বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে গত ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা স্মৃতি সৌধ, শহীদ মিনার ও স্মৃতি সৌধ ‘স্মরণ’সহ সকল গুরুত্বপূর্ণ ভবন আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। ওই রাত ১২.০১ মিনিটে বিউগল বাজিয়ে বিজয় দিবসের সূচনা লগ্নকে স্বাগত জানানো হয়। ১৬ ডিসেম্বর ফজরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল মসজিদে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের স্ব স্ব উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮ টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্যে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। রে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার, শিক্ষক সমিতি, অনুষদ সমূহের ডিনবৃন্দ, হলসমূহের প্রভোস্টবৃন্দ, সভাপতি-পরিচালক ফোরাম, অফিসার সমিতি, চ.বি. ক্লাব (ক্যাম্পাস), চ.বি. মহিলা সংসদ, সমন্বয় কর্মকর্তা বিএনসিসি, চ.বি. ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়ন, সাংবাদিক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ। শেষে বিজয় র‌্যালির আয়োজন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধু চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী এবং সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার।
উপাচার্য তাঁর ভাষণে বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত গণমানুষের মুক্তির দূত এবং বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা। এ সত্যকে কখনো লুকিয়ে রাখা যায় না। তিনি বলেন, ৭৫ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলতে ষড়যন্ত্রকারীরা নতুন প্রজন্মের কাছে যে বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপনের মহাযজ্ঞ শুরু করেছিল, তারা তাতে সফল হয়নি, বরং আজ দেশের ১৬ কোটি মানুষের কাছে সত্য উন্মোচিত হয়েছে।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চবি শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি ও চবি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. রাশেদ-উন-নবী, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এ এফ এম আওরঙ্গজেব, সিনেট সদস্য প্রফেসর এ বি এম আবু নোমান, সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. মহীবুল আজিজ, সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বশির আহাম্মদ, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমান, অফিসার সমিতির সাধারণ সম্পাদক জনাব মো. শাহ আলম, চ.বি. ক্লাব (ক্যাম্পাস)-এর সাধারণ সম্পাদক ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, চবি কমচারী সমিতির সভাপতি জনাব মো. আনোয়ার হোসেন এবং কর্মচারী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি জনাব আলী হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তথ্য) দিবাকর বড়ুয়া।
বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা : বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা মহানগর শাখার উদ্যোগে লাভলেনস্থ ন্যাশনাল সরকারি প্রাইমারি স্কুলে গত ১৬ ডিসেম্বর শিক্ষার্থীদের মাঝে সংগঠনের আহব্বায়ক মো. শাহাদাতুল ইসলাম বাপ্পির সভাপতিত্বে ও সিনিয়র সদস্য রাহুল দত্তের সঞ্চালনায় শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী, প্রধান বক্তা ছিলেন ন্যাশনাল সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বদরুন্নেছা, বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম আহব্বায়ক শাহাদাত হোসেন রনি,মীর আহমদ খোকন। এসময় উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম বাবু, জুয়েল রানা, নবজিত দত্ত, অনির্বাণ ভঞ্জ, প্রিয়ম বিশ্বাস, সাদমান, রবিউল ইসলাম তুহিন, রুবেল দত্ত প্রমুখ।
পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি : বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করেছে পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। ১৬ ডিসেম্বর, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সকাল সাড়ে ৬ টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ৪৮তম বিজয় দিবস উদ্যাপনের কর্মসূচির সূচনা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরল আনোয়ার এর নেতৃত্বে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ চট্টগ্রাম শহীদ মিনারের মূল বেদিতে ফুল দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার মফজল আহম্মেদ, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, প্রক্টর, বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিসহ অন্যান্য শিক্ষক, অতিথি, কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ।
সাতবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় : বিজয় দিবসে বিজয় র‌্যালি ও আলোচনা সভা করেছে সাতবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দিনের শুরুতে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি খাইরুল জামান হোসেলের নেতৃত্বে র‌্যালিতে অংশ নেন দু’শতাধিক শিক্ষার্থী। র‌্যালিটি সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা প্রদক্ষিণ করে। পরে সকাল ১১টায় বিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভা। প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ব্যাংকার খাইরুল জামান সোহেল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক পূর্বদেশের স্টাফ রির্পোটার এম এ হোসাইন, উত্তর জাফরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারেছা খানম। আলোচনায় অংশ নেন বিদ্যালয়ের সরকারী শিক্ষক রহিমা বেগম, হাসমত আরা বেগম, রুনা আকতার, এম এ হাসেম, তাজনীন সুমী, মাহফুজুল হক রোমেল, রানু আরা আকতার ও কাজী তাসনিমা হক। পরে মুক্তিযুদ্ধের কবিতা পাঠ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক রানু আরা আকতার।
প্রত্যাশা একাডেমি : প্রত্যাশা একাডেমিক ও প্রোফেশনাল কেয়ারের উদ্যোগে চকবাজারস্থ কার্যালয়ে বিজয় দিবস উদ্যাপন ও আলোচনা সভা অনষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মো. আবদুর রহিমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইয়্যেদ গোলাম হায়দার মিন্টু। প্রত্যাশার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ আরিফুল হক তায়েফ অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নাজমুল হাসান এবং আরিফুল ইসলাম। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নজরুল ইসলাম, কামাল হোসেন, ফাহমিদা নুর ফারজানা প্রমুখ। মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত করা হয়।