৬ আসামি কারাগারে

55

পটিয়ার এক সন্তানের জননী গৃহবধূ জুবাইর মোস্তফা চুমকী (২২) হত্যা মামলায় ৬ আসামিকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করে আসামি পক্ষ।
বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. মোহাম্মদ ফোরকান জানান, আদালত শুনানি শেষে ৬ আসামির সকলকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। আসামিদের মধ্যে নিহতের শ্বাশুড়ি ও ননদও রয়েছেন।
আসামিরা হলেন শ্বাশুড়ি হোসনে আরা বেগম (৪৫), ননদ জেরিন আক্তার (১৮), মোহাম্মদ মুছা (৫০), মোহাম্মদ এয়াকুব (৪০), আবদুল ছমদ (৩৮) ও মনিকা বেগম (৩৫)। হত্যা মামলা দায়েরের পর থেকে গৃহবধূর স্বামী খোরশেদ আলম জুয়েল পলাতক রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৪ নভেম্বর স্বামীর ঘর থেকে গৃহবধূ চুমকীর লাশ উদ্ধার করে পটিয়া থানা পুলিশ। সে সময় স্বামীর পরিবার ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করে বলে তথ্য দেয়। পরে চুমকীর পিতা পটিয়া চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে তা এক দিনের মধ্যে আদালতকে অবগত করার নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে পটিয়া থানা পুলিশ হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহতের ২ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে সামাজিকভাবে চুমকীর সাথে কুসুমপুরা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডস্থ বিনানিহারা কদল ফকিরের বাড়ির বাসিন্দা জাফর আহমদের ছেলে মো. খোরশেদ আলম জুয়েলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকসহ নানা বিষয়ে গৃহবধূকে নির্যাতন করা হতো। তবে ওই গৃহবধূর শ্বাশুড়ির সাথে মামলার ৫ নম্বর আসামি মোহাম্মদ এয়াকুবের পরকীয়ার ঘটনা নিয়ে জানাজানিকে কেন্দ্র করে গৃহবধূর উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। এরপর তাকে পিটিয়ে খুন করা হয়।
মামলার বাদি গৃহবধূর পিতা মোহাম্মদ মোস্তফা জানান, মূলত আমার মেয়ের শ্বাশুরির পরকীয়ার ঘটনা আমার মেয়ে চুমকী দেখে ফেলায় তা ধামা চাপা দিতে পরিকল্পিতভাবে চুমকীকে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে রান্না ঘরে চুমকীকে বেদমভাবে মারধর করা হয়। এ কারণে তার শরীরে পা, পিঠে, হাতে মারাত্মক ক্ষত হয়। ক্ষতস্থানের এসব ছবি মোবাইলে ধারণ করে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, রান্না ঘরে পিটিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতেই ফ্যানের সাথে তার কন্যাকে ঝুলিয়ে দেয়ার পর পুলিশকে সংবাদ দেয়া হয়। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। কিন্তু পুলিশ ওই ঘটনায় হত্যা মামলা নিতে অনীহা প্রকাশ করে। এ কারণে আদালতে মামলা দায়ের করা হলে আদালত তা হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করে আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেন।
বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. মোহাম্মদ ফোরকান জানান, ওই মামলায় আসামিরা উচ্চ আদালতের আদেশে জামিনে ছিলেন। আদালতের বেঁধে দেয়া মেয়াদ শেষে গতকাল সোমবার পটিয়া চৌফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির হলে আদালতের বিচারক বিশ্বেম্বর সিংহ তাদের কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।