৬৫ বই প্রকাশ করেছে বলাকা

254

দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেনের ‘অধিকার-সংগ্রামের বহ্নিশিখা শেখ হাসিনা’ গন্থসহ মোট ৬৫টি বই প্রকাশ করেছে বলাকা প্রকাশন, চট্টগ্রাম। নগরের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম মাঠে শুরু হওয়া অমর একুশে বইমেলায় ৫ ও ৬ নম্বর স্টল নিয়ে বসেছে বলাকা প্রকাশন। এবারের প্রকাশিত নতুন বইয়ের পাশপাশি কয়েকশ বইয়ের সমাহার প্রকাশনাটির স্টলে। যার কারণে মেলায় সাহিত্যপ্রেমী পাঠকের ভিড় আছে এ প্রকাশনার স্টলে।
বলাকা প্রকাশনের স্বত্ত¡াধিকারী ও সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লেখক-গবেষক জামাল উদ্দিন বলেন, মেলায় বলাকা প্রকাশন থেকে এবার মোট ৬৫টি বই প্রকাশ হয়েছে। এবার সম্মিলিত আয়োজনে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি স্টলে মানুষের আনাগোনা রয়েছে। শুরুতেই প্রতিটি স্টলে ভালো বই বিক্রি হচ্ছে। সাহিত্যপ্রেমীদের পদচারণায় বইমেলা মুখর হয়ে উঠেছে। সামনে আরো ভালো সাড়া মিলবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকার বইমেলা আজকের অবস্থানে একদিনে আসেনি। আগামীতে আমরাও ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। তবে আশার কথা, ঢাকার বইমেলার চেয়ে চট্টগ্রামের বইমেলায় বিক্রি ভালো হচ্ছে।
১৯৯৮ সালে প্রকাশনার জগতে হাতেখড়ি বলাকা প্রকাশনের। সুস্থধারার, ভালো মানের সাহিত্যচর্চার প্ল্যাটফরম তৈরি করতে সবসময় কাজ করেছে প্রকাশনাটি। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস রচনায় এ প্রকাশনের রয়েছে অনন্য অবদান। সচেতন পাঠক, লেখক তাই ভিড় করেন বলাকা প্রকাশনের স্টলের সামনে। খোঁজ-খবর নিচ্ছেন কোন লেখকের কোন বই এবার বাজারে এসেছে। ভিড়ের মধ্যে পাঠক-দর্শনার্থীদের নানান প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন স্টলে নিয়োজিত কর্মীরা।
কথা হলে বলাকা প্রকাশনের স্টলের কর্মী রেবা বড়ুয়া বলেন, পাঠক-দর্শনার্থীদের দারুণ আগ্রহ আছে। স্টলে এসে একেকজন একেক বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন। কেউ নতুন বইয়ের খোঁজ নিচ্ছেন, আবার কেউ পুরাতন বই চাচ্ছেন। পাঠকের আগ্রহ অনুযায়ী আমরা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। নতুন বইয়ের প্রতি সবার আগ্রহ একটু বেশি। পাঠকরা দেখছেন, বিক্রিও হচ্ছে ভালো।
বলাকা প্রকাশন থেকে এবার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, অনুপম সেন রচিত ‘অধিকার-সংগ্রামের বহ্নিশিখা শেখ হাসিনা’, চৌধুরী জহুরুল হক রচনাসমগ্র, জামাল উদ্দিন রচিত চট্টগ্রামের লোকসাহিত্য, পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস, চট্টগ্রামের পÐিতবিহার বিশ্ববিদ্যালয়ও বৌদ্ধ সভ্যতা, মোগল সাম্রাজ্যের বিলুপ্ত অধ্যায় দো’হাজারী, শামসুল আরেফীনের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ও স্বাধীনতা ঘোষণা, কালুরঘাট প্রতিরোধ যুদ্ধ ও অন্যান্য, ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল আলম রচিত বন্দর মুজিব, শংকর প্রসাদ দে রচিত বিশ্ববাণিজ্যে আঞ্চলিকতা, এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান রচিত গণমাধ্যম ও কোর্ট রিপোর্টিং বিষয়ক আইন, নাজিমুদ্দীন শ্যামল রচিত ফিল্মওয়ালা, কমরুদ্দিন আহমেদ রচিত বিলবোর্ডে শব্দনূপুর, সত্যব্রত বড়ুয়া রচিত গাধা কাহিনী, স্বপন কুমার বৈদ্য রচিত বেলা শেষে, মনির আহমদ রচিত চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার কবিতা আঁর বাড়ীয়ান হন্ডে, মেঘের ঘনঘটা, প্রজ্ঞা আহম্মদ জ্যোতি রচিত আমাদের এই সময় এবং মুড়ি গাছ, হারুন হাফিজ রচিত সমুদ্রের ডাক, ফরিদা আক্তারের এখানেই গল্প শেষ, কামরুন নাহার ঝর্ণার মেঘমালা, এমদাদুল হকের শেষকৃত্যের বায়না, অমর কান্তি নাথ সম্মাননা গ্রন্থ, প্রজন্ম প্রত্যয় বঙ্গবন্ধু, মিনহাজুন্নেসা ছোট মনির সারাবেলা, করিম আবদুল্লাহ রচিত উলুখাগড়ার চোখে একাত্তর, সেলিম রেজার কবি ও কবিতার পড়শি, সূর্যমুখী ফিনিক্স ও মোছলেম উদ্দিন আহমেদের খ্যাতিমানদের যেমন দেখেছি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সহায়তায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ১৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার আয়োজন করেছে। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১১০টি প্রকাশকের স্টল রয়েছে। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা এবং ছুটিরদিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

মেলায় চট্টগ্রামের ১১
সাংবাদিকের ২১ বই

রাহুল দাশ নয়ন
এদিক-সেদিক পড়ে থাকা খবরের পেছনে ছুটতেই সাংবাদিকদের দিন নাই হয়ে যায়। অনুসন্ধান, ফিচার কতরকমের নিউজের পেছনেই দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করতে হয়। এতসব ব্যস্ততাকে পেছনে ঠেলে প্রতিবারের মতো এবারও চট্টগ্রামের ১১ সাংবাদিক গল্প, কবিতা, উপন্যাস, গবেষণা, প্রবন্ধ, জীবনী লিখেছেন। কবি-সাহিত্যিকদের লেখনির ভিড়ে সাংবাদিকদের বইয়ের কদরও আছে বেশ। ঢাকা-চট্টগ্রামের বইমেলায় বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার স্টলে পাওয়া যাচ্ছে বইগুলো।
গতকাল এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়ামের বইমেলায় গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার স্টলে খ্যাত-অখ্যাত কবি-সাহিত্যিকদের সাথে চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের লেখা বইগুলো সংগ্রহেও পাঠকদের আগ্রহের কমতি নেই। কয়েকজন লেখক সাংবাদিকের বই নাকি বিক্রিও হচ্ছে বেশ।-জানালেন প্রকাশনা সংস্থার বিক্রেতারা।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, এবারের বই মেলায় বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি ও সাংবাদিক রাশেদ রউফের দশটি বই বের হয়েছে। কিশোর কবিতার মধ্যে চট্টগ্রামের অক্ষরবৃত্ত প্রকাশন থেকে ‘শ্রেষ্ঠ কিশোর কবিতা’, ঢাকার চন্দ্রাবতী একাডেমি থেকে ‘ছুটিমাখা সকালে’, আশালতা প্রকাশন থেকে ‘যখন আমি ছোট্ট ছিলাম’, কিশোর গল্পের মধ্যে ঢাকার শিশু গ্রন্থকুটির থেকে ‘বীরের স্বপ্ন’, প্রত্যয় প্রকাশন থেকে ‘বাবারা কি মায়ের মতো হয়’, সময়চিহ্ন থেকে ‘বাবা, আমি তোমাকে ভালোবাসি’, জীবনীগ্রন্থের মধ্যে ঢাকার শিশু গ্রন্থকুটির থেকে ‘বিজ্ঞানী খুদরাত ই খুদা’, প্রবন্ধ-গবেষণার মধ্যে চট্টগ্রামের চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন থেকে ‘শিশুসাহিত্য ও আমাদের দায়বদ্ধতা’, ঢাকার বাংলাপ্রকাশ থেকে ‘বাংলা ছন্দের সহজ পাঠ’ বইগুলো বের হয়েছে। কবি ও সাংবাদিক রাশেদ রউফ পূর্বদেশকে বলেন, ‘প্রবন্ধ, কবিতা, গল্প, ছড়া ও জীবনীর বই মিলিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা থেকে দশটি নতুন বই বের হয়েছে। সবগুলো বই ঢাকা ও চট্টগ্রামের বইমেলার স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। পাঠকদের সাড়াও পাচ্ছি ব্যাপক।’
বইমেলায় কবি ও সাংবাদিক বিশ^জিৎ চৌধুরীর বই কিনতে পাঠকদের আগ্রহ বরাবরের মতোই বেশি থাকে। সাংবাদিকতা ও সাহিত্যে ডুবে থাকা এ লেখকের বই বের না হওয়ায় ভক্ত-পাঠকদের মধ্যে একধরনের শূন্যতা বিরাজ করছিল। অবশেষ বিশ^জিৎ চৌধুরী নিজেই ফেসবুকে জানান দিলেন, বের হচ্ছে ‘নির্বাচিত গল্প’। ৩০ বছর ধরে লেখা আমার গল্পগুলো থেকে বাছাই করা ৩০টি গল্পের সংকলন নিয়েই ‘নির্বাচিত গল্প’। গতকাল থেকে বইটি ঢাকা বাংলা একাডেমির বইমেলার বাতিঘর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। আজ থেকে চট্টগ্রামেও বইটি পাওয়া যাবে।
কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সারের দুটি বই মেলায় দেখা গেছে। ২০১৪ সালে খড়িমাটি থেকে বের হওয়া ওমর কায়সারের ‘নির্বাচিত কবিতা’ বইটি নতুন সংস্করণে আবারও বইমেলায় এসেছে। এ কবির নতুন বই ‘অবিকল স্বপ্নের মতো’ খড়িমাটি থেকে এবার প্রকাশিত হয়েছে।
কবি ও সাংবাদিক শুকলাল দাশের কবিতার বই ‘অবেলায় মন পোড়ে’ বের হয়েছে এবার। চট্টগ্রামের আবীর প্রকাশনী থেকে বইটি বের হয়েছে। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ পূর্বদেশকে বলেন, ‘কবিতা ও গল্পের বই লিখতে ভালো লাগে। এ পর্যন্ত মোট সাতটি বই প্রকাশিত হয়েছে আমার। এবারও একটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বইমেলায় বইটি পাওয়া যাচ্ছে। বইটি নিয়ে ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি।’
আবীর প্রকাশন থেকে বের হয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামলের ‘বাঙালি ও বাংলাদেশ’ বইটি। আব্বা, আম্মা ও ছোটভাইকে উৎসর্গ করে বইটি লিখেছেন খ্যাতনামা এই সাংবাদিক। বইটি সংগ্রহে পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ আছে। কবিতাভবন থেকে বের হয়েছে সাংবাদিক আহমেদ মুনিরের কবিতার বই ‘জেল রোডের প্রেমগীতি’। একই প্রকাশনা সংস্থা থেকে বের হয়েছে সাংবাদিক আসমা বীথির কবিতার বই ‘এসো হে জন্ম’। বাতিঘরের স্টলে বই দুটি পাওয়া যাচ্ছে। খড়িমাটি প্রকাশনা থেকে কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদলের ‘জিরাফের মতো দুপুরগুলো’, সিনিয়র সাংবাদিক জ্যোতির্ময় নন্দীর লেখনিতে কবিতার বই ‘হ্যাকুলিন ইস্শু’ বের হয়েছে। সাংবাদিক এসএম রানার ভার্চুয়াল জগতের কুফল নিয়ে বের হওয়া ‘ফেসবুকে বিপদে’ বইটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পাঠকদের মধ্যে বইটি নিয়ে আগ্রহের কথা জানালেন প্রকাশনা সংস্থা কথাপ্রকাশের বিক্রয়কর্মী রাজু আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের নতুন ৭০টি বই মেলায় এসেছে। এরমধ্যে চট্টগ্রামের সাংবাদিক এসএম রানার ফেসবুকে বিপদে বইটি নিয়ে পাঠকদের আগ্রহ বেশি। প্রচুর বিক্রি হচ্ছে বইটি।’
ঢাকার বইপত্র প্রকাশন থেকে বের হওয়া সাংবাদিক মুহাম্মদ সেলিমের গবেষণাগ্রন্থ ‘মাদকের শেখড় থেকে শিখরে’ বইটি চট্টগ্রামের বইমেলায় ৩৫নং স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। বইটির দশটি অধ্যায়ে তুলে ধরা হয়েছে মাদকের আদ্যপান্ত। বইটিতে মাদকের আদিকালের বর্ণনার পাশপাশি আছে বর্তমান অবস্থার চিত্রও। বইটির লেখক মুহাম্মদ সেলিম জানান, ‘মাদকের শ্রেণি ও পরিচিতি, রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে মাদক তৈরি, মাদকের সাথে নারীর সংশ্লিষ্টতা, শিশু-কিশোরদের মাদকে জড়ানো, মাদকের কারণে পারিবারিক অশান্তি ও মাদকাসক্তির কারণগুলো বইয়ে স্থান দেয়া হয়েছে। মূলত মাদক নিয়ে দেশ-বিদেশের বর্তমান চিত্র তুলে ধরতেই বইটি লিখা হয়েছে।’

বইমেলার তৃতীয় দিন
নজরুল উৎসব
উদযাপন
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের আয়োজনে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে বই মেলার তৃতীয় দিনের আলোচনা সভা ও নজরুল উৎসব উদযাপন করা হয়। উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন ময়মনসিংহ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহিত উল আলম। সরকারি কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ
আইয়ুব ভ‚ঁইয়ার সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. সেকান্দর চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সভাপতি ও মেলা পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মহিউদ্দীন শাহ আলম নীপু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মোহিত উল আলম বলেন বাংলা সাহিত্যে যে কজন লেখক ও কবি তার লেখনির মাধ্যমে স্থান করে নিয়েছেন তার মধ্যে কাজী নজরুল অন্যতম। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, স্বদেশী ও ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ প্রত্যেকটি গণ আন্দোলনে নজরুলের লেখনি মুক্তিকামী জনগণকে মুক্তির দিশা দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, নজরুল বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। কবিতা, সঙ্গীত, শ্যামা সঙ্গীত, কীর্তন, গজল এরকম আরো বহু অনন্য সৃষ্টি রয়েছে তার। তিনি বাংলা সাহিত্যকে যেমন সমৃদ্ধ করেছেন, তেমনি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মাতরে বাঙালিদের মধ্যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করার দ্যুতি ছড়িয়ে গেছেন। যা থেকে বাঙালি জাতি এখনো অনুপ্রাণিত হয়। তিনি যুগ যুগ ধরে বাঙালিদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।
সভায় স্বাগত বক্তব্যে মহিউদ্দীন শাহ আলম নিপু বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সহযোগিতায় এই প্রথমবারের মতো ভিন্ন আঙ্গিকে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য শুধু বই কেনা-বেচা নয় এর সাথে দেশের খ্যাতিমান জাতীয় ব্যক্তিত্ব ও সংস্কৃতির সাথে নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। অনুষ্ঠানের শুরুতে শিল্পীরা নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
গতকাল বলাকা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত দুইটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মোড়ক উন্মোচন করেন প্রফেসর ড. মোহিত উল আলম।
আজ বুধবার একুশে বই মেলা মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বসন্তবরণ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশের সম্পাদক রুশো মাহমুদ। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সঙ্গীত শিল্পী তপন চৌধুরী। বিজ্ঞপ্তি

লেখকের মুখোমুখি
জীবনের গভীর
বাস্তবতা তুলে ধরি :
হাফিজ রশিদ খান

নিজস্ব প্রতিবেদক
কবি ও প্রাবন্ধিক হাফিজ রশিদ খান। এবারের বইমেলায় বেহুলা বাংলা প্রকাশনার ব্যানারে বাজারে নিয়ে এসেছেন ‘হাফিজ রশিদ খান শেষ্ঠ কবিতা’। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক পেক্ষাপট ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জীবনযাপনের চিত্রের উপর ভিত্তি করে রচিত হয়েছে ‘হাফিজ রশিদ খান শেষ্ঠ কবিতা’।
কবি হাফিজ রশিদ খান বলেন, বইটিকে দুই পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রথম পর্বে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে এবং দ্বিতীয় পর্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের জীবনযাপন নিজের ব্যক্তিগত দৃষ্টিতে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। সমাজের মানুষের দুঃখ, বেদনা, অনৈতিকতা পক্ষান্তরে সৌন্দর্য্য, মানবিকতা, দেশপ্রেম এসব বিষয় কবিতায় উঠে এসেছে।
কবি হাফিজ রশিদ খান দীর্ঘদিন পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাস করেছেন। পার্বত্য এলাকার মানুষের সাথে কবির রয়েছে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী সংস্কৃতি ও জীবনধারার ওপর তার কয়েকটি কাব্য ও গবেষণামূলক গ্রন্থ রয়েছে। কবির প্রকাশিত ১৫টি বই ও ৮টি প্রবন্ধের মধ্যে আদিবাসীদের নানা চিত্র তিনি তুলে এনেছেন। অবহেলিত ও কম সুবিধা পাওয়া আদিবাসীদের প্রতি কবির ভালোবাসা ছিলো নিরন্তর। সমাজের বাস্তবচিত্র তুলে ধরায় অন্তরমুখী কবি হিসেবে খ্যাতি আছে হাফিজ রশিদ খানের। বাংলাদেশ ও পশ্চিম বাংলার তরুণ-প্রবীণ সাহিত্যকর্মীদের সম্পাদনায় প্রকাশিত অনেক ছোট কাগজের বুকে অসংখ্য কবিতা মুদ্রিত হয়েছে তাঁর।
হাফিজ রশিদ খান বলেন, আমার কবিতা, প্রবন্ধে জীবনের গভীর বাস্তবতার পাশাপাশি সামাজিক চিত্রের প্রতিফলন তুলে ধরি। পাশাপাশি পার্বত্য অঞ্চলের ১১ ক্ষুদ্রজাতিসত্তার অবহেলিত জীবন, ভাষা, সংস্কৃতি রক্ষার পক্ষে কলম ধরি।