৫০০ কিলোমিটার এলাকায় মাটির নিচ দিয়ে যাবে তার

31

চট্টগ্রামে মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের তার নেওয়ার কাজ শিগগিরই শুরু হচ্ছে। ৬০ বর্গমাইলের চট্টগ্রাম নগরে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তিন হাজার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৫০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মাটির নিচ দিয়ে নেওয়া হবে বৈদ্যুতিক তার।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এই প্রকল্পের মধ্যে মাটির নিচ দিয়ে তার নেওয়ার প্রকল্পও একটি।
ইতোমধ্যে নগরের কোন কোন এলাকা দিয়ে তার নেওয়া হবে তা চিহ্নিত করতে কাজ শুরু করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর থেকে কাজ শুরু করা যাবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
মাটির নিচে বিদ্যুতের তার নেওয়া হলে নগরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি অগ্নিকাÐের ঘটনাও কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। খবর বাংলানিউজ
ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, নগরে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যতগুলো অগ্নিকাÐ ঘটেছে, তার বেশিরভাগই বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে।
২০১৫ সালে ৫৯৮টি অগ্নিকান্ডের মধ্যে ২০৬টি ঘটেছে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে। অগ্নিকাÐে ওই বছর মারা গেছেন ১০ জন। নষ্ট হয় ৪০ কোটি টাকার সম্পদ।
২০১৬ সালে ৫০০টির মধ্যে ৩ শতাধিক অগ্নিকান্ড বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ঘটেছে। ২০১৭ সালে ৪৫০টির মধ্যে ২ শতাধিক, ২০১৮ সালে ৪৫০টির মধ্যে আড়াইশ’রও বেশি ও ২০১৯ সালে ৫৫০টির মধ্যে ৩ শতাধিক অগ্নিকান্ড বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ঘটেছে।
তাই মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের তার নেওয়া হলে অগ্নিকান্ডের ঘটনা অর্ধেকে নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের এমন উদ্যোগে খুশি নগরবাসীও।
প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম শহরে ৫০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মাটির নিচ দিয়ে নেওয়া হবে বৈদ্যুতিক তার। পরে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলা শহর ও উপজেলা শহরেও মাটির নিচ দিয়ে নেওয়া হবে তার।
চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিতরণ) দক্ষিণাঞ্চলের প্রকল্প পরিচালক মো. মকবুল হোসেন বলেন, নগরের কোন কোন এলাকায় মাটির নিচ দিয়ে তার যাবে সেটি চূড়ান্ত করার জন্য কাজ করছি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর থেকে কাজ শুরু করতে পারবো।
দেশে প্রথম বারের মতো মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ কার্যক্রম চালু হয় সিলেটে। সিলেটের হযরত শাহজালাল (র.) মাজার এলাকার সড়কের উপরে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে মাটির নিচ দিয়ে সংযোগ চালু করা হয়।
প্রায় ১৫ দিন পরীক্ষামূলক সরবরাহ পর্যবেক্ষণের পর ৫ জানুয়ারি থেকে শাহজালাল (র.) মাজারের প্রধান সড়ক থেকে মাজারের প্রধান ফটক পর্যন্ত সড়কের ভূগর্ভস্থ লাইনে পূর্ণ সরবরাহ চালু করা হয়।
পর্যায়ক্রমে পুরো নগরে তারের জঞ্জাল কমাতে টেলিফোন, ইন্টারনেট, ক্যাবল লাইনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সব তার ভূগর্ভে নেওয়া হবে সিলেটে।