৪শ প্রজাতির গাছের সংগ্রহশালা হচ্ছে

114

দেশের একমাত্র ‘সবুজ আঙিনা’ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এখানকার অনুকূল পরিবেশের কারণে ওয়ার্ল্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট (ডব্লিউআরআই) ইন্দো-বার্মা বায়োডাইভারসিটি এ ক্যাম্পাসকে প্রাণির ‘হট স্পট’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। পাহাড়ঘেরা এই ক্যাম্পাসে পশুপাখির পদচারণা চোখে পড়ার মতো। তবে কয়েক দশকে বন্যপ্রাণির সংখ্যা কমলেও ক্যাম্পাসে বেড়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।
পাখির পাশাপাশি গত ১৮ বছরে ১৯২ প্রজাতির গাছও বেড়েছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। শুধু তা-ই নয়, ১৩৬টি পরিবার এবং ৫১২টি গণ এর অন্তর্ভুক্ত প্রায় ৮৮৫ প্রজাতির সপুষ্পক উদ্ভিদেরও উপস্থিতি রয়েছে ক্যাম্পাসে।
২০১০ ও ২০১৬ সালে গাছ ও সপুষ্পক উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করেন বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামাল হোসাইন, মোহাম্মদ সফিউল আলম ও মো. আকতার। খবর বাংলানিউজের
গবেষণায় তারা দেখিয়েছেন, ১৯৫০ সালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অঞ্চলে গর্জন, বৈলাম, পাদাউক, আগর, তমাল, ধূপ, ত্রিশূলের মতো গাছের আধিক্য ছিল। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এসব গাছ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে হারিয়ে গেছে। এর মধ্যেও ১৯৯৯ সালের দিকে ক্যাম্পাসে গাছ ছিল ৫৯ প্রজাতির আর ২০০৬ সালে ছিল ১৭৫ প্রজাতির। সর্বশেষ গবেষণায় তারা পেয়েছেন ২৫৫ প্রজাতির গাছ।
গবেষকরা জানান, ১৯৭৫ সালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় বোটানিক্যাল গার্ডেন প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর কিছু কিছু গাছ লাগানো হয়। পরে ১৯৮২ সালে বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা হলে ওই ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে রাস্তার পাশে, পুরো ক্যাম্পাসের খালি জায়গায় ও পাহাড়ে শতাধিক প্রজাতির গাছ লাগানো হয়। এ কারণে বর্তমানে ২৫৫ প্রজাতির গাছের উপস্থিতি রয়েছে।
অধ্যাপক কামাল হোসাইন জানান, এই ৮৮৫ প্রজাতির সপুষ্পক উদ্ভিদের মধ্যে ৩৯৬টি বিরুৎ, ১৭৪টি গুল্ম, ৭৮টি আরোহী এবং ২৩৭টি অন্যান্য গাছ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রায় ১৩৪ প্রজাতির ঔষধি, ৫৫ প্রজাতির কাঠ উৎপাদনকারী, ৫৩ প্রজাতির শোভাবর্ধনকারী উদ্ভিদ আছে।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। এখন ২৫৫ প্রজাতির গাছ থাকলেও আগামি চার বছরের মধ্যে ৪০০ প্রজাতির গাছের ক্যাম্পাস করা হবে। আমরা ৫ বছরের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের একমাত্র গাছের সংগ্রহশালা করবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘সবুজ পাহাড়ঘেরা এই ক্যাম্পাসকে বৃক্ষময় করতে যা যা করা দরকার সবটুকু করা হবে। আমাদের বিশ্বাস, শিক্ষার পাশাপাশি পর্যটনের ক্ষেত্রে এই ক্যাম্পাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’