৩ শহরে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি

22

শ্রীলঙ্কায় কয়েক দফা ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় বিভিন্ন শহরে অভিযান চালাচ্ছেন দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এরই মধ্যে কয়েকটি স্থান থেকে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পোশাক ও পতাকাসহ বিভিন্ন বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনার জেরে দেশটির কয়েকটি শহরে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি করেছে সরকার। নিরাপত্তা বাহিনীর বরাতে ২৭ এপ্রিল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ২৬ এপ্রিল থেকে কারফিউর সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত পূর্বাঞ্চলীয় কালমুনাই, চাভালাকাদে এবং সামানথুরাই শহরে প্রতিদিন রাত পৌনে ৯টা থেকে পরদিন ভোর ৪টা পর্যন্ত প্রায় আট ঘণ্টা কারফিউ জারি থাকবে। পুলিশ আরও জানায়, গোয়েন্দা খবরের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে সামানথুরাই শহরে অভিযান চালানো হয়। এতে সেখান থেকে আইএসের পোশাক ও পতাকাসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য ও ড্রোন ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়।
অন্যদিকে, একইদিন রাতে নিরাপত্তা বাহিনী কালমুনাই শহরে সন্দেহভাজন ‘আস্তানায়’ অভিযানে গেলে দুর্বৃত্তরা ‘আত্মঘাতী’ বোমা হামলা চালায়। এতে ছয় শিশু ও তিন নারীসহ ১৫ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে চার আইএস সদস্যও রয়েছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। এর আগে শুক্রবারই প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা জানিয়েছেন, আইএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা ১৪০ শ্রীলঙ্কান যুবককে খুঁজছে দেশটির পুলিশ।
সেসময় নিরাপত্তার স্বার্থে দেশটির প্রত্যেকটি ঘরেই তল্লাশি চালানো হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গত ২১ এপ্রিল খিস্টানদের বড় ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় শ্রীলঙ্কায় তিনটি গির্জা ও চারটি হোটেলসহ আটটি স্থানে ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলা হয়। এরপরই বাড়তে থাকে নিহতের সংখ্যা। যা শেষপর্যন্ত ৩৫৯ এ গিয়ে ঠেকে। পরবর্তীতে গণনায় ভুল হয়েছে বলে সে সংখ্যা ১০৬ জন কমিয়ে ২৫৩ তে এসে দাঁড়ায় বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

ওই ঘটনার পর দেশব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে নামে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। তদন্তের স্বার্থে এখন পর্যন্ত সিরিয়া ও মিশরের নাগরিকসহ অন্তত ৭৬ জনকে আটক করা হয়েছে। এ হামলার পেছনে স্থানীয় বিদ্রোহীগোষ্ঠী ন্যাশনাল তাওহীদ জামায়াত রয়েছে বলে জানিয়েছিল দেশটির কর্তৃপক্ষ। তবে ২৩ এপ্রিল হামলাটির দায় স্বীকার করে আইএস। প্রমাণ হিসেবে হামলাকারীদের বেশ কয়েকটি ছবিও প্রকাশ করে সংগঠনটি।