৩য় শ্রেণি পর্যন্ত আর পরীক্ষা থাকছে না

88

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই তিন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে শিগগিরই একটি কর্মশালার মাধ্যমে তা চূড়ান্ত করা হবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন জানিয়েছেন। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিকের সময়কাল এক বছর বাড়িয়ে দুই বছর করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের ৬৫ হাজার ৫৯৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয় না, প্রাক-প্রাথমিক শ্যেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।
সচিব আকরাব গতকাল বুধবার বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা পদ্ধতি রাখব না। এসব শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কীভাবে মূল্যায়ন করতে পারি, সেজন্য এনসিটিবিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসে শিগগিরই চূড়ান্ত করব। খবর বিডিনিউজের
গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতি এবং তাদের ডায়েরিতে শিক্ষকদের মন্তব্যকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের মূল্যায়ন করা হতে পারে।
তবে শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্টরা যেভাবে মতামত দেবেন মন্ত্রণালয় সেভাবেই বিষয়টি চূড়ান্ত করে গেজেট জারি করবে।
দেশের শিক্ষাবিদরা পঞ্চম শ্রেণির পিইসি পরীক্ষাও তুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছেন, তবে তাতে সরকার সাড়া দিচ্ছে না।
আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে কোনো পরীক্ষা রাখা হবে না বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা।
আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, কিন্ডারগার্টেন থেকে শিশুদের সরকারি বিদ্যালয়মুখী করতেই প্রাক-প্রাথমিকের সময়কাল দুই বছর করার প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে শিগগিরই নির্দেশনা জারি করা হবে।
শিশুর ওপর থেকে পরীক্ষার চাপ কমাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স¤প্রতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর সব পরীক্ষা তুলে দিতে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেন বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
অতিরিক্ত চাপে লেখাপড়া নিয়ে শিশুদের মধ্যে যেন ভীতি তৈরি না হয় সেজন্য শিক্ষক ও অভিভাবকদের নজর দিতে গত ১৩ মার্চ এক অনুষ্ঠানে অনুরোধ রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
ওই দিন এবারের জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, শিশুদের শিক্ষার জন্য অতিরিক্ত চাপ দেওয়া উচিত না। তাদের পড়াশোনাটা তারা যেন খেলতে খেলতে, হাসতে হাসতে সুন্দরভাবে নিজের মতো করে নিয়ে পড়তে পারে সেই ব্যবস্থাটাই করা উচিত।
সরকারি প্রাথমিকে ২০১৪ সাল থেকে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি চালু করা হয়। প্রাক-প্রাথমিকের প্রথম ব্যাচে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা ২০১৮ সালের প্রাথমিক সমাপনীতে অংশ নিয়েছে।