২ হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যে শুল্ক দ্বিগুণ করল যুক্তরাষ্ট্র

33

যুক্তরাষ্ট্রে রফতানিকৃত প্রায় দুই হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যের শুল্ক বৃদ্ধি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্র জানায়, চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এর জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে চীন। ফলে এতে করে বিশ্ব অর্থনীতি বড় এক ধাক্কা খেতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
২০১৮ সালের ৩৪ বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ শুরু করে ট্রাম্প প্রশাসন। পাল্টা উত্তর দেওয়ার হুমকি আসে বেইজিং-এর তরফেও। চীনের অভিযোগ, ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মাবলীর লঙ্ঘন। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব অর্থনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেছে।এরপর চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী ৯০ দিনের জন্য কোনোরকম শুল্ক আরোপ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প ও শি জিনপিং।
এবার আবারও শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসলো যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও তাদের ওয়েবসাইটে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। চীন জানায়, তারা এই সিদ্ধান্তে ‘গভীরভাবে হতাশ’ এবং পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত এমন সময় এলো যখন দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা একটি চুক্তির জন্য ওয়াশিংটনে বৈঠকে বসার পরিকল্পনা করছিলেন। ধারণা করা হচ্ছিলো বিগত কয়েকমাসে বিরোধের অবসানের কাছাকাছি পৌঁছেছিলো দেশ দুটি। েেদশ দুটির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মধ্যে যেমন অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে তেমনি বিশ্ব অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপর এর প্রভাব কেমন তা কিছুটা এড়িয়ে গেছেন ট্রাম্প। তবে কিছু মার্কিন প্রতিষ্ঠান ও ক্রেতাদের জন্য শুল্ক বাড়ানোটা একটা ধাক্কার মতো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এশিয়ান ট্রেড সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক ডেবোরাহ এলমস বলছেন, ‘এটা অর্থনীতিতে একটা বড় ধাক্কা দিতে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘সব মার্কিন প্রতিষ্ঠানের হঠাৎ করে ২৫ শতাংশ খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার চীনও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।’ তবে কেউ কেউ মনে করছেন চীন এখনও আলোচনার চেষ্ট করবে। কারণ বাণিজ্য যুদ্ধ থামানো খুবই জরুরি। পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিকসের গ্যারি হাফবাউর বলেন, বাণিজ্য যুদ্ধ চীনের অর্থনীতি ও বাণিজ্যক্ষেত্রে জন্য ক্ষতিকর হবে। এছাড়া বিশ্ব অর্থনীতির জন্যও এর ফল খারাপ হবে। তাই চীনের উচিত হবে ক্ষুব্ধ না হয়ে ঠান্ডা মাথায় সমাধান করা। ‘
চীনা পণ্যের ওপর নতুন করে কঠিন শুল্ক কার্যকর করার প্রায় ৯০ মিনিট আগে হোয়াইট হাউস জানায়, শুক্রবার চীনের সাথে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য আলোচনা অব্যাহত থাকবে। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, চীনা প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটজার ও অর্থমন্ত্রী স্টিভান মুচিনের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৈঠক করেন। উভয় পক্ষ ইউএসটিআরে কাল (শুক্রবার) সকালে আলোচনা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে।