২৪ ফেব্রুয়ারি খননকাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

49

অবশেষে শুরু হচ্ছে কর্ণফুলী টানেলের মূল খনন কাজ। প্রস্তুত করা হয়েছে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম)। এ মেশিন দিয়েই টানেল খনন করা হবে। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি খনন কাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে সড়ক পরিবহন সচিব ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
নগরীর পতেঙ্গা নেভাল একাডেমি থেকে আনোয়ারার সিইউএফএল সার কারখানা সংলগ্ন ঘাট পর্যন্ত ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ মূল টানেল নির্মাণ করা হবে। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর টানেল বোরিং মেশিন দিয়ে খনন কাজ শুরু করা হবে। নগরীর শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে কর্ণফুলী নদীর ২ কিলোমিটার ভাটির দিকে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরে নদীর তলদেশে এই টানেল নির্মাণ করা হবে। নেভি কলেজের পার্শ্ববর্তী এলাকা হবে টানেলের প্রবেশপথ এবং কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সিইউএফএল সার কারখানা সংলগ্ন ঘাট হবে বহির্গমন পথ। দুই টিউব সম্বলিত টানেলের একটি দিয়ে গাড়ি শহরপ্রান্ত থেকে প্রবেশ করবে, আরেকটি টিউব দিয়ে ওপার থেকে শহরের দিকে আসবে। টানেলের প্রতিটি টিউব চওড়ায় হবে ১০ দশমিক ৮ মিটার বা ৩৫ ফুট এবং উচ্চতায় হবে ৪ দশমিক ৮ মিটার বা প্রায় ১৬ ফুট। একটি টিউবে বসানো হবে দুটি স্কেল। এর ওপর দিয়ে দুই লেনে গাড়ি চলাচল করবে। মাঝে ফাঁকা থাকবে ১১ মিটার। যেকোনো বড় যানবাহন স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারবে এই টানেল দিয়ে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি)।
কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, টিবিএম দিয়ে টানেলের মূল কাজ শুরু করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেলের মূল কাজের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে উদ্বোধনের সম্মতি পাওয়া গেছে।
ইতোমধ্যে টানেলের মূল কাজ শুরুর জন্য চীন থেকে আনা হয়েছে অত্যাধুনিক টিবিএম। টিবিএমের মাধ্যমে মাটি খুঁড়ে ঢোকানো হবে টিউব। ৯৪ মিটার দীর্ঘ ও ২২ হাজার টন ওজনের এই মেশিন ইতিমধ্যে ফিটিং শেষ হয়েছে। মেশিনটি এখন খননের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, টিবিএম সংযুক্ত করার কাজ শেষ হয়েছে। এখন টেস্ট ট্রায়াল চলছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। টানেলটি ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। চীনের সাংহাই নগরীর ন্যায় (এক নগরী, দুই শহর) চট্টগ্রাম শহরকে গড়ে তুলতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রকল্পটি নির্মিত হচ্ছে। প্রস্তাবিত মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভে টানেলটি ব্যবহার করার পরিকল্পনা আছে। পরবর্তীতে মেরিন ড্রাইভটি এশিয়ান হাইওয়ে হিসাবে মিয়ানমার হয়ে চীনের কুনমিং সিটি পর্যন্ত প্রসারিত হওয়ার কথা রয়েছে।