২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈধ অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশ

57

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশের পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সবধরনের বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিকটবর্তী থানায় জমা দেয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আদেশক্রমে জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব আবদুল জলিল এই আদেশ জারি করেন। তবে, তিন শ্রেণির ব্যক্তিকে তাদের বৈধ অস্ত্র জমা দিতে হবে না।
এদিকে, ইসির নির্দেশনা পেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এমন সময়ে বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করল, যখন গত পাঁচ বছরে নগরীতে রাজনৈতিক বিবেচনায় লাইসেন্সপ্রাপ্ত অনেক বৈধ অস্ত্রধারীর সন্ধান পুলিশ পাচ্ছে না। লাইসেন্সে উল্লেখিত ঠিকানায় খোঁজ এরইমধ্যে পুলিশ অনেকের হদিস পায়নি। এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের আগ্নেয়াস্ত্র শাখা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদনও পাঠিয়েছে নগর পুলিশ। একটি সংঘবদ্ধ চক্র সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের ভুয়া লাইসেন্স ইস্যু করেছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে। যে কারণে এসব বৈধ অস্ত্রধারীর হালনাগাদ তথ্যও জেলা প্রশাসনের আগ্নেয়াস্ত্র শাখায় নেই। অসমর্থিত সূত্রের দাবি, এসব লাইসেন্সধারীর কেবল আগ্নেয়াস্ত্রটিই আসল। বাকি সবই ভুয়া। এবার আপাতদৃষ্টিতে ‘নিখোঁজ’ সেসব বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রধারীর সন্ধান মিলবে কিনা পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে সেই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে।
জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিতে হবে, যা ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় কোষাগারে গচ্ছিত থাকবে। তবে, তিন শ্রেণির ব্যক্তিকে তাঁদের বৈধ অস্ত্র জমা দিতে হবে না। এই তিন শ্রেণির ব্যক্তিরা হলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি দপ্তর, আর্থিক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং স্থাপনাসমূহে নিয়োজিত নিরাপত্তা প্রহরী। যারা এই আদেশ লঙ্ঘন করবেন, অস্ত্র আইনের সংযুক্ত ধারায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলতে সংবিধানের একশ’ ৫২ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত ‘শৃঙ্খলা বাহিনী’কে বোঝানো হয়েছে। সংবিধানের এই ধারামতে, শৃঙ্খলা বাহিনী বলতে স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনী, পুলিশ বাহিনী এবং আইনের দ্বারা সংজ্ঞার অর্থের অন্তর্গত বলে ঘোষিত যেকোনো শৃঙ্খলা বাহিনীকে বোঝানো হয়েছে।
এর আগে বৈধ অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগকে চিঠি পাঠান নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান। ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল, ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের আগে সব বৈধ অস্ত্র জমা নেয়ার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তবে, সরকারি বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে। সব অস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিতে হবে।