২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জনের মৃত্যু শনাক্ত ২,৯৬০

23

দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার ১৪৩ দিনের মাথায় সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে গেল, শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৩০ হাজারের ঘর ছুঁই ছুঁই করছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাতে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার। গত এক দিনে আরও ২ হাজার ৯৬০ জনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২৯ হাজার ১৮৫ জনে। আইইডিসিআরের ‘অনুমিত’ হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৭৩১ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ২৭ হাজার ৪১৪ জন হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা গতকাল মঙ্গলবার দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তার ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। প্রায় এক মাস পর ২০ এপ্রিল মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছিল। তা ৫০০ ছাড়ায় গত ২৫ মে। এরপর ১০ জুন মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়। দেড় হাজার ছাড়ায় ২২ জুন।
করোনা ভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ৮৫ দিন পর ৫ জুলাই মৃতের সংখ্যা দুই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায়। এরপর তা আড়াই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায় ১৭ জুলাই। গতকাল মঙ্গলবার সেই সংখ্যা তিন হাজারের ঘর স্পর্শ করল। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।
৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর তা ২ লাখ পেরিয়ে যায় ১৮ জুলাই। এর মধ্যে ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ।
ড. নাসিমা সুলতানা বলেন, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ, ৯ জন নারী। ২৬ জন হাসপাতালে এবং ৮ জন বাড়িতে মারা গেছেন; আর ১ জনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। এই ৩৫ জনের মধ্যে ৪ জনের বয়স ছিল ৮০ বছরের বেশি। এছাড়া ৩ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ১৩ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ১০ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।
তাদের ১২ জন ঢাকা বিভাগের, ৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪ জন খুলনা বিভাগের, ৪ জন সিলেট বিভাগের, ৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ২ জন রংপুর বিভাগের, ২ জন ময়মনসিংহ বিভাগের এবং ৩ জন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
নাসিমা সুলতানা জানান, এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৩ হাজার জনের মধ্যে ২ হাজার ৩৫৮ জন পুরুষ এবং ৬৪২ জন নারী। তাদের মধ্যে এক হাজার ৩৭৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৮৬৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৪২৫ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২০০ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৮৪ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৩০ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১৮ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম ছিল।
১ হাজার ৪৪৪ জন ঢাকা বিভাগের, ৭৩১ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১৭৭ জন রাজশাহী বিভাগের, ২১২ জন খুলনা বিভাগের, ১১৫ জন বরিশাল বিভাগের, ১৪৪ জন সিলেট বিভাগের, ১১৩ জন রংপর বিভাগের এবং ৬৪ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৮১টি ল্যাবে ১২ হাজার ৭১৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ লাখ ৩৭ হাজার ১৩১টি। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩১ শতাংশ।