২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু রোগী কমেছে ২২ শতাংশ

18

সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী কমেছে ১৪৬ জন। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় নতুন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ২২ শতাংশ কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে আরও ৫২৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা ছিল ৬৭৩ জন।
গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে রাজধানীর মাত্র ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ২৮৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছে। ক্রমেই এই সংখ্যা কমে আসছে। একই সময়ে ঢাকার বাইরে ১ হাজার ৭১১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। সারাদেশে মোট ভর্তি রয়েছে ২ হাজার ৯৯৬ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে আর নতুন ১৫৬ জন ভর্তি হয়েছে ও হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৫৩ জন এবং ঢাকার বাইরে আরও ৩৭১ জন নতুন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে এবং ছাড়পত্র পেয়েছে ২৭৮ জন। খবর বাংলানিউজের
এদিকে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) কাছে ডেঙ্গু সন্দেহে ২০৩টি মৃত রোগীর তথ্য এসেছে। এরমধ্যে ১০১টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ৬০টি ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু বলে নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
তাছাড়া এবারের ডেঙ্গুতে শিশুমৃত্যুর হারও সর্বোচ্চ বলে জানা গেছে আইইডিসিআর সূত্রে। সরকারের এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির মতে, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত মৃত্যুর ৩৮ দশমিক ৫ শতাংশের বয়সই ১৮ বছরের নিচে। যাদের মধ্যে ১২ জনের বয়স ৫ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। যা মোট মৃত্যুর ২৩ দশমিক ১ ভাগ।
ডেঙ্গুতে নিশ্চিত মৃত ৬০ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করে আইইডিসিআরের বিশেষজ্ঞরা জানান, ৬০ জনের মধ্যে ৪০ জনের ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম এবং ৭ জনের হেমোরেজিক জ্বর ছিল। ২৩ জনের মধ্যে এর আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া মৃতদের মধ্যে ২১ জনের বয়সই ১৮ বছরের নিচে।
এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩৮, ফেব্রুয়ারিতে ১৮, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ৫৮, মে মাসে ১৯৩, জুনে ১ হাজার ৮৮৪, জুলাইয়ে ১৬ হাজার ২৫৩, আগস্টে ৫২ হাজার ৬৩৬ জন এবং সেপ্টেম্বর মাসের ১১ দিনে ৯ হাজার ৪৭০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশে ২০১৯ সালেই সর্বোচ্চ ডেঙ্গুতে আক্রান্তের রেকর্ড স্থাপিত হয়েছে যার। মধ্যে জুলাই মাসে ছিল সর্বোচ্চ।
রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৪, মিটফোর্ডে ২২, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ২, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১৫, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল ৪ ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ৭ এবং কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারী হাসপাতাল সহ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে মোট ১০৮ জন ভর্তি রয়েছেন। বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছেন ৪৮ জন।
ঢাকা শহর ব্যতীত ঢাকা বিভাগের অন্য এলাকায় ৭৯, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৬, খুলনায় ১৪৩, রংপুরে ৮, রাজশাহীতে ৩০, বরিশালে ৪৯, সিলেটে ৯ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের পর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮০ হাজার ৫৬৭ জন। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৭৭ হাজার ৩৬৮ জন। অর্থাৎ আক্রান্তদের ৯৬ ভাগ রোগীই ছাড়পত্র পেয়েছেন।