১৮ বছরেও সংস্কার হয়নি কাপ্তাই জেটিঘাট সড়ক

200

দীর্ঘ ১৮ বছরেও সংস্কার হয়নি কাপ্তাইয়ের ট্রানজিট পয়েন্ট আপস্ট্রিম জেটিঘাট সড়কটি। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কোটি টাকার গাছ, বাঁশ, মাছ, কলা, ফলমূলসহ বিভিন্ন কাঁচামাল দেশের নানা স্থানে নেওয়া হয়। এছাড়াও জেটিঘাটে বিভিন্ন ব্যবসায়ীক কাজকর্ম পরিচালিত হয়ে থাকে। সড়কটি দিয়ে নিত্য লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় করছে সরকার। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও সংস্কার করা হচ্ছে না গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি। প্রতিনিয়ত জনভোগান্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। জানা যায়, সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্মিত লেকভিউ আইল্যান্ড পর্যটন কেন্দ্র দর্শন, রাঙামাটি সদর, বিলাইছড়ি, লংগদু, মাইনী, জুরাছড়িসহ ছয়টি উপজেলার সাথে যোগাযোগের একমাত্র পয়েন্ট এ আপস্ট্রিম জেটিঘাট। সর্বশেষ ২০০২ সালে সংস্কার করার পর দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর অতিবাহিত হলেও সড়কটি আর সংস্কার করা হয়নি। ফলে এই পয়েন্ট দিয়ে চলাচলরত মালবাহী ট্রাক, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, বাসসহ অন্যান্য যানবাহনকে মারত্বক ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সড়কটির বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই গর্ত কাদা-পানিতে একাকার হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জেটিঘাটে প্রতিদিন চলাচলরত অটোরিক্সা চালক মো. হারুন জানান, দীর্ঘদিন সড়কটি সংস্কার না করায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে আমাদের চলাচল করতে গিয়ে প্রায় সময়ই গাড়ির যন্ত্রাংশ ভেঙে যাচ্ছে। পরে বিপুল অর্থ ব্যয় করে ভেঙ্গে যাওয়া যন্ত্রাংশ মেরামত করতে হচ্ছে। এদিকে, জেটিঘাটে জনৈক ব্যবসায়ী বলেন, জেটিঘাটে প্রায় ৯০টি দোকান রয়েছে। এছাড়া, দাখিল মাদ্রাসা, বনবিভাগের পরীক্ষণ ফাঁড়ি, মৎস্য উপকেন্দ্র, বাঁশ, গাছ, ব্যবসায়ী, ট্রাক চালাক ও ইঞ্জিনচালিত ভোট মালিক সমিতি অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কার্যালয় রয়েছে। এদের কাছ থেকে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র (পিডিবি) প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ অর্থ ভাড়া বাবদ আদায় করছে। কিন্তু সড়কটি সংস্কার করার ক্ষেত্রে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। সপ্তাহের প্রতি শনিবার জেটিঘাটে পাহাড়ি-বাঙালিদের সাপ্তাহিক হাট বসে। হাটের দিন কোটি টাকার লেনদেন হয় এ বাজারে। হাটে আসা কলা বিক্রিতা কাঁলাচান চাকমা জানান, দীর্ঘ প্রায় ১৭-১৮ বছর যাবৎ সড়কটি সংস্কার না করায় বাজারে আসা-যাওয়া ও কলা বিক্রি করতে চরম ভোগান্তি পৌঁহাতে হচ্ছে আমাদের। এব্যাপারে গত সোমবার কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রকোশলী আবদুল লতিফের দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে তিনি জানান, জেটিঘাট সড়কটি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এটি পার্বত্য এলাকার বন্দর। এখানে পার্বত্য ৬টি উপজেলার ট্রানজিট পয়েন্ট। প্রতিদিন পার্বত্য এলাকা থেকে আসা লাখ লাখ টাকার পণ্য উঠানামা করেছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে সড়কটি মেরামত করা প্রয়োজন। উপজেলা আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ইব্রাহিম খলিল জানান, জেটিঘাট সড়কটি খুবই গুরুতপূর্ণ একটি সড়ক। এটি দ্রূত সংস্কার করা প্রয়োজন। সড়কটি সংস্কারে রাঙামাটির সাংসদ দীপংকর তালুদারের সহযোগীতা নিয়ে দ্রূত সংস্কার কাজ করার প্রচেষ্টা চালানো হবে বলে তিনি জানান। এব্যাপারে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।