১৫ গুণী ব্যক্তিকে একুশে সম্মাননা দিল চসিক

42

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ ১১জনকে একুশে সম্মাননা ও ৪ জনকে একুশে সাহিত্য পুরস্কার দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। গত শুক্রবার এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের সিজেকেএস জিমনেসিয়ামে মুজিব বর্যে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত অমর একুশে বইমেলার চট্টগ্রাম মঞ্চে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সম্মাননা প্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন।
অমর একুশে স্মারক সম্মাননা পাওয়া গুণীজনেরা হলেন, ভাষা আন্দোলনে আবু তালেব চৌধুরী (মরণোত্তর), শিক্ষায় অধ্যক্ষ এএফএম মোজাফফর আহমদ (মরণোত্তর), চিকিৎসাসেবায় প্রফেসর সৈয়দা নুরজাহান ভূঁইয়া (মরণোত্তর), স্বাধীনতা আন্দোলনে শহীদ হারুনুর রশীদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধে মোহাম্মদ হারিছ, সাংবাদিকতায় আখতার-উন-নবী (মরণোত্তর), সংগঠক প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন, সংগঠক বিএফইউজের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, ক্রীড়ায় সিরাজ উদ্দিন মো. আলমগীর, সংগীতে ওস্তাদ স্বপন কুমার দাশ, সমাজসেবায় সন্ধানী চমেক ইউনিটকে একুশে সম্মাননা স্মারক এবং কথাসাহিত্যে (অনুবাদ) ড. মাহমুদ উল আলম, প্রবন্ধ গবেষণায় অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল আমিন, কবিতায় ওমর কায়সার ও শিশুসাহিত্যে আকতার হোসাইন।
মরণোত্তর সস্মাননা স্মারক প্রাপ্তদের পক্ষে তাদের পরিবারের সদস্যরা স্মারক গ্রহণ করেন। এ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র বলেন, আমি এই শহরের আদি বাসিন্দা। আমার পিতা, দাদা এ শহরে জম্ম গ্রহণ করেন। আমার জন্মও এ শহরে। সম্ভবত: ১৮৮০ সালে আমার পূর্ব পুরুষেরা এ শহরে এসেছিল। সেই ধারাবাহিকতায় আামি এই শহরের অনেক ভালো-মন্দের সাথে পরিচিত। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে স্কুলজীবনে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত হই। অনেক চড়াই -উতরাই পেরিয়ে আজকের এ অবস্থানে আসা। আমি এদেশের মাটি ও মানুষকে অন্তরে ধারণ করে রাজনীতি করি। আমৃত্যু এটি থাকবে। এ নগরবাসীর সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং আগামীতেও থাকবো। এ নগরবাসীর কাছে আমি অনেক বেশি ঋণী। বেঁচে থাকলে, এ ঋণ শোধ করার চেষ্টায় থাকবেন বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সম্মাননাপ্রাপ্ত কবি ওমর কায়সার তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আজকের এদিনে এসে বিগত ৪৪ বছর আগে ফিরে যাই। পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্টে খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করলে পুরো দেশ স্তব্ধ হয়ে যায়। ঠিক সেই মুহূর্তে কয়েকজন তরুণ জাতির পিতাকে হত্যার প্রতিবাদে সব রক্ষচুক্ষুকে উপেক্ষা করে চট্টগ্রামের রাজপথে জয়বাংলা স্লোগান দিয়েছিলেন। সেই শ্লোগান দাতাদের মধ্যে একজন হলেন মেয়র নাছির। চট্টগ্রামের মেয়র পদবীটা ছোট্ট একটি স্টেশন। এই ছোট্ট স্টেশনের গন্ডি পেরিয়ে মেয়র নাছির অনেক দূরে যাবেন বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, পদকের জন্য আমি নিজেকে যোগ্য মনে করি না। কম বয়সে আমাকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হলো। আমি চসিকের কাছে কৃতজ্ঞ। মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ হারিজ বলেন, আমরা সাত ভাই। সবাই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আজ তিনি ছাড়া ভাইদের মধ্যে আর কেউ বেঁচে নেই। শিক্ষায় সম্মাননা পাওয়া প্রয়াত অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ চৌধুরীর পুত্রবধূ চবি’র অধ্যাপক সরাইয়া নাজনীন বলেন, শিক্ষায় অবদান রাখার জন্য তার শ্বশুরকে সম্মাননা দেওয়ায় তারা চসিককে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চসিক প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, অমর একুশে বইমেলা কমিটির আহব্বায়ক কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস। সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া।