হোয়াইট হাউসের কাছে নথিপত্র চেয়েছে কংগ্রেসনাল কমিটি

33

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন তদন্তে তার সঙ্গে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কির ফোনালাপ সংক্রান্ত নথিপত্র হোয়াইট হাউসের কাছে চেয়েছে প্রতিনিধি পরিষদের তিনটি কমিটি।
শুক্রবার এক চিঠিতে মার্কিন কংগ্রেসের পররাষ্ট্র, গোয়েন্দা ও ওভারসাইট কমিটির চেয়ারম্যানরা ১৮ অক্টোবরের মধ্যে ওই নথিপত্র দিতে সময় বেঁধে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। তবে হাউসের প্রেস সেক্রেটারি স্টেফানি গ্রিশাম বলেছেন, ডেমোক্রেটদের এমন চাপেও ‘কোনোকিছুই বদলাবে না’। জেলেনস্কির সঙ্গে ২৫ জুলাইয়ের ওই ফোনালাপে ট্রাম্প সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার ছেলে হান্টারের দুর্নীতি তদন্তে চাপ দিয়েছিলেন বলে পরে মার্কিন প্রশাসনের এক নথিতেও উন্মোচিত হয়েছে।
ফোনালাপের কয়েকদিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউক্রেইন ৪০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা আটকে দিয়েছিলেন। বাইডেন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে তদন্তের ব্যাপারে জেলেনস্কির সঙ্গে দরকষাকষির অংশ হিসেবেই ট্রাম্প এমনটা করেছিলেন বলে দাবি সমালোচকদের। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে জনমত জরিপে বাইডেন অনেকখানি এগিয়ে আছেন। সম্ভাব্য প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই ট্রাম্প ওই পথ বেছে নিয়েছিলেন বলে ধারণা অনেকের। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ব্যক্তিস্বার্থে বিদেশি একটি রাষ্ট্রকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের পথ করে দিয়েছেন বলেও ডেমোক্রেটরা অভিযোগ করছেন।
হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ট্রাম্প-জেলেনস্কির ওই ফোনালাপ গোপন করতে চেয়েছিল, এক হুইসেলবেøায়ারের এমন অভিযোগের সূত্র ধরেই কংগ্রেসনাল কমিটিগুলো প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের তদন্তে নামে। জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপে বাইডেনের দুর্নীতি তদন্ত নিয়ে কথোপকথনের বিষয়টি স্বীকার করলেও দরকষাকষির অংশ হিসেবে ইউক্রেইনে সামরিক সহায়তা আটকে দেয়ার কথা অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আরেকটি ‘উইচ হান্ট’ শুরু করেছে বলে পাল্টা অভিযোগও করেছেন এ রিপাবলিকান। জুলাইয়ে আটকে দিলেও মার্কিন প্রশাসন পরে ইউক্রেইনে সামরিক সহায়তার অর্থ ছাড় করে।
“আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, প্রেসিডেন্ট আমাদেরকে ও সমগ্র দেশকে এ অবস্থানে নিয়ে এসেছেন, তার কর্মকাÐ পরোয়ানা জারি ছাড়া অন্য কোনো সুযোগ রাখেনি,” কয়েকদফা অনুরোধ জানিয়েও হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্প-জেলেনস্কির ফোনালাপ সংক্রান্ত তথ্য না পেয়ে পরোয়ানা জারিতে বাধ্য হওয়ার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে লিখেছেন কংগ্রেসনাল ৩ কমিটির ডেমোক্র্যাট প্রধানরা। পৃথক এক পরোয়ানায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য আছে কিনা তাও জানতে চেয়েছেন তারা।
বিবিসি বলছে, প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্রেটরা ভোট দিয়ে ট্রাম্পের অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করলেও সিনেটের শুনানি ও ভোটে তা আটকে যেতে পারে। ট্রাম্পকে সরাতে হলে রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশের অনুমোদন লাগবে। মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষে ট্রাম্প সমর্থকের পাল্লা ভারী হওয়ায় অভিশংসন প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
পরোয়ানা অনুযায়ী হোয়াইট হাউস নির্দিষ্ট সময়ের মথ্যে ২৫ জুলাইয়ের ফোনালাপের তথ্য না দিলে তাও ‘কংগ্রেসের কার্যক্রমে বাধা’ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে সতর্ক করেছে কংগ্রসনাল কমিটি; এমনটা হলে তাও হবে ‘অভিশংসনযোগ্য অপরাধ’, বলেছে তারা।