হাসপাতালেই হবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস

56

বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা যাতে হাসপাতালে বসেই প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারেন সে জন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া সব সরকারি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে-বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাশেষে প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
৩৭৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘সরকারি কর্মচারী হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সাধারণ জনগণের জন্য আধুনিক ও বিশেষায়িত সেবা দেওয়ার প্রয়োজনীয় সুবিধা সৃষ্টি করা হবে। প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। খবর বাংলানিউজের
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি হাসপাতালে আইসিইউর ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মুখাপেক্ষী হতে হয় মানুষজনকে। কিন্তু অতিরিক্ত খরচের কারণে সাধারণ মানুষ এ সেবা নিতে পারে না। সাধারণ মানুষ কম টাকায় যাতে আইইসিউ’র সুবিধা পেতে পারেন সেই জন্য সব সরকারি হাসপাতালে এর ব্যবস্থা করতে বললেন তিনি।
হাসপাতাল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাসপাতাল খোলামেলা পরিবেশে হতে হবে। এগুলো যেন ফ্ল্যাট বাড়ির মতো না হয়। ফুডকোর্ট, বাচ্চাদের ডে কেয়ার, চিকিৎসক, নার্স এবং টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। হাসপাতালে মনোরম পরিবেশ করতে একটা বাগান থাকতে পারে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা যাতে বেশি মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে পারে সেজন্য আলাদা কর্নার থাকতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ক্যান্সার, কিডনি পক্ষাঘাত, হার্ট-বক্ষব্যাধি চিকিৎসা সুবিধা যাতে সব হাসপাতালে থাকে এ বিষয়টা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের সব জেলা-উপজেলায় উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা যাতে পায় সেই ব্যবস্থা করা হবে। হাসপাতালে কেন্দ্রীয় এয়ারকন্ডিশন ব্যবস্থা করা যাবে না। সেটা যাতে খোলামেলা করা হয়, কারণ গরম মাত্র তিন থেকে চারমাস থাকে।
এদিকে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) ২ হাজার ৬৫১ কোটি টাকায় ব্যয় সম্বলিত ৬টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বরিশাল-ভোলা-লক্ষীপুর জাতীয় মহাসড়কের বরিশাল (চর কাউয়া) হতে ভোলা (ইলিশা ফেরিঘাট) হয়ে লক্ষীপুর পর্যন্ত যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। ৮৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘শরীয়তপুর (মনোহর বাজার)- ইব্রাহিমপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন’ এবং ‘নীলফামারী-ডোমার সড়ক ও বোদা-দেবীগঞ্জ সড়ক (নীলফামারী অংশ) এবং ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ফুলবাড়ী-পাবর্তীপুর সড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা নকশীপল্লি, জামালপুর প্রকল্পের ব্যয় ৭১২ কোটি এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘লেবু জাতীয় ফসলের স¤প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি’ প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৬ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী ও একনেক-এর বিকল্প চেয়ারম্যান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভার কার্যক্রমে অংশ নেন।