হালদা রক্ষায় স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করতে হবে

70

প্রতিবছর দেশের অর্থনৈতিক খাতে ৮০০ কোটি টাকার জোগান দিচ্ছে হালদা নদী। ভূমিকা রাখছে সমগ্র চট্টগ্রামের সুপেয় পানি, কৃষি এবং শিল্পায়নে। কিন্তু অতীব দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, হালদার স্বাস্থ্য ভালো নেই, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ, খাল ভরাট, দূষণ আর বাঁধের কারণে দিন দিন এই নদী অস্তিত্ব হারাতে বসছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে নগরীর কাজীর দেউড়ি মোড় এলাকায় ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে ‘হালদা নদী রক্ষায় করণীয় শীর্ষক’ সেমিনারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ও হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির আহব্বায়ক অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া হালদার ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা যদি হালদা রক্ষা করতে না পারি, তাহলে পৃথিবী থেকে রুই, কাতল, মৃগেল, কালিয়া জাতের মাছের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। এ সময় পানি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কাজে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলে বেলার কাছ থেকে আইনি সহায়তা চান তিনি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরবি) যৌথভাবে এসেমিনারের আয়োজন করে। এছাড়া সাতটি পরিবেশবাদী সংগঠন সেমিনার আয়োজনে সহায়তা করে।
সেমিনারে চট্টগ্রাম মহানগরের পানি সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সেলিনা আকতার জানান, হালদা নদীর ক্ষতি হয় এমন স্থাপনা, প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা নিরুৎসাহিত করে থাকি। একইসাথে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে থাকি।
পানি উন্নয়ন অধিদপ্তরের গবেষণা বিষয়ক কর্মকর্তা সাফায়াত হোসেন হালদা রক্ষায় মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট সৈয়দ রিজওয়ানা চৌধুরী জানান, আমরা মঙ্গলবার হালদা নদী এলাকা পরিদর্শন করে সবার বক্তব্য শুনলাম। আমরা আশ্বাস প্রদান করছি, হালদা নদীর অস্তিত্ব বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কাজ করব।
এছড়া সেমিনারে বক্তারা মিঠা পানির প্রজাতির মাছের অভয়াশ্রম, চট্টগ্রামের সুপেয় পানির উৎসস্থল এবং কৃষিকাজের প্রাণভোমরা হালদা নদী রক্ষায় স্থানীয়দের সম্পৃক্ত এবং সরকারের আন্তরিকতার ওপর গুরুত্বরোপ করেন। সভায় হালদা নদীকে জাতীয় নদীর ঘোষণার দাবিও জানানো হয়।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম পানি সম্পদ ও পরিবেশ অধিদপ্তর, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ বিভিন্ন এনজিওর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, স্থানীয় এবং উপজেলার জনপ্রতিনিধিবৃন্দ।